নগরীতে শ্বশুর বাড়িতে গৃহবধূকে নির্যাতন

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর পবা উপজেলার বারইপাড়া গ্রামে শ^শুর বাড়ির লোকজন কর্তৃক গৃহবধূকে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নগরীর এয়ারপোর্ট থানায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ তসলিমা খাতুন বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি পবা উপজেলার সোনাডাঙ্গা গ্রামের আফসার আলীর মেয়ে। এয়ারপোর্ট থানা ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি পরিচালিত “আইন সহায়ক প্রকল্প ও নারী ও শিশুদের আইনি সহায়তা নিয়ে কাজ করা সংগঠন নবদিগন্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এয়ারপোর্ট থানা ও অন্যান্য অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর পবা উপজেলার বারইপাড়া গ্রামের মাহফুজুর রহমান এর সাথে তাসলিমা খাতুনের ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তার স্বামী সৌদি আরব যাওয়ার সময় তার বাবার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়। মেয়ের সুখের কথা ভেবে তার বাবা এনজিও থেকে ঋন ও জমি বন্ধক রেখে সেই টাকা প্রদান করে। তার স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর গৃহবধূ তসলিমার গর্ভের সন্তান মারা যায়।
সন্তান মারা যাওয়ার পর তার শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম ও শ^শুর সাইদুর রহমান তাকে মোবাইল ফোন করে জানান, যদি আরো ১০ লাখ টাকা তাদেরকে যৌতুক হিসেবে প্রদান করা হয় এবং তসলিমা সরকারী চাকুরী হয় তাহলে তাকে বাড়িতে উঠানো হবে। এ কথা বলার পর গত ফেব্রুয়ারী মাসের ২৬ তারিখ সকাল ১০টার দিকে গৃহবধূ তসলিমা শ^শুর বাড়িতে গেলে গেটের সামনে তাকে মেহেদি হাসান (২৬) ও মাহমুদুল হাসান (২৪) মারধর করে ও বিভিন্ন ধরণের হুমকি প্রদান করে। এরপর তারা উল্টো এয়ারপোর্ট থানা পুলিশকে ডাকে। পুলিশ এসে তাকে বাবার বাড়ি চলে যেতে বলে। পরে তিনি ৪ মার্চ বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ দেওয়ার পর এক মাস হতে চললেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ।
গৃহবধূ তসলিমা অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী মাহফজুর বিদেশ যাওয়ার সময় আমার বাবার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়েছে। আর এখন তারা আমাকে জোরপূর্বক তালাক দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি শ^শুর বাড়িতে উঠতে গেলে আমাকে মারধর ও হুমকি দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেশীরা বিষয়টি দেখেছে। আমি ন্যায্য বিচার দাবি করছি। আমি স্বামীর সংসার করতে চাই। নবদিগন্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থা রাজশাহীর নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানা বলেন, সংস্থায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। গৃহবধূকে মারধর শ^শুর বাড়ির লোকজন করে থাকলে সেটি অন্যায় হয়েছে। আমি দোষীদের বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানার এসআই আল আমিন বলেন, থানায় একটি লিখিত অভিযোগ গৃহবধূ তসলিমা দিয়েছেন। সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গৃহবধূকে নির্যাতন করে থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি কথাটি সঠিক নয়।


প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৩ | সময়: ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ