সর্বশেষ সংবাদ :

বাঘায় নতুন ধানে কৃষকের আনন্দ

নুরুজ্জামান,বাঘা : বাংলার কৃষকের আদি ফসল ধান। এক সময় দেশে জন্মাত কেবল আউশ-আমন ধান। পরবর্তীতে ইরি এবং ধান গবেষনা কেন্দ্র বারি এর প্রচেষ্টায় উৎপন্ন হয়েছে উন্নত জাতের অধিক ফলনশীল ধান। আউশ আমন ধান যেখানে বিঘা প্রতি ৩/৪ মন উৎপন্ন হত , সেখানে উন্নত জাতের ইরি/বারি ধান উৎপাদন হচ্ছে প্রতি বিঘায় ৩০ থেকে ৩৫ মন।

স্থানীয় লোকজন জানান, আউশ আমন ধান বছরে একবার উৎপন্ন হলেও ইরি/বারি ধান উৎপাদন হচ্ছে বছরে তিন থেকে চারবার। এতে করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। চলতি মৌসুমে এই ধান উৎপাদনে আশানুরুপ ফলন পাওয়ায় কৃষকের মনে ফিরে এসেছে প্রাণ চঞ্চল হাসি এবং নতুন উন্মদনা । অনেকে শ্রমিক বেশি লাভের আসায় নিজ এলাকা ছেড়ে যে সকল এলাকায় ধানের চাষাবাদ বেশি হয়, সেসব অঞ্চলে গিয়ে ধান কেটে বাড়ি ফিরছে।

বাঘার সু-শীল সমাজের লোকজন জানান, এখন চলছে বৈশাখ মাসে ইরি/বোর ধান কাটার মৌসুম। শ্রমিকরা দল বেধে জমিতে ধান কাটছে আর আধুনিক মাড়াই যন্ত্র দিয়ে ধান মাড়াই করছে। এরপর সেখান থেকে কৃষকের অংশ বাদদিয়ে নির্দিষ্ট পরিমান ধান পেয়ে সে গুলো শ্রমিকরা ভাগ করে নিচ্ছে। তবে এ বছর ফলন ভাল হওয়ায় সকলেই লাভবান হচ্ছে বলে অনেক শ্রমিকই মন্তব্য করেছেন।।

বাঘার আমোদপুর গ্রামের কৃষক মাসুদ রানা জানান, বর্তমানে নতুন ধান উঠার ফলে কৃষানীদের কাজে এসেছে অনেক ব্যস্ততা। ধান সিদ্ধ করা ,রোদে শোকানো তারপর চাউলের জন্য রাইচ মেলে প্রেরণ, সবই করছে তারা। আর এসব কাজে তাদের সহায়তা করছে বাড়ীর অন্যান্য সদস্যরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বাঘা উপজেলার আমোদপুর গ্রামে, আমোদপুর-বলিহার পাকা রাস্তার পাশ দিয়ে খেজুরের রস জাল করা ড্রামে শুরু হয়েছে ধান সিদ্ধ করা এবং রাস্তার উপরে নেট বিছিয়ে চলছে ধান শোখানোর কাজ। সেখানে কিছু সময় পর-পর নারীরা দ্রুত ধান শোকানোর জন্য পা দিয়ে উলট-পালট (এদিক-সেদিক) করে দিচ্ছে।

আমোদপুর গ্রামের কৃষানী মমেনা বেগম ও আফিজানকে ধান সিদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, ভাই ইরির কল্যানে বৈশাখ মাসে আমরা ধান পেয়েছি। ধান সিদ্ধ করে চাল করবো, সংসারের অভাব ঘুচে যাবে। আমার স্বামী-ছেলে এবং গ্রামের অন্যান্য শ্রমিকরা দল বেধে একে-অপরের ক্ষেত থেকে ধান কেটে সেই ধান ঘরে তুলে নিয়ে এসেছে। আল্লাহর রহমাতে এ বছর পাকা ধানের সময় তেমন কোন বৃষ্টি হয়নি,ফলে ধানেরও কোন ক্ষতি হয়নি। এবার ফলন পেয়েছি খুব ভালো ।

সার্বিক বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন,বাঘা উপজেলার প্রধান অর্থকারী ফসল আম । তবে ধান যে একে বারে কম হয় তাও বলা যাবে না। এ উপজেলাটি কৃষি সমৃদ্ধ একটি উপজেলা। এ অঞ্চলে মধ্যবিত্তদের চেয়ে নানা কারণে নিম্নবিত্ত মানুষ গুলো এখন অনেক বেশি সুখি। তিনি সকল প্রকার ফসল উৎপাদনে কৃষকদের নানা পরামর্শ এবং সরকারি সহায়তা দিয়ে থাকেন বলে জানান।

 


প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৩ | সময়: ৪:৫১ অপরাহ্ণ | সানশাইন