সুশিক্ষা থাকলে এই মানসিকতা তৈরি হওয়ার সুযোগ ছিল না-  রাবির মানববন্ধনে বক্তারা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি :
‘যখন ঘটনা ঘটে, তখন তীব্র উত্তেজনা শুরু হয়, উগ্র কর্মকাণ্ড চালাই। তারপর ঠান্ডা হয়ে যাই। আবার অপেক্ষায় থাকি কোনো ঘটনার জন্য। এর বাইরে কিছু ঘটছে না। এই সবকিছু শিক্ষার অবনমনের একটি দিক। সুশিক্ষা থাকলে এই মানসিকতা তৈরি হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না।’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব।

 

 

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলির প্রতিবাদে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ। এতে কয়েকটি ছাত্র সংগঠন ও অভিভাবকেরা সংহতি জানিয়েছেন।
কর্মসূচিতে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, গত ১১মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি কালো দিন। এইদিন বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হয়েছে। আমি ২৪ বছরের বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে এত রক্তাক্তের ঘটনা দেখিনি। এতবড় ঘটনা কেন ঘটলো, কারা এর সাথে সম্পৃক্ত ছিল, পুলিশ কেন গুলি চালালো এগুলো ছোট করে দেখা যাবে না। আমি চাই বিচার বিভাগে এর তদন্ত হোক। এই ঘটনায় দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করা হোক।

 

 

 

 

পুলিশের গুলি চালানোর বিষয়ে এই অধ্যাপক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া পুলিশ কীভাবে গুলি চালায়? আমাদের শিক্ষার্থীরা নির্মমভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাদের শরীরে প্যালেটগুলো এখনো লেগে আছে। এই ঘটনাগুলো কেন ঘটল? প্রশাসন কেন সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিতে পারল না? আমরা এর কারণ জানতে চাই। আগামীদিনে শিক্ষার্থীরা এমন রক্তাক্ত হোক আমরা এটা প্রত্যাশা করি না। আমরা চাই শিক্ষাঙ্গন নিরাপদ থাকুক এবং লেখাপড়ার একটি সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকুক।

 

 

রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ বলেন, উপাচার্য সরে আসার পর বিনোদপুরে ক্যাম্পাসের পুলিশ যেভাবে টিয়ারশেল, ছররা গুলি ছুড়েছে, এটা কেন ছুড়ল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এই ক্যাম্পাসে একজন পুলিশও প্রবেশ করে, একটা গুলিও যদি ছুঁড়ে, সেক্ষেত্রে প্রশাসনের অনুমতি লাগবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এই অনুমতি তারা দেয়নি, পুলিশ প্রশাসনও পরিষ্কার করল না তাঁরা কার নির্দেশে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালাল। বিনোদপুরে সেদিন ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে ক্ষমতা চর্চার একটি বিষয় ছিল। সেই জায়গায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঠেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা পুরোপুরি ব্যর্থ।

 

 

বীর মুক্তিযুদ্ধা নূর হোসেন মোল্লা বলেন, এই ঘটনার যাকে তিনি জিজ্ঞাসা করেছেন সবাই বলেছেন তুচ্ছ ঘটনা থেকে সূত্রপাত। এই তু”ছ ঘটনাকে কেন তাচ্ছিল্য করা হলো। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, তুচ্ছ ঘটনাকে আর তাচ্ছিল্য করবেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের সঞ্চালনায় এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অভিভাবক মাহমুদ জামাল কাদেরী, রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আবদুল মজিদ প্রমুখ।

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৩ | সময়: ১০:২৩ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine