বৃহস্পতিবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর পুঠিয়ায় হাত-পা ও মুখ বেঁধে এক ভ্যানচালককে নৃশংসভাবে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সময় তার ভ্যানে থাকা ভ্যানযাত্রীকেও বেঁধে মারপিট করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শেষ সীমান্ত জিউপাড়া ইউনিয়নের সেনভাগ দেওপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
হত্যাকান্ডের শিকার ভ্যানচালনের নাম কালু কাজী (৪৫)। তিনি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। এই ঘটনায় আহত কাঁচামাল ব্যবসায়ীর নাম আব্দুল আউয়াল (৫২)। তিনি পুঠিয়া উপজেলার কান্দ্রা গ্রামের বাসিন্দা।
ভ্যানচালককে হত্যার পর দুর্বৃত্তরা ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যান এবং সঙ্গে থাকা ব্যবসায়ীর নগদ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। খবর পেয়ে পুঠিয়া থানা পুলিশ রবিবার ভোরে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় ভ্যানযাত্রীকেও উদ্ধার করা হয়।
রাজশাহীর পুঠিয়া থানার ওসি ওসি ফারুক হোসেন জানান, ভ্যানচালক কালু গাজীকে নিয়ে গত রাত সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল কাঁচামাল কিনতে নাটোরে যাচ্ছিলেন। তারা ভোররাতে এভাবেই নাটোর থেকে কাঁচামাল (সবজি) নিয়ে এসে পুঠিয়া উপজেলায় বিক্রি করেন। গতরাতে তারা নাটোরের উদ্দেশে রওনা দিলে পুঠিয়া শেষ সীমানা জিওপাড়া ইউনিয়নের সেনভাগ দেওপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
ওসি বলেন, আহত কাঁচামাল ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল পুলিশকে জানিয়েছেন, তারা সেনভাগে পৌঁছানোর পর সড়কের পাশেই বসে থাকা তিন জন দুর্বৃত্ত প্রথমে তাদের গতিরোধের চেষ্টা করে। এ সময় তারা লাঠি দিয়ে ভ্যানচালক কালুর হাতে আঘাত করে। পরে তারা ধারালো অস্ত্রের মুখে তাদেরকে জিম্মি করে ফেলে। এ সময় দুর্বৃত্তরা ভ্যানের চাবি চাইলে তাদের সঙ্গে কালুর ধস্তাধস্তি হয়ে। এক পর্যায়ে কালু ভ্যানের চাবি জঙ্গলের মধ্যে ছুড়ে ফেলে। এতে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
দুর্বৃত্তরা এ সময় তাদের দুজনের পরনের কাপড় খুলে সেগুলো দিয়েই হাত-পা মুখ বেঁধে ফেলে। তারা কালুকে মারপিট করতে করতে উত্তরের জঙ্গলে নিয়ে জবাই করে হত্যা করে। আর তাকে (আওয়ালকে) রাস্তার পাশেই মারপিট করে হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা হয়। পরে দুর্বৃত্তরা তাদের কাছে থাকা নগদ টাকাপয়সা ও কালুর সেই ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন আওয়াল।
এদিকে আব্দুল আউয়ালের গোঙ্গানির শব্দ পেয়ে ওই দিক দিয়ে যাওয়া এক ট্রলি চালক তার মুখ ও হাতের বাঁধন খুলে দেয়। এরপর তারা চিৎকার চেচামেচি শুরু করলে আশপাশের লোকজন আসেন। তারা থানায় খবর দিলে ভোরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
ওসি বলেন, তারা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছেন। আহত আব্দুল আউয়ালকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এছাড়া নিহত ভ্যানচালক কালুর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের সনাক্তের চেষ্টা চলছে বলেও জানান থানার ওসি।