মঙ্গলবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর রাজশাহী পলিটেকনিক শাখার তৎকালীন সহ-সভাপতি শহিদ রেজওয়ানুল ইসলাম চৌধুরী সানির ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেছে রাজশাহী মহানগর ছাত্রমৈত্রী।
শনিবার বেলা ১১টায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শহিদ সানির প্রতিকী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যদিয়ে এই শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। পরে সেখানে সানির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
এরপর ছাত্রমৈত্রীর প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপির পক্ষে সানির স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পার্টির মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন- রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু ও শহিদ সানির বাবা মো: নান্নু।
এসময় বক্তারা বলেন, ২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি সাম্প্রদায়িক অপশক্তি জামায়াত-শিবির থেকে আসা ‘ছাত্রলীগ’ নামধারী নিজাম ও তুষারসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে খুন হয়- রেজওয়ানুল ইসলাম চৌধুরী সানি। সর্বশেষ ২০১২ সালের শেষের দিকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি নিজাম-তুষারকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়।
আদালত কর্তৃক দেয়া মৃত্যুদণ্ড রায়ের এতো বছর পার হলেও তা কার্যকরের প্রক্রিয়া অদৃশ্যমান। আমরা বিভিন্ন সূত্রে খবর পাচ্ছি- সানির খুনিদের বাঁচাতে প্রভাবশালী একটি কুচক্রি মহল তাদের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তারা খুনিদের বাঁচিয়ে প্রকাশ্যে প্রমাণ করতে চায়- তারা মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ও সাম্প্রদায়িক শক্তির গডফাদার। আমরা এই সভা থেকে তাদের হুঁশিয়ার করতে চাই, সানি হত্যাকারীদের রক্ষা করার জন্য যারাই অপচেষ্টায় লিপ্ত; তাদের শক্তহাতে প্রতিহত করা হবে।
মহানগর ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ওহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে সেখানে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর যুবমৈত্রীর সভাপতি ও রাসিকের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমতিয়াজ, সাবেক ছাত্রনেতা তামিম শিরাজী, মহানগর ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক কিষান সরকার, সাবেক ছাত্রনেতা রোকনুজ্জামান রাফি, মহানগর ছাত্রমৈত্রীর সহ-সভাপতি সাকিব আল হাসান, অমিত সরকার, প্রচার সম্পাদক ইফতিক হাসান, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক দূর্জয় দত্ত, নিউ গভঃ ডিগ্রি কলেজের সভাপতি জানে আলম আরিয়ান, সাধারণ সম্পাদক ইসাক প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি জামায়াত-শিবির থেকে অনুপ্রবেশকারী তৎকালীন রাজশাহী পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন তুষারের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী প্রকাশ্য দিবালোকে প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে ধারালো অস্ত্রশস্ত্রসহ ছাত্রমৈত্রীর নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
হামলায় ছাত্রমৈত্রীর পলিটেকনিক শাখার সভাপতি কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল, সহ-সভাপতি রেজওয়ানুল ইসলাম চৌধুরী সানি ও শেরাফত আলী খান বুলবুল মারাত্মক আহত হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই সানির মৃত্যু হয়।
আহত জুয়েল ও বুলবুল দীর্ঘ চিকিৎসায়ও পুরোপুরি সুস্থতা ফিরে পাননি। জুয়েলের ডান হাতের চারটি আঙ্গুল কেটে বাদ দিতে হয়েছে। তার মাথা ও ঘাড়ে অজস্র আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর বুলবুল হারিয়েছেন স্বাভাবিক স্মৃতিশক্তি। সানি হত্যার মামলায় ২০১২ সালের ১৬ মে আদালত ২ আসামির মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন।