মহাদেবপুরে জরিমানার পর আবারও শুরু হয়েছে ভেজাল গুড় তৈরি

 

মহাদেবপুরে প্রতিনিধিঃ

নওগাঁর মহাদেবপুরে র‌্যাব, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যৌথ অভিযানে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের পর আবারও শুরু হয়েছে ভেজাল গুড় তৈরি। বরং জরিমানার এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা ভেজালের পরিমান আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার মথুর কৃষ্ণপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে নোংরা পরিবেশে ভেজাল গুড় তৈরির এ চিত্র।

 

 

 

এলাকাবাসী জানান, গত বুধবার র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্প ও জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যৌথ অভিযানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ভেজাল গুড় তৈরি ও বিক্রির দায়ে উপজেলার মথুর কৃষ্ণপুর গ্রামের জামাল হোসেনের ৮০ হাজার টাকা, বুলেট হোসেনের ৩০ হাজার টাকা, শ্রী প্রদীপ কুমার মন্ডলের ৩০ হাজার টাকা ও আব্দুল মালেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় ৫০৯ মন ভেজাল গুড়, গুড় তৈরির কাজে ব্যবহৃত ১৭৪ মন চিনির সিরা, ৬ কেজি ক্ষতিকর রং, ২ কেজি হাইড্রোজেন জব্দ করে ধ্বংস করা করে তারা। শনিবার ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কোন রকম পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ছাড়ায় আগের জায়গাতেই আগের মতই গুড় তৈরি করছেন তারা। জমি থেকে কেটে এনে বাড়ির পাশেই জমা করে রাখা হয়েছে মণকে মণ আখ। সেগুলো পরিস্কার না করেই ময়লা খোসাসহ বিদ্যুৎ চালিত মাড়াইকলে সেগুলো মাড়াই করা হচ্ছে। আখ থেকে বের হয়ে সে রসগুলো আগের মতই সিমেন্টের তৈরি একটি নোংরা পাত্রে জমা হচ্ছে। সেখান থেকে রসগুলো উঠিয়ে খোলা বড় কড়াইয়ে  দেয়া হচ্ছে। বড় চুলার পাশেই রাখা হয়েছে ক্ষতিকর সোডার পাত্র। রসের উপর ময়লা আবর্জনার স্তুপ।

 

 

 

 

এ বিষয়ে বুলেট বলেন, আখ মাড়াই করেই তিনি গুড় তৈরি করছেন। দু’দিন আগেই ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছেন দিয়েছেন স্বীকার করে তিনি বলেন, কেউ তাদেরকে গুড় তৈরি বন্ধ করতে বলেননি। তাই তারা এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। জরিমানার টাকা তুলতে হলে এখন একটু বেশি করে গুড় তৈরি করতে হবে বলেও জানান তিনি। ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল আব্দুল মালেকের। তিনিও আবার শুরু করেছেন এ ব্যবসা। তিনি জানালেন, বছরের পর বছর ধরে তারা এ ব্যবসা করে আসছেন। অনেকেই এসে সেলামী নিয়ে চলে যান। কিন্তু র‌্যাব আসলে জরিমানা দিতে হয়। তাও বছরে একবার। গতবছরও দিয়েছেন। কিন্তু তারা চলে গেলে আর কোন সমস্যা হয়না। ৮০ হাজার টাকা জরিমানা দেয়া জামাল হোসেন মাড়াই বন্ধ রাখলেও তার যন্ত্রপাতি, মাড়াই মেশিন, মণকে মণ আখ ঘটনা  স্থলেই পড়ে আছে। পরিস্থিতি সামলে আবার শুরু করবেন-এমনটিই জানালেন তিনি।

 

 

 

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নওগাঁর সহকারী পরিচালক শামীম হোসেন জানান, অভিযানের সময় তাদেরকে গুড় তৈরি বন্ধ করতে বলা হয়নি ঠিকই, কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ক্ষেত থেকে আখ তুলে এনে হাসুয়া দিয়ে তার খোসা ছড়িয়ে নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া মাড়াই মেশিন থেকে যেখানে আখের রস পড়ে সেখানে সিমেন্টের বদলে প্লাস্টিকের পরিস্কার পাত্র রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া গুড়ে ক্ষতিকর রঙ, চিনি, সোডা প্রভৃতি মেশাতে নিষেধ করা হয়েছে। এসব শর্ত না মানলে আবার অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও তিনি জানান।

 

 

 

 

 

সানশাইন/টিএ


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৩ | সময়: ৯:৪৯ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর