সর্বশেষ সংবাদ :

বড়াইগ্রামে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা, স্বামী আটক

বড়াইগ্রাম প্রতিনিধিঃ

নাটোরের বড়াইগ্রামে হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও গলাটিপে স্ত্রী সোনিয়া খাতুনকে (২৪) হত্যার অভিযোগে লিটন আলী (৩০) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার সকাল ১১টার দিকে বড়াইগ্রামের মাঝগ্রামের এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতে বোন নার্গিস আক্তার বাদি হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

 

 

গ্রেপ্তার লিটন আলী নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মাঝগ্রাম হাদিসপুর গ্রামের নুর মিয়ার ছেলে এবং সোনিয়া খাতুন মাদারিপুর জেলা সদরের থানতুলি গ্রামের জব্বার ফকিরের মেয়ে। সোনিয়ার ভাগ্নী নাজমীন আক্তার বলেন, পাঁচ বছর আগে সোনিয়া ও লিটনের মুঠোফোনে পরিচয় হয়। পরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একই বছর তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের ঘরে আসে দুই সন্তান আমীম (৪) ও আবির (২)। সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু ছোট ছেলের জন্মের পর থেকে লিটন মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এ নিয়ে প্রায়ই তাঁদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হতো। এর জের ধরেই সকাল ১১টার দিকে লিটন তাঁর স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করে। এ সময় বেড়াতে আসা সোনিয়ার বোন নার্গিস আক্তার ও ভাগ্নী নাজমীন আক্তার রক্ষা করতে এলে লিটন তাঁদেরকেও মারপিট করে।

 

 

 

নিরুপায় হয়ে তাঁরা দুজনই পুলিশ ডাকার জন্য থানার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পুলিশ নিয়ে বাড়িতে ফিরে দেখি, সোনিয়ার মরদেহ পড়ে আছে তাঁর শয়ন ঘরের বারান্দায়। পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে যায় এবং তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে বনপাড়া থেকে লিটনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। নার্গিস আক্তার জানান, তাঁর সামনেই বোনকে হাত-পা বেঁধে পেটানো হচ্ছিল। তিনি ও তাঁর মেয়ে রক্ষা করার চেষ্টা করে ব্যার্থ হন। পরে পুলিশকে ডাকার জন্য তাঁরা থানায় চলে যান। ফিরে এসে তাঁরা লাশ দেখতে পান। অভিযুক্ত লিটনের মা মমেনা বেগম বলেন, আমার ছেলে লিটন মাদকাসক্ত। ওর মাথা ঠিক থাকে না। পারিবারিক কলহের কারণে সকালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গোলমাল শুরু হয়। আমি ছোট ছেলে আবিরকে নিয়ে বাড়ির বাইরে যায়। পরে শুনি সোনিয়া মারা গেছে। তাঁর গলায় দড়ি বাঁধা ছিল।
মহসীন নামের প্রতিবেশী বলেন, এর আগেও প্রায়দিনই মারপিট করত লিটন। দুই সন্তানের মায়ায় শত গঞ্জনা সহ্য করে যাচ্ছিলেন সোনিয়া। কিন্তু তবু শেষ রক্ষা হলো না। কেউ এগিয়ে আসলে তাকে হাসুয়া নিয়ে তাড়া করত লিটন।

 

 

 

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পাওয়ামাত্র পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। কিš‘ তার আগেই গৃহবধূ সোনিয়ার মৃত্যু হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বোন বাদি হয়ে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যে লিটনকে আটক করা হয়েছে।

 

 

 

 

 

সানশাইন/টিএ

 


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৩ | সময়: ৯:৪২ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine