বুধবার, ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজশাহীর জনসভা ঘিরে সরকারের শীর্ষ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের পদচারনায় একদিন আগে থেকেই মুখর এখন রাজশাহী। সবার টার্গেট আগামী রবিবার (২৯ জানুয়ারি) রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা জনসমুদ্রে রূপ দেওয়া।
রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে এরইমদ্যে সর্বত্র সাজসাজ রব উঠেছে। এরমধ্যে যোগ হয়েছে দেশের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও এমপিদের পদচারনা। উত্তরের বিভিন্ন জেলা থেকে এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন রাজশাহীতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ জন্যসভা ইতিহাসে স্মরণীয় জনসভা হবে বলে মনে করছেন শীর্ষ নেতারা।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে শুক্রবার রাজশাহী পৌচেছেন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলক। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন রয়েছেন রাজশাহীতেই। শনিবার রাজশাহীতে পৌছবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।
শুক্রবার রাজশাহীতে পৌছে ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠ পরিদর্শণ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। তারা মনে করছেন, রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় মানুষের ঢল নামবে।
আর পুরো জনসভা সফলের লক্ষ্যে একমাস আগে থেকেই রাজশাহীর মাঠে অবস্থান করে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করে চলেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। সঙ্গে রয়েছেন উত্তরের বিভিন্ন জেলার এমপি ও জেলা-উপজেলার নেতারা। মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের রাজশাহীমুখি করতে নানা ভাবে কাজ করে চলেছেন তারা।
আগামীকাল রবিবার (২৯ জানুয়ারি) রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হবে আওয়ামী লীগের রাজশাহী জনসভা। জনসভাকে সামনে রেখে রাজশাহী নগর ও জেলা আওয়ামী লীগ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। প্রস্তুতি ও উৎসাহ-উদ্দীপনার শেষ নেই রাজশাহী বিভাগের অন্য জেলাগুলোতেও। প্রতিটি জেলাতেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ব্যাপক প্রচারণা চলাচ্ছেন। জনসভা সফল করতে নৌকার বহর নিয়ে রাজশাহীমুখি হতে সচেষ্ট এখন নেতাকর্মীরা।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর আগমন, তাই নিজেদের তুলে ধরতে সকল নেতাকর্মী-সমর্থকসহ সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে জেলাগুলো থেকে রাজশাহীমুখি মানুষের বহর প্রস্তুত করা হচ্ছে। রাজশাহীর বাইরের জেলা সমুহের নেতারা মনে করছেন জনসভার আগেই দিনেই লাখো মানুষের বহর মাদ্রাসামাঠে পৌঁছাবে।
রাজশাহী, নাওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিটি জেলা থেকে ট্রেন, বাস, মটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার নিয়ে নেতাকর্মীরা জনসভায় যোগ দিবেন। রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলা থেকেই ট্রেনে আগাম বুকিং দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সমাবেশের আগের দিনই অনেক নেতাকর্মী রাজশাহীতে অবস্থান নিবেন। এজন্য যাবতীয় প্রস্তুতি তারা নিচ্ছেন।
কতটি গাড়ি রাজশাহীতে আসবে সেটারও তালিকা করা হয়েছে। জেলার নেতারা উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন। জনসভার আগেই যেন নেতাকর্মীদের গাড়ির বহর রাজশাহী শহরে প্রবেশ করতে পারে সে লক্ষ্যে যাবতীয় পরিকল্পনা তারা নিয়েছেন।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল ও সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার জানান, জনসভাকে সামনে রেখে রাজশাহী ছাড়াও অন্যান্য জেলার নেতাদের সঙ্গে নিয়মিতই যোগাযোগ হচ্ছে। রাজশাহীর বাইরে থেকে যারা আসবেন, তাদের জন্য সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়ার প্রচেষ্টা রয়েছে। এছাড়া জনসভা উপলক্ষে মাদ্রাসা মাঠসহ রাজশাহীর ১২ টি পয়েন্টে ডিজিটাল মনিটরের মাধ্যমে লাইভ দেখানো হবে। এসবস্থানে ৫ শতাধিক স্বেচ্ছাবেসী কাজ করবে। নির্বিঘ্নে যেন মানুষ আসতে পারে ও জনসভা সফল করতে পারে যে লক্ষে যাবতীয় প্রস্তুতিই নেয়া হয়েছে।
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান জানান, প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহী আগমনকে ঘিরে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা, উচ্ছ্বাস ও আনন্দের জোয়ার বইছে। জনসভাকে সফল করতে প্রতিটি উপজেলা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন এবং থানা কমিটির নেতৃবৃন্দদের নিয়ে মিটিং করা হয়েছে। নাটোর থেকে চারটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নলডাঙ্গা, মাধনগন, নাটোর, মালঞ্চি, আব্দুলপুর থেকে ওই ট্রেনে লোক যাবেন। এছাড়া জেলার ৭টি উপজেলা, ৮টি পৌর ও ৫২টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ও সকল অঙ্গ ও সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা তাদের কর্মীসমর্থকদের নিয়ে সমাবেশে যোগ দেবেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহা. জিয়াউর রহমান জানান, রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী জনসভা সফলের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জনসভায় যোগ দিতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এলক্ষ্যে নাচোল, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট উপজেলা থেকে শতাধিক বাসে নেতাকর্মীরা সভায় যোগ দিবেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. শামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল বলেন, নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি ভালোই। বাস, ট্রেন, ছাড়াও বিভিন্ন যানবাহনে করে রাজশাহীর জনসভায় যোগ দিবেন তারা।
জয়পুরহাট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, সমাবেশকে সামনে রেখে তারাও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। তাদের ৩২ টি ইউনিয়ন থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ৩২ টি বাস যাবে, পৌর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১০ টি বাস যাবে। এছাড়া সংসদ সদস্যসহ সিনিয়র নেতাদের নেতৃত্বে হাইস গাড়িতে নেতারা রাজশাহী পৌছবেন। এছাড়া ট্রেন যোগে ৪ হাজারের অধিক নেতাকর্মী জনসভায় যোগ দেবেন।
অন্যান্য জেলার নেতারাও বাস, ট্রেন, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল বহর নিয়ে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠের জনসভায় যোগ দেবেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে সর্বোচ্চ আয়োজন করা হয়েছে। যত মানুষ আসবেন তা মাদ্রাাসা মাঠে সংকুলান হবে না। এ জন্য শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ডিজিটাল মনিটর লাগানো হয়েছেন। সেখান থেকেই মানুষ মাননীয় প্রধানমন্ত্র্রীর ভাষন লাইভ দেখতে পারবেন। পুরো শহরজুড়েই মাইক লাগানো হয়েছে। তিনি বলেন, রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর এ জনসভা হবে ইতিহাসের স্মরণকালের সর্ববৃহত্তম জনসভা।