রবিবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার:
রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসে নির্মিত দেশের প্রথম শহীদ মিনারের স্বীকৃতির দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি (আরসিআরইউ)। ভাষা সৈনিকদের দাবি ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে দেশের প্রথম শহীদ মিনার তৈরি হয়েছে রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসে। যা আজও স্বীকৃতির দাবিতে ধুঁকছে। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টার দিকে রাজশাহী কলেজ প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করে কলেজের এ সাংবাদিক সংগঠন।
এ সময় রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোঃ মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন ভাষা সৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি, ভাষা সৈনিক আব্দুল গাফফারের ছোট ভাই মন্টু, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আব্দুল খালেক, সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা: হবিবুর রহমান, ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) সভপতি প্রকৌশলী মো: আমিনুল হক, মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রাহক ওয়ালিউর রহমান বাবু, রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান, রাজশাহী টেলিভিশন এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ মেহেদী হাসান শ্যামল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদ রিপনসহ রাজশাহী কলেজের শিক্ষক- শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের ব্যক্তিবর্গ।
ভাষা সৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের পর দেশের প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয় রাজশাহী কলেজ মুসলিম হোস্টেলে। সেদিনই ইট ও কাদামাটি দিয়ে ওই রাতেই কলেজের মুসলিম হোস্টেলে শহীদ মিনার তৈরি করেন ছাত্ররা। কিš‘ পরদিন সকালে পুলিশ এসে শহীদ মিনারটি গুড়িয়ে দেয়।
তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের পর যখন ঢাকার রাজপথ রক্তাক্ত ছিলো ঠিক তখনি আমরা কয়েকজন রাজশাহীর মুসলিম ছাত্রাবাসে একটি শহীদ মিনার তৈরি করি। যেটা ছিলো দেশের প্রথম শহীদ মিনার। দুঃখের বিষয় আজো আমরা এই শহীদ মিনারের কোনো স্বীকৃতি পাইনি। অনেক বার আন্দোলন হলেও এর কোনো সমাধান আমরা পাইনি। এবার আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের নিকট জোর দার দাবি জানাচ্ছি, এই শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দেওয়া হোক।
শিক্ষাবিদ ও রাজশাহী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মহাঃ হবিবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এ আন্দোলন করে যাচ্ছি। এখনও ভাষা সৈনিকরা বেঁচে আছেন। তথ্য-প্রমাণ হাতে আছে। সংসদে এ নিয়ে আলোচনা হোক, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। আমরা আমাদের তথ্য, উপাত্ত, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিব। সবার সহযোগিতায় এই শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দেওয়া হোক এটিই আমাদের দাবি।
রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আব্দুল খালেক বলেন, রাজশাহী কলেজ মুসলিম হোস্টেলের গুটি কয়েক ছাত্র ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রয়ারী রাতে মুসলিম হোস্টেল গেটে দেশের প্রথম শহীদ মিনার, স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেন। ভাষা আন্দোলনের শহীদ মিনার প্রথম আমাদের কলেজে মুসলিম ছাত্রাবাসে নির্মিত হয়। ভাষা আন্দোলনের সত্তর বছর পার হয়ে গেলেও আমরা এর স্বীকৃতি পাইনি। এই শহীদ মিনার তৈরির পরের কিছু ছবি আমরা সংরক্ষণ করে রেখেছি। আমরা সরকারের নিকট এই শহীদ মিনারের স্বীকৃতির জন্য দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন , বর্তমানে দেশের প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে সেটি কিন্তু তৈরি হয়েছিল ১৯৯২ সালের ২৩ শে ফেব্রুয়ারি কিন্তু রাজশাহী কলেজে যদিও তৈরি হয়েছে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি। তাই আমরা বলতে পারি, ভাষা শহীদদের স্মরণে দেশের প্রথম নির্মিত শহীদ মিনারটি হচ্ছে মুসলিম ছাত্রাবাস অবস্থিত এই শহীদ মিনারটি। দুটো স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করছে।
সানশাইন/শামি