সোমবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকায় শেখ কামাল বাংলাদেশ যুব গেমস থেকে ফেরার পথে রাজশাহী রেল স্টেশনে পুলিশ কনস্টেবল দম্পতির ওপর হামলার মামলায় কোচসহ গ্রেফতার ১২ জনের মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী খেলোয়াড়সহ ৫ জনের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।
সোমবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ এর আদালতে শুনানি শেষে বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান তাদের জামিন মুঞ্জুর করেন। আদালতের আসামী পক্ষের আইনজীবী মাইনুর রহমান বলেন, মামলার চার্জসীট পর্যন্ত তাদের জামিন দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জামিনে থাকাকালে তাদের আচার আচরণ মনিটরিং করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্যও সমাজ সেবা ও প্রবেশন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। জামিন পাওয়া পাঁচজনের মধ্যে একজন ছেলে ও চারজন মেয়ে।
এর আগে শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমসের আসরে অংশ নিয়ে ঢাকা থেকে ট্রেনে ফেরার পথে রাজশাহী স্টেশন থেকে গ্রেফতার হন এক কোচসহ ১২ জন খেলোয়াড়। স্টেশনে পুলিশকে পেটানো ও তার স্ত্রীর স্বর্ণের চেন চুরির মামলায় গ্রেফকার দেখিয়ে রবিবার রাত ৮টার দিকে তাদের আদালতে পাঠায় রেলওয়ে পুলিশ। আদালত সাতজনকে কারাগারে পাঠালেও অপ্রাপ্তবয়স্ক পাঁচজনকে সোমবার ১০টা পর্যন্ত অন্তবর্তি জামিন দেন।
কোচ বাদে গ্রেফতার ১১ খেলোয়াড়ের মধ্যে তিনজন ছেলে ও আটজন মেয়ে। তাদের মধ্যে সাতজনের বয়স ১৮ বছরের বেশি। আর পাঁচজনের বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত। এই খেলোয়াড়েরা জুডো, কুস্তি, কারাতেসহ বিভিন্ন খেলা খেলেন। রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় তাদের বাড়ি।
তাদের বিরুদ্ধে গোলাম কিবরিয়া নামের এক পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জয়া এ মামলা করেন। মামলায় তিনি তার স্বামীকে পেটানো ও তার গলার স্বর্ণের চেইন চুরির অভিযোগ আনেন। ঢাকা থেকে রাজশাহীতে ট্রেনে আসার সময় এ ঘটনা ঘটে। ওই পুলিশ কনস্টেবল জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কর্মরত। তার বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী খেতুর গ্রামে।
এদিকে এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন খেলোয়াড়দের স্বজনেরা। খেলোয়াড় জাহিদের মা জাহানারা বেগম যুব গেমসে ছেলের পরিচয়পত্র ও একটি মেডেল নিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছিলেন। বলছিলেন, তাঁর ছেলে ভালো জুডো খেলে। এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। পুলিশ তাঁর ছেলের জীবনটা নষ্ট করে দিল। তিনি এর বিচার চান।
গ্রেফতার হওয়া ১৭ বছর বয়সী এক মেয়ে খোলোয়াড়ের চাচা বেলাল হোসেন বলেন, ‘আমার ভাতিজিসহ এই সব খেলোয়াড়রা ঢাকায় যুব গেমস খেলতে গিয়েছিল। খেলে পুরস্কার পেয়েছে। খেলা শেষে তারা ট্রেনে আসছিল। ওদের সবার ২৬ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ছিল একটি লাগেজে। ট্রেনে সেটি খুঁজে পাচ্ছিল না। তখন তারা ট্রেনে লাগেজটি খুঁজছিল।
ওই সময় সিভিলে থাকা পুলিশ সদস্য গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে এক মেয়ে খেলোয়াড়ের কথা-কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে ওই পুলিশ সদস্য মেয়েটিকে থাপ্পড় মেরে বসে। এ ছাড়া আরেক ছেলে খেলোয়াড়কেও মারে। পরে স্টেশনে তাদের আবার হাতাহাতি হয়। এরপরই পুলিশ দুই পক্ষকে মীমাংসার নামে থানায় আনে। পরে মামলা করা হয়।’ তিনি বলেন এ ঘটনা দু:খজনক।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুন নবী অনু বলেন, ‘ওরা কোনো ঝামেলায় পড়ে ফোন করলে আমরা যেতাম। যতদূর শুনেছি ওরা নাকি পুলিশকে মেরেছে। পুলিশ রক্তাক্ত হয়েছে। বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় ভেতর ঢুকে গেছে। এখন আমি হস্তক্ষেপ করতে পারি না। তারপরেও ক্রীড়া সংস্থার সবার সঙ্গে আলাপ করে বিষয়টি দেখব।