বুধবার, ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : কোন সুখী মানুষের জন্য নয়, বঞ্চিত, গরীব-মেহনতী ও দুঃখী মানুষের পক্ষে কথা বলার জন্য নির্বাচিত হয়ে সংসদে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলে হোসেন বাদশা। রোববার সকালে নওগাঁর মহাদেবপুরে আয়োজিত আদিবাসী নেতা সবিন চন্দ্র মুন্ডার স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বাদশা বলেছেন, যারা ভালো আছেন, সুখে আছেন; আরাম আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন- আমি তাদের কথা বলতে সংসদে যাইনি। যাদের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে, মাথার ওপরে ছাদ নেই, তাদের পক্ষে কথা বলার জন্য সংসদে গেছি। সংসদে তাদের পক্ষে যে দাবি তুলেছি, সেটি যখন সেখানে বাস্তাবায়ন হয়নি, তখন একই কথা আবার শহিদ মিনারে দাঁড়িয়ে বলেছি। এভাবেই আমরা লড়েছি, গণমানুষের অধিকারও আদায় করেছি।
আদিবাসী নেতা সবিন চন্দ্র মুন্ডা জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সমতলের আদিবাসীদের অধিকার আদায়ে তার অবদান অতুলনীয়। গত বছরের এই দিনে মুত্যুবরণ করেন।তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করতেই এই আয়োজনের উদ্যোগ নেন আদিবাসী পরিষদের নেতারা। প্রথমে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং পরে তার জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে আলোচনা করা হয়।
আলোচনায় আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহ্বায়ক এমপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, সমতলের আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে গিয়ে এই গ্রামে আমি অনেকবার এসেছি। আদিবাসীদের প্রিয় নেতা সবিন মুন্ডার বাড়িতে ঘন্টার পর ঘন্টা থেকেছি, আলোচনা করেছি। আজকে তিনি আমাদের মাঝে নেই। খুব কষ্ট হয়! তাকে মনে পড়ে। তার মতো নেতাদের জন্যই সংগ্রামে আমরা অনুপ্রেরণা পেতাম।
রাকসুর সাবেক এই ভিপি আরো বলেন, কেউ যদি মনে করে; আদিবাসী পরিষদ একটি রাজনৈতিক দল, তাহলে একদিক দিয়ে ভুল হবে- আরেক দিক দিয়ে ঠিকও হবে। আদিবাসী পরিষদ তবে কী? আদিবাসী পরিষদ আদিবাসীদের অধিকার আদায়ে তাদের নিজস্ব সংগঠন। আমাদের রাজনীতি আদিবাসীদের ওপরে চাপিয়ে দিতে চাই না। আমরা আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের যে পথে, সে পথে শুধুমাত্র তাদের তুলে দিতে চাই। এবং সেটিকে সংগ্রামের কর্মসূচি হিসেবে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চাই। এর বাইরে আমাদের কোন কাজ নেই। এটিই আমাদের সংগ্রাম। রাজনৈতিক আদর্শ।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য খ্রিস্টিনা বিশ্বাস স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য দেন, রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু, সাধারণ সম্পাদক ও আদিবাসী পরিষদের উপদেষ্টা দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গণেশ মার্ডি, মুখপাত্র সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম, কোষাধ্যক্ষ সুধীর তির্কী, রংপুর জেলার সভাপতি বিমল খালকো, সাধারণ সম্পাদক যোসেফ সরেন, পাবনা জেলার সভাপতি আশিক বানিয়াস, নওগাঁ জেলার উপদেষ্টা শহিদ হাসান সিদ্দিকী, জয়নাল আবেদীন মুকুল, নওগাঁ জেলা শাখা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন মিন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা দিলিপ চৌহান, আদিবাসী পরিষদের মহাদেবপুর উপজেলা শাখার সভাপতি দিলীপ পাহান, সাধারণ সম্পাদক জগেশ উরাও, রাইগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সভাপতি নকুল পাহান, আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি সুজিত পাহান প্রমুখ। স্মরণ সভাটি সঞ্চালনা করেন আদিবাসী পরিষদের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নরেন চন্দ্র পাহান।