বুধবার, ১৩ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
গোদাগাড়ী প্রতিনিধি: এবার অভিভাববদের তোপের মুখে পড়েছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার হুজরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই ধর্মীয় শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে স্কুল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা স্কুলে গিয়ে তাকে ঘিরে ধরে। এই সময় তাকে এক রকম নিশ্চুপ থাকতে দেখা যায়।
অভিভাবকরা জানান, কিছু দিন আগে নামস্বর্বস্ব নিউজ পোর্টালে আমরা আমাদের ছেলে মেয়েদের ভিডিও দেখতে পাই যে এই স্কুলের বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক মাসদার হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে কথা বলছেন। পরবর্তিতে আমরা জানতে পারি স্কুলে সাংবাদিক আসার পূর্বে সাবেক প্রধান শিক্ষক মাসদারের বিরুদ্ধে কিছু অশালীন কথা শিখিয়ে দেয় শিক্ষক আব্দুল কালাম আজাদ। কথা শিখিয়ে দেওয়ার ২০ মিনিটি পর সাংবাদিক আসে। আমরা আমাদের ছেলে মেয়ের কাছে জানতে পেরেছি শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ স্কুলে কর্মচারি নিয়োগে অনেক অনিয়ম করেছে ফলে এসব শত্রুতা থেকে শিক্ষার্থীদের এসব শিখিয়ে দিয়ে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানাতে আমরা অভিভাবকরা তার কাছে গিয়েছিলাম।
অভিভাবকরা আরো অভিযোগ তোলেন, শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ স্কুলের পরিবেশ নষ্ট করছে। সে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ও স্থানীয় এমপির নাম ভঙ্গিয়ে কর্মচারী নিয়োগে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত করেছে। এরপর থেকেই বিদ্যালয় ও এলাকার পরিবেশ অস্তিতিশীল বিরাজ করছে। আমরা তার এমন নোংরা কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানাই।
এদিকে এক ভিডিওতে দেখা গেছে, স্থানীয় অভিভাবকরা শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে গিরে রেখে ১২ লাখ টাকা দিয়ে নিয়োগের প্রশ্ন তুলছেন এবং আমাদের ছেলে মেয়েদের চাকরি হচ্ছে না বলে দাবি করেন। এই সময় স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। সেই সাথে কয়েকজনকে তার দিকে তেড়ে যেতে দেখা যায়। সেই সময় শিক্ষক আব্দুল কালাম আজাদকে এক রকম চুপ থাকতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, কোন শিক্ষার্থীকে আমি শিক্ষকের বিষয়ে শিখিয়ে দিয়ে সাংবাদিকদের সামনে বলতে বলিনি। এটা যারা বলছে সেটা মিথ্যা ও বানোয়াট বলছে। বরং তারাই আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছে। তারা বলতে কে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক মাসদার আলী কয়েকজকে এসব শিখিয়ে দিয়ে স্কুলে এসেছে এবং সেসহ কয়েকজন আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছে বলে দাবি করেন।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসদার আলী বলেন, কিছু অভিভাবক শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের কাছে এসেছিলো। এসময় অভিভাবকরা উত্তেজিত হয়েছিলো।
উল্লেখ্য, ওই স্কুলে শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ তিন কর্মচারী নিয়োগে সাড়ে ৩৪ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিন কর্মচারী যোগদানের ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন ঠিক না থাকায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাদের যোগদান করায়নি। এরপর থেকে স্কুল কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান ও শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে নিয়োগ দিনে চাপ প্রয়োগ ও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। এর পর থেকেই ওই স্কুলে এসব বিশৃঙ্কলা দেখা দিয়েছে।
শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের এসব অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য অন্য শিক্ষকদের সাথে তার চলাফোরও নেই বলে জানা গেছে।