শুক্রবার, ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে আরো নেমেছে তাপমাত্রার পারদ। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিন বুধবার রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে- দুদিন থেকে চলমান মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এতে কমতে পারে তাপমাত্রাও। তবে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা থাকলেও আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে।
বর্তমানে রাজশাহীসহ আশপাশের অঞ্চলের ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় তাই শীতের দাপট বেড়েই চলেছে। সাতসকালেই সূর্যের মুখ দেখা গেলেও উজ্জ্বল রোদের কোনো উষ্ণতা ছিল না। ভোরে ও সন্ধ্যায় ঘন কুয়াশার দাপট চলছেই। ফলে প্রচণ্ড ঠান্ডায় স্বাভাবিক জনজীযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৈরি আবওয়ায় বিপাকে পড়েছেন খেটে-খাওয়া, ছিন্নমূল মানুষ। বিশেষ করে শহুরে ছিন্নমূল মানুষগুলো বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। মাঘ মাসের শীতের এই তীব্রতায় ঠাণ্ডায় জবুথবু হয়ে পরেছেন তারা।
এরপরও জীবন ও জীবিকার তাগিদে ঘনকুয়াশা আর তীব্র শীতের মধ্যেই সকাল-সন্ধ্যা এক করে কাজ করে যাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। রাতে রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন। সেখানে ছাদের নিচে খোলা কম্পাউন্ডে রাত কাটাচ্ছেন। আর শহরের বস্তি এলাকার শিশু থেকে বয়স্করা সন্ধ্যার পর কুড়িয়ে আনা খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কামাল উদ্দিন জানান, বুধবার থেকে চলতি মৌসুমের চতুর্থ দফা শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এটি মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। বুধবার রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অবস্থা আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রাও কমতে পারে বলে উল্লেখ করেন এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।
২৬ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ: তাপমাত্রা কমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আরও তীব্র হয়েছে শীত। বিস্তৃত হয়েছে শৈত্যপ্রবাহের আওতা। বৃহস্পতিবার দেশের ২৬ জেলায় বইছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, যা একদিন আগে ছিল ১৮ জেলায়।
বৃহস্পতিবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমে ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে চুয়াডাঙ্গায়। বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে। তবে আপাতত আর শীত বাড়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে শীত কমতে পারে। এতে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দূর হতে পারে শৈত্যপ্রবাহ। একই সঙ্গে বিভিন্ন অঞ্চলে দু-তিন দিনের মধ্যে হালকা বৃষ্টিরও পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। একদিনের ব্যবধানে ঢাকায়ও তাপমাত্রা প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে। ঢাকায় ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে কমে হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগগঞ্জ, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল এবং ভোলা জেলাসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু এলাকা থেকে প্রশমিত হতে পারে বলেও জানান তিনি। ওমর ফারুক বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী তিনদিনের মধ্যে হালকা বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে।