সোমবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
রুমা ইসলাম, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে নারীরা কর্মক্ষেত্রে পুরুষের সাথে সমান তালে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। শুধু কর্মক্ষেত্রই না তারা নিজেরাও পুরুষের পাশাপাশি আয় করছেন। আর এর জন্য তারা ব্যাবসা, গবাদি পশু পালন, মৎস্য চাষসহ কৃষি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। যার ফলে পরিবারে এসেছে সচ্ছলতা।
বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি অফিসে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ উচ্চ পদে চাকুরি করে নিজেদের দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। নারীদের এই সাফল্যে পরবর্তী প্রজন্মের নারীরা আরো উৎসাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যেই জেলায় নারী শিক্ষার হার ও বেড়েছে বলে জানা গেছে। জেলার নারীরা উদ্যোগী হয়ে গড়ে তুলছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে তারা এগিয়ে চলেছে। সরকারি বেসরকারি অফিস গুলোতে নারী কর্মকর্তারা অত্যান্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সংসারও পরিচালনা করছেন।
জেলার নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার সাথে সাথে নারী নির্যাতনের সংখ্যাও কমেছে। চাতাল শ্রমিক আলো ও আরোতিরা জানান, আগে আমরা শুধু বাড়ির কাজ করতাম। তখন সংসারে অভাব অনটন লেগে থাকত। সংসারে সুখ শান্তি ছিল না। এখন আমরা পুরুষের পাশাপাশি ধানের চাতালে কাজ করি।
সপ্তাহে ৩শ থেকে ৫শ মণ ধান সিদ্ধ ও শুকানোর পর আমরা প্রতিমণ ধান ১৮ টাকা হিসাবে ৫৪০০ টাকা থেকে ৯ হাজার টাকা পাই। এই টাকাগুলি আমরা ৪-৫ জন নারী পুরুষ মিলে সমান ভাবে ভাগ করে নেই। তারা জানান এখন আর আগের মতো নারী শ্রমিকদের কম দেয়া হয় না। অথচ গত কয়েক বছর আগেও আমাদের মুজুরী পুরুষের চেয়ে কম দেয়া হতো।
সিরাজগঞ্জ মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম অফিসার অতিারক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত (উপ-পরিচালক) ফাহিমা আল আশরাফ জানান মাহিলাদের আয় বর্ধক কাজে আগ্রহী করে তোলার জন্য এবছর প্রায় ৪শ নারীকে প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের চাহিদা মত ঋণের ব্যাবস্থও করা হয়েছে। এখান থেকে ঋন নিয়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অধিকাংশ নারী স্বাবলম্বী হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ২০ উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্না ইয়াসমিন সুমী বলেন, সবক্ষেত্রেই নারীরা দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে।
নারী পুরুষের ঐক্যবদ্ধ কর্মদক্ষতাই কৃষি ক্ষেত্রে বিল্পব ঘটিয়ে খাদ্যে স্বনির্ভর ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানকে তরান্বিত করবে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন বলেন আগের তুলনায় এখন জেলায় নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান অনেক ভালো। প্রশাসন ছাড়াও সরকারি ও বে সরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে নারীরা আসীন হয়ে দক্ষতার সাথে কাজ করছেন।
তিনি আরো জানান নারীরা স্বাবলম্বী হওয়ায় জেলা জুড়ে নারী নির্যাতন অনেকটাই কমে গেছে।