বুধবার, ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সানশাইন ডেস্ক: গত বছরের ২৬ জুন থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে সড়ক পথে যাতায়াত করছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। এর আগের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা বহুমুখী সেতু চলাচলের জন্য উদ্বোধন করেছিলেন। উদ্বোধনের কয়েকদিন আগে থেকে দক্ষিণের ২১ জেলার মানুষ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর উন্নয়ন যাত্রার সঙ্গে এবার যোগ হতে যাচ্ছে নতুন মাত্রা। আর মাত্র দুই মাস পর সেপ্টেম্বর মাসে এ সেতুর নিচের অংশে স্থাপন করা রেলপথ চালু হবে। এরই মধ্যে রেলপথ নির্মাণের কাজ ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৭৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ ও মাওয়া থেকে ভাঙা পর্যন্ত ৯৪ দশমিক ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। দুই অংশ মিলিয়ে রেলপথ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৮৮ শতাংশ।
দখিনের মানুষ ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রেলপথে ঘরে ফিরবে। দুইমাস পর দখিনে রেল চলবে এই খবর যত পুরোনো হচ্ছে ততই দখিনের মানুষের কানে বাজছে রেলের ঝকঝক শব্দ। দখিনের মানুষ পদ্মা সেতুর পর এবার রেল নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করছে। কেউ মায়ের কোল থেকে ঢাকা গিয়ে অফিস করবেন আবার কেউ বাণিজ্যে করবেন নতুন চিন্তা। কিন্তু পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্ত শরীয়তপুরে হলেও জেলায় রেল সুবিধা না থাকায় আক্ষেপ করছে শরীয়তপুরবাসী। এ জেলার মানুষ নাওডোবা গোলচত্বর থেকে অল্প দূরত্বে পদ্মা স্টেশন থেকে যাতায়াত করতে পারবেন রেলপথে।
শরীয়তপুরের বাসিন্দা মারুফ পারভেজ বলেন, পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের মূল অংশ শরীয়তপুরে। জমি জায়গা ভিটেমাটি সব দিলাম কিন্তু আমার জেলায় রেলপথ নেই। পদ্মা স্টেশন থেকে রেলে চড়তে হলে আমাকে শরীয়তপুর থেকে ২৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্টেশনে গিয়ে রেলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এটা আমাদের জন্য খারাপ লাগার একটি বিষয়।
২০১৯ সালে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পের কাজ শুরু করে বাংলাদেশে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। পদ্মা সেতুর রেললিংক ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করবে প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (সিআরইসি)। গত ৪ এপ্রিল রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে ভাঙা রেলপথ আগামী সেপ্টেম্বর মাসে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। গত বছরের জুনে পদ্মা সেতু উন্মুক্ত হওয়ার এক বছর দুই মাস পর আসছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ সেপ্টেম্বর।
সম্প্রতি দেখা যায়, প্রকল্পের প্রকৌশলীদের নির্দেশনায় কর্মীরা দ্রুত গতিতে কাজ করছেন রেললাইনের। জোরেশোরে চলছে ৪টি স্টেশন ও ভাঙা জংশনের নির্মাণ কাজ। এছাড়াও শেষ সময়ে রেলপথে বসানো হচ্ছে টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যাল বাতি। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ঢাকা মাওয়া রেললাইনের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী শাদমান শাহরিয়ার বলেন, প্রকল্পের সুপারভিশনের কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা ভাঙা রেলপথ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা যাবে। নির্মাণাধীন ভাঙা জংশন হবে দেশের অত্যাধুনিক জংশন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথ উদ্বোধন করার পর সর্বসাধারণের জন্য রেলপথ উন্মুক্ত করা হবে।