রবিবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্পোর্টস ডেস্ক: শিশিরভেজা মাঠে ফরচুন বরিশালের পুঁজি যে খুব বড় ছিল, তা নয়। রান তাড়ায় ঢাকা ডমিনেটর্সের শুরুটাও হয় বেশ ভালো। তবে দারুণ উদ্বোধনী জুটির পর ছন্দপতন, পটাপট তিন উইকেটের পতন। নাসির হোসেন ও মোহাম্মদ মিঠুনের জুটিতে আবার জাগে জয়ের সম্ভাবনা। তবে শেষ পর্যন্ত স্নায়ুর লড়াইয়ে জিতে টানা পঞ্চম জয়ের উল্লাসে ভাসে বরিশাল।
জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম পর্বের শেষ ম্যাচে ঢাকাকে ১৩ রানে হারিয়েছে বরিশাল। ১৭৪ রানের লক্ষ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬০ রান করতে পেরেছে ঢাকা। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে হার দিয়ে আসর শুরুর পর জিতেই চলেছে বরিশাল। সিলেটের সমান ১০ পয়েন্ট নিয়েও নেট রান রেটের কারণে দুইয়ে আছে বরিশাল। ঢাকা নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারায় খুলনা টাইগার্সকে। এরপর টানা পাঁচ ম্যাচ হেরে তলানিতে রয়েছে তারা।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ার প্লে’তে ৩ উইকেট হারায় বরিশাল। প্রথমবার সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি সাইফ হাসান (৬ বলে ১০)। বিপিএল ক্যারিয়ারের শততম ম্যাচ খেলতে নামা এনামুল হক বিজয়ও ফেরেন অল্পে। ডিপ থার্ড ম্যানে বাম দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচে সাইফকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। পরে আরাফাত সানির বলে শর্ট মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে এনামুলের ক্যাচও নেন তিনি। ১০ বলের মধ্যে তার এই দুই ক্যাচ উত্তেজনা ছড়ায় ম্যাচে।
এরপর চতুরাঙ্গা ডি সিলভা ও মেহেদী হাসান মিরাজ ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিলেও বেশি দূর যেতে পারেননি। চতুরাঙ্গা ১০ বলে ১০ ও মিরাজ ১৪ বলে ১৭ রান করে আউট হন। পাঁচ নম্বরে নেমে সাকিব আল হাসানের শুরুটাও ছিল আশা জাগানিয়া। কিন্তু মুক্তার আলির স্লোয়ারে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান বরিশাল অধিনায়ক। ৪টি চার ও ১ ছয়ে ১৭ বলে ৩০ রান করেন তিনি।
দলীয় ৮৯ রানে সাকিবের বিদায়ের পর আর উইকেট পড়তে দেননি ইফতিখার ও মাহমুদউল্লাহ। দুজন মিলে ৯.৩ ওভারের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে যোগ করেন ৮৪ রান। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ইফতিখার এই ম্যাচে করেন ফিফটি। ৫ চার ও ২ ছয়ে ৩৪ বলে ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। আগের দুই ম্যাচে শূন্য রানে ফেরা মাহমুদউল্লাহ ২ চার ও ১ ছয়ে করেন ৩১ বলে ৩৫ রান। রান তাড়ায় দাপুটে শুরু করে ঢাকা। ৫ ওভারে ৪৫ রান তোলেন উসমান ঘানি ও সৌম্য সরকার। সাকিবের করা তৃতীয় ওভারে তিনটি ছক্কা মারেন ঢাকার দুই ওপেনার।
ষষ্ঠ ওভারে আক্রমণে এসেই আঘাত হানেন করিম জানাত। তার ওভারের দ্বিতীয় বলে কাভার পয়েন্টে কামরুল ইসলাম রাব্বির হাতে ক্যাচ দেন উসমান। ২ চার ও ৩ ছয়ে ১৯ বলে ৩০ রান করে ফেরেন আফগান ওপেনার। পরের ওভারে চতুরাঙ্গার বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য। রান খরায় ভুগতে থাকা এই ওপেনার ১৬ রান করতে খেলেন ১৫ বল। চার নম্বরে নামা মোহাম্মদ ইমরান রানআউট হলে আরও বিপদে পড়ে যায় ঢাকা।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে চাপ সামাল দেন নাসির ও মিঠুন। দলের ফিকে হয়ে যাওয়া আশাও জাগে। দুজন মিলে ৬০ বলে যোগ করেন ৮৯ রান। শেষ পাঁচ ওভারে ৬৫ রানের সমীকরণ দাঁড়ায় ঢাকার সামনে। কামরুল রাব্বি ও মোহাম্মদ ওয়াসিমের করা পরপর দুই ওভারে ২৭ রান নেন নাসির ও মিঠুন। তবে ১৮তম ওভারে দারুণ বোলিংয়ে স্রেফ ৭ রান দেন করিম জানাত।
শেষ দুই ওভারে ৩১ রানের সমীকরণে আর তেমন কিছু করতে পারেনি ঢাকা। ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে মিঠুনকে বোল্ড করে দেন ওয়াসিম। ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৮ বলে ৪৭ রান করেন ঢাকার কিপার-ব্যাটসম্যান। শেষ ওভারে নিজের পঞ্চাশ পূরণ করেন অধিনায়ক নাসির। ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৬ বলে ৫৪ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।