বাগমারায় পুকুর খনন নিয়ে সংঘর্ষে নারীসহ আহত ৫

স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা: রাজশাহীর বাগমারায় সোমবার মাড়িয়া ইউনিয়নের গাঙ্গোপাড়া গ্রামে পুকুর খননকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪জন আহত হয়েছেন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
আহতরা হলেন, গাঙ্গোপাড়া গ্রামের আজাহার আলী মেম্বর (৬০), জুয়েল রানা (৩৩), আব্দুল খালেক (৫০) ও জুয়েলের মা হাসনা হেনা (৫৫)। এদের মধ্যে আজাহার আলী মেম্বারের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। যে কোন সময় আরও বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে উপজেলায় ফসলি জমিতে অবৈধ ভাবে পুকুর খননের কোন সুযোগ দেয়া হবে না বলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সকলকে অবহিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি প্রভাবশালী একটি চক্র কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের তিনফসলি জমিতে অবৈধ ভাবে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পুকুর খনন করছেন। কৃষি জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করে পুকুর খনন করায় আবাদি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে এবং চাষাবাদ হুমকীর মুখে পড়ছে। চলমান অবস্থায় গতকাল সোমবার উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নে তেলিপুকুর গাঙ্গোপাড়ার মইষার বিলে তেলিপুকুর গ্রামের আবুল হোসেনের পুত্র ডিস ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান গ্রামের কতিপয় লোককে টাকার প্রলোভন দিয়ে জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন করার ব্যবস্থা নেয়।
এতে গ্রামের সালেক আলী ও আজাহার মেম্বর অন্য একটি পক্ষ নেয়। ফজলুর রহমানকে অধিকাংশ জমির মালিক জমি না দেয়ার পক্ষে থাকে। বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয়রা একাত্রিত হয়ে ২০ হাজার টাকা বিঘার জমি ৩০ হাজার টাকায় লিজ দেয়ার প্রস্ততি নেয়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা চলে।
গ্রামের আব্দুল মালেক জানান, কোন রকম চুক্তি ছাড়া তার ও প্রতিবেশীদের জমি জোর করে পুকুর খনন করতে গ্রামের ডিস ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান ভেকু (মাটি কাটা যন্ত্র) নিয়ে আসে। বিষয়টি যেনে তার প্রতিবাদ করতে গিলে ফজলুর রহমান, ফেরদৌস ও জাহিদ সহ কতিপয় লাঠিয়ালবাহিনী কোন কিছু বুঝার আগে সালেকের বাড়ির নীচে এসে স্থানীয়দের উপর লাঠি,-সোটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় ৫-৬ জন আহত হয়েছেন। আহদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজন বলে জানান তিনি। তবে ডিস ব্যবসায়ীর দাবি মইষার বিলে পুকুর খননের জন্য জমির মালিকদের সাথে কথা হলে পুকুর খনন কাজ হাতে নেয়া হয়।
কিন্ত কতিপয় লোক তাকে জমি লিজ দেয়ার পর অন্য পক্ষদের কাছে আবারো বেশী দরে চুক্তি নামা করে। বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা বাধে। গতকাল বেলা ১০টার দিকে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ,এফ,এম আবু সুফিয়ান জানান, উপজেলায় ফসলি জমিতে অবৈধ ভাবে পুকুর খননের কোন সুযোগ দেয়া হবে ন। বাগমারায় যোগদানের পর থেকে এখন পর্যন্ত কাউকেই পুকুর খননের কোন অনুমতি দেননি। ফসলি জমিতে পুকুর খননের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে বাগমারা থানায় যোগাযোগ করা হলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, জমি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা হয়েছে তা শুনে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত কোন অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২২ | সময়: ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ