যানজট এড়াতে সাপাহার জিরো পয়েন্টে ফুট ওভারব্রিজ দাবি

সাপাহার প্রতিনিধি: বর্তমানে নওগাঁ জেলার ব্যস্ততম উপজেলা হিসেবে সাপাহার উপজেলা অন্যতম। শিক্ষা ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই উপজেলা এখন ব্যস্ততম শহরে পরিণত হয়েছে। এই উপজেলায় বসবাসরত লোকের সংখ্যা ৩ লাখের ও অধিক। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হতে ব্যবসায়ীদের যেমন আনাগোনা বেড়েছে ঠিক তেমনি ভাবে বেড়েছে শিক্ষার্থীদের পদচারণা এই উপজেলায়। সাপাহার সদর ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে শুধু উপজেলার সদরে ১ লক্ষের অধিক লোকের বসবাস।
নওগাঁ জেলার দ্বিতীয় শিক্ষা নগরী সাপাহারেই অবস্থিত বৃহত্তম বিদ্যা পিঠ সাপাহার সরকারী ডিগ্রী কলেজ ও চৌধুরী চাঁনমোহাম্মাদ মহিলা ডিগ্রী কলেজ। এছাড়াও রয়েছে ৫ টি উচ্চ বিদ্যালয়, ১টি সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,৩টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি বে-সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ১টি সরকারী সহ ৩টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এবং ৮টি বে-সরকারী প্রাথমিক কিন্ডার গার্টেন স্কুল।
বর্তমানে সাপাহার উপজেলা আম উৎপাদনে শীর্ষস্থান দখল করেছে এবং দেশের সর্বত্রই এর সুখ্যাতিও অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।এই উপজেলার প্রধান অর্থকরী ফসল এখন আম হওয়ার সুবাদে আমের বানিজ্যিক রাজধানী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে নওগাঁ জেলা। তাছাড়া বাংলাদেশ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি এই উপজেলাকে অর্থনৈতিক অঞ্চল/ইকোনিমিক জোন হিসেবে ঘোষণা করেছে ।
এজন্য বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনিয়তার কারণে এই উপজেলায় বেড়েছে নানা শ্রেনি পেশার মানুষের চলাচল ও বেড়েছে যানবাহনেন চাপ। যার ফলে সৃষ্ট যানজটে নাকাল হয়ে পড়েছে সাপাহারবাসী। সাপাহার সদরের প্রাণকেন্দ্র জিরো পয়েন্টে চতুর্মুখী রাস্তার সংযোগ স্থল হওয়ায় সবসময় যানবাহনের চাপ লেগেই থাকে। নির্ধারিত কোন ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা না থাকায় হরেক রকম যানবাহনের চালক ও পথচারীদের মধ্যে হরহামেশা তর্কবিতর্ক লেগেই থাকছে। ভবিষ্যতে এ তর্কবিতর্ক সংঘর্ষেও রুপ নিতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।
সাপাহার উপজেলা থেকে দূরপাল্লার যানবাহন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়মিত ভাবে চলাচল করে থাকে আর এসব যানবাহন গুলো সদরের জিরো পয়েন্টে থেকেই বিভিন্ন গন্ত্যব্যে ডিষ্টিবিউশন হয়ে থাকে। অথচ আমের মৌসুমে দীর্ঘ সময় যানজটে থমকে থাকে সাপাহারের প্রাণকেন্দ্র জিরোপয়েন্ট নামে এই মূল কেন্দ্রটি। রাস্তায় চলাচলকারী অসংখ্য ভ্যান, অটোভ্যান, ব্যটারিচালিত ইজিবাইকসহ বিভিন্ন ধরণের ভুটভুটির অবস্থান এই জিরো পয়েন্টে লক্ষ্য করা গেছে।
বিশেষ করে নানান ধরনের পথচারী স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা, বাজার করতে আসা লোকজন, বিভিন্ন সরকারী বে-সরকারী অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীগণসহ সকল স্তরের লোকাজনদের নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয় আবার আমের এই মৌসুমে রাস্তার এই পাশ থেকে অন্য পাশে পৌঁছানো দূরহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
পথচারী উপজেলার মদন শিং গ্রামের শাহাবুদ্দিন এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন বাড়িতে আত্নীয় আসায় তরকারি কিনতে বাজারে এসেছি কিন্তু জিরো পয়েন্টে পার হওয়ার কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছি না এখন দুপুরে আগে বাসায় পৌছাতে পারবো কিনা বুঝতে পারছি না। এমন আরও অনেকই এমনি অভিযোগ তুলেছেন।
এবিষয়ে সাপাহার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান হোসেন মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আপনারা সাংবাদিকরা সাপাহারের উন্নয়নে সংবাদ লিখছেন এটি এক বাক্যে ভাল সংবাদ। এছাড়া বর্তমানের অবস্থা দেখে যা মনে হচ্ছে সেটি হলো সদরের প্রাণকেন্দ্র জিরো পয়েন্টে ফুট ওভারব্রিজ এখন সময়েরও গণমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। অচিরেই খাদ্যমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
এমনি এক অসহনীয় পরিস্থিতিতে জনদুর্ভোগ সহনীয় করতে ফুট ওভারব্রিজই একমাত্র মুশকিল আসান করবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী এবং বিষয়টিতে সরকারি হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা মনে করছেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ।


প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২৩ | সময়: ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ