শনিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার
রাজশাহী মহানগরীর নিউ পপুলার-২ নামের আবাসিক হোটেলের কক্ষে গোপন ক্যামেরা গোপনে ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছিল এক দম্পতিকে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই হোটেলে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হোটেল কক্ষে গোপনে ধারণ করা ভিডিওচিত্র।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ওই হোটেলের ব্যবস্থাপক শরিফ উদ্দিন (২৮) এবং হোটেল বয় আবদুন নূর (১৯)। শরিফ উদ্দিনের বাড়ি নওগাঁর পোরশায়। আর আবদুন নূরের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে। রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় হোটেলটির অবস্থান। ওই এলাকায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল এবং অসংখ্য বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক। দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে এসে অসংখ্য মানুষ ওই এলাকার আবাসিক হোটেলে রাতে থাকেন। হোটেলটিতে অনেককেই এভাবে জিম্মি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী তার স্ত্রীকে নিয়ে গত রবিবার রাতে নিউ পপুলার-২ হোটেলে ওঠেন। তার স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা হোটেলে ওঠার কিছুক্ষণ পরই শরিফ ও নূর গিয়ে দরজায় কড়া নাড়েন। এ সময় তাদের কাছে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করা হয়। বলা হয়, হোটেল কক্ষের ভিতরের দৃশ্য ভিডিও করা হয়েছে। এখন টাকা না দিলে ভিডিও ফাঁস করা হবে। ওই রাতেই দুই শিক্ষার্থী হোটেল থেকে পালিয়ে বাঁচেন। পরদিন সোমবার শরিফ ও নূর তাদের কাছে দফায় দফায় ফোন করে টাকা দাবি করেন।
প্রথমে তিন লাখ, এরপর দুই লাখ, সর্বশেষ ৫০ হাজার টাকা দিলে ভিডিও প্রকাশ করা হবে না বলে তাদের জানানো হয়। বাধ্য হয়ে ওই দম্পতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতাকে জানান। তিনি ওই হোটেলে গিয়ে নূর ও শরিফের ফোন তল্লাশি করে ভিডিওচিত্র পান। ছাত্রলীগের ওই নেতা জানান, শুধু যে ওই শিক্ষার্থী দম্পতির ভিডিও আছে, তা নয়। আরও অনেক সাধারণ মানুষের ভিডিও করেছেন শরিফ ও নূর। তাদের ফোন তল্লাশি করে দেখা গেছে, এসব ভিডিওচিত্র হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আরও অনেককে পাঠানো হয়েছে। তাই বিষয়টি রাতেই পুলিশকে জানানো হয়। পরে রাজপাড়া থানা-পুলিশের একটি দল হোটেল থেকে দুইজনকে আটক করে।
নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হোটেলের মালিকসহ পাঁচজনের নামে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন। গ্রেফতার দুইজনকে মঙ্গলবার সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া আরও কতজনের সঙ্গে এ ধরনের ব্ল্যাকমেইলের ঘটনা ঘটেছে তা পুলিশ তদন্ত করছে।
সানশাইন / শামি