মাশরাফির মতে সব কিছু নিয়ে সমালোচনা করার প্রয়োজন নেই

স্পোর্টস ডেস্ক: এবারের বিপিএলের মান নিয়ে তারও অসন্তুষ্টি আছে। আয়োজনের নানা দিক, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে বিপিএল শুরুর আগে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে তিনিও কথা বলেছেন। ডিআরএস না থাকার সমালোচনাও করতেও ছাড়েননি। তবে ঢালাও সমালোচনা না করে মাশরাফি বিন মর্তুজা সীমাবদ্ধতার কথা বলতেও ভোলেননি।
কিন্তু মাঠের ক্রিকেট শুরুর পর দেখা যাচ্ছে মাশরাফির সতীর্থ ক্রিকেটাদের কেউ কেউ অনেক বেশি উত্তেজিত। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটাতেও পিছপা হচ্ছেন না কেউ কেউ। সে তালিকায় দেশ সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও আছেন।
পর পর দুই ম্যাচেই তিনি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ওয়াইডের সিদ্ধান্ত ভুল হওয়ায় আম্পায়ারের দিকে তেড়ে গেছেন। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ইনিংসের শুরুতে কে স্ট্রাইক নিবেন? তা নিয়ে আবেগতাড়িত বরিশাল ক্যাপ্টেন সাকিব মাঠে ঢুকে আম্পায়ারের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়ে মাঠে উত্তেজক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটান।
সব মিলিয়ে বিপিএলে একটা উত্তেজক অবস্থা বিরাজমান। আম্পয়ারদের সিদ্ধান্ত নিয়ে খেলোয়াড়রা অনেক বেশি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিষয়টা কতটা শোভন এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য কতটা সুখকর? মঙ্গলবার রাতে ঢাকা ডমিনেটর্সের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে মিডিয়ার সামনে কথা বলতে এসে এমন নানা প্রশ্নের মুখেমুখি হয়েছিলেন সিলেট স্ট্রাইকার্স অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
জবাবে অনেক কথার ভিড়ে মাশরাফি মূলতঃ দুটি বিষয়কে বড় করে দেখতে চেয়েছেন। তার প্রথম কথা হলো আয়োজনগত ত্রুটি বিচ্যুতি, অবব্যস্থাপনা আছে। আবার কিছু জায়গায় বিসিবির সীমাবদ্ধতাও আছে। তবে মাঠের ক্রিকেট ভাল হচ্ছে। আম্পায়ারদের কিছু সিদ্ধান্ত ভুল হচ্ছে। তবে তা নিয়ে হইচই না করে নিজেদের কল্যাণ ও মঙ্গলের কথা মাথায় রেখে যতটা সম্ভব কম নেতিবাচক ও অক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখানোর অনুরোধ মাশরাফির।
মাশরাফির অনুভব, ‘সব কিছু নিয়ে সমালোচনা করে লাভ নেই। আমাদের দেশে এই একটিই টি-টোয়েণ্টি আসর আছে, এটা নিয়ে এত কথা হলে প্লেয়ারদের জন্য ক্ষতি হবে।’ সিলেট স্ট্রাইকার্স অধিনায়ক মাশরাফি বোঝানোর চেষ্টা করেন, দেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বৃহত্তর কল্যাণ, মঙ্গল ও উত্তরণে বিপিএলের মত আসরের দরকার আছে এবং এদেশে এটাই একমাত্র টি-টোয়েন্টি আসর।
তাই মুখে এমন কথা, ‘দেখেন আমি আর ন্যাশনাল টিমে খেলি না। বা আমার খেলার সুযোগও নাই। আমি মনে করি যে, এই টুর্নামেন্টগুলি খুব প্রয়োজন। সারা বিশ্ব জুড়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রচার, প্রসার ও চর্চা বেড়েছে। আপনাদেরও টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট কভার করতে হচ্ছে। প্রচুর খেলা হচ্ছে। একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারলে অনেক কথা হয়। রাজ্যের সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এ টুর্নামেন্ট হওয়া খুব জররি। এবং এই টুর্নামেন্ট বিসিবি আয়োজন করছে, আপনারা মিডিয়াও বিসিবিকেই নানা প্রশ্ন করছেন।’
‘আমাদের ক্রিকেটারদের এত বেশি রিয়্যাকশন না আসাটাই বেটার। তার বদলে বরং খেলার দিকে মনোযোগী হওয়াই শ্রেয়। আরেকটা বিষয় হলো, এবারের বিপিএলে কোনটা আছে, কোনটা নেই, তা আমরা সবাই জানি। আপনারাও নানা প্রশ্ন করছেন বিসিবিকে।’
‘আমরাও জানি সীমাবদ্ধতা কতটা আছে না আছে। আমার মনে হয় অনেক কিছু ভাল হতে পারতো। আবার অনেক সীমাবদ্ধতাও আছে। যা আমি প্রথম দিনই বলেছি; কিন্তু টুর্নামেন্টটা যখন শুরু হলো তখন দেখেন আমরাই অলমোস্ট ২০০ রান তাড়া করে জিতেছি। আজকেও ২০০ করেছি। অন্য ম্যাচেও ১৬০-এর মত রান হচ্ছে। একটা হ্যাবিট তৈরি হচ্ছে। দিন শেষে কিছু সিদ্ধান্ত ভুল থেকে যাচ্ছে আম্পায়ারদের। বিসিবির এতে কিছু করার নেই।’
‘কিছু ভুল সিদ্ধান্ত হবেই। এটাই স্বাভাবিক। স্নিকো বা অন্য কিছু নেই (ডিআরএস)। কিছু ভুলতো হবেই। সব কিছু নিয়েই সমালোচনা করে লাভ নেই। দিন শেষে আমাদের এই টুর্নামেন্টটা জরুরি। বিশ্বের সব দেশে এর বাইরে একটি ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি আসর থাকে। আমাদের তা নেই। টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট বের করার জন্য সব দেশেই আরও টি-টোয়েন্টি আসর হয়। আমাদের দেশে এই একটিই টি-টোয়েন্টি আসর আছে, এটা নিয়ে এত কথা হলে প্লেয়ারদের জন্য ক্ষতি হবে।’


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩ | সময়: ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ