রবিবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলে হোসেন বাদশার হাতের ছোঁয়ায় প্রাণ ফিরল ভূমিকম্পে ভেঙে যাওয়া রাণীবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের। একইসঙ্গে নিজের ঐতিহ্যও ফিরে পেল শহরের প্রাচীনতম এই স্কুলটি। বুধবার সকালে স্কুলটির অ্যাকাডেমিক ভবনের অনুভুমিক ও ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারিত নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন এমপি বাদশা।
এক কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
স্কুলের পুরনো ভবনটি ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুভাষাবিদ স্যার যদুনাথ সরকারের। এই ভবনেই কিশোরকালের অনেক সময় কাটিয়েছেন তিনি। ২০১৪ সালে হওয়া ভূমিকম্পে পুরনো ভবনের অনেকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ক্লাস করা নিয়ে বিপাকে পড়েন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে তখনই স্কুলটি পরিদর্শন করেন সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। উদ্যোগ নেন স্কুলটি সাজিয়ে তোলার।
শুরুতেই সোলার প্যানেল, আধুনিক টয়লেট, বিদ্যালয়ের প্রাচীর ও গেট তৈরির জন্য তিনি অর্থ বরাদ্দ দেন। পর্যায়ক্রমে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ, শিক্ষকদের কক্ষসহ বেশ কিছু কাঠামোগত সুবিধা পায় স্কুলটি। সবশেষ আধুনিক তিনতলা ভবন নির্মাণের মধ্যে দিয়ে জীর্ণতা কাটিয়ে আধুনিকায়নে প্রবেশ করল রাণীবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। আর এতে স্থানীয়দের প্রশংসায় ভাসছেন এমপি ফজলে হোসেন বাদশা।
সকালে নতুন ভবনের উদ্বোধন উপলক্ষে স্কুলের পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ভবন উদ্বোধন শেষে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এমপি বাদশা। তিনি বলেন, এই স্কুলের নতুন ভবন উদ্বোধনের পরে বড় ধরনের উন্নয়নের জন্য রাজশাহীতে আর তেমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবশিষ্ট নেই। আমার হাতের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি; এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহরে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, রাণীবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের উন্নয়ন পূর্ণতা পেল এমন বলার অবকাশ নেই। এখনও কিছু কাজ বাকী। ভেবেছিলাম, আমার নির্বাচনি এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগত উন্নয়ন কাজ মনে হয় শেষ। কিন্তু এখানে এসে অনুভব করছি- এই স্কুলের সকল উন্নয়নমূলক কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমার কাজ শেষ হলো না। স্কুলটিকে এমন এক স্তরে নিয়ে যেতে চাই, যেন এখানে ভর্তি হতে শিক্ষার্থীদের অনেক কাঠ-খরি পোড়াতে হয়।
রাণীবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম আগামীতে স্যার যদুনাথ সরকারের নামেই নামকরণ হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বাদশা বলেন, অনেকে বলেছেন; স্যার যদুনাথ সরকারের নামে স্কুলটির নামকরণ করা হয়নি। কিন্তু আগামীতে করা যাবে না, এমন মনে করার কোন কারণ নেই। এটি করা সম্ভব। একটি গুণি মানুষের স্মৃতি আমরা ধরে রাখতে পারবো না, এমন হীনমন্যতা দেখানোরও কোন অবকাশ নেই।
রাসিকের ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্কুলের গভর্নিং বডির সভাপতি রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাণীবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মহিলা পরিষদের রাজশাহী জেলার সভাপতি কল্পনা রায়। এসময় স্কুলের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ স্থানীয় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।