শনিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্পোর্টস ডেস্ক: গ্রুপে বেলজিয়ামের মতো দলকে পেছনে ফেলে মরক্কোর ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় খেলাই ছিল অনেক বড় ব্যাপার। তবে স্বপ্নের পথচলায় তাতে সন্তুষ্ট নয় দলটি। আরেক ফেভারিট স্পেনকে হারিয়ে উঠে গেছে কোয়ার্টার-ফাইনালে। জিয়াশ-হাকিমিদের অভাবনীয় এই অর্জন আনন্দের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে আফ্রিকা ও আরব দেশগুলোতে।
শেষ আটে ওঠার লড়াইয়ে স্পেনের সঙ্গে মরক্কোর গত মঙ্গলবারের ম্যাচটি নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় গোলশূন্য ড্রয়ে শেষ হয়। এরপর পেনাল্টি শুটআউটে ৩-০ গোলে জিতে ইতিহাস গড়ে আফ্রিকার দেশটি। প্রথম আরব দেশ হিসেবে বিশ্ব সেরার মঞ্চে কোয়ার্টার-ফাইনালের টিকেট পায় তারা। স্পট-কিক থেকে মরক্কোর আশরাফ হাকিমির নেওয়া শট জালে জড়াতেই আল রাইয়ানের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে মুখরিত হয়ে ওঠে মরক্কান সমর্থকদের জয়োল্লাসে। উৎসবের আনন্দে ভাসে মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কা থেকে শুরু করে ইরাকের বাগদাদ পর্যন্ত।
মরক্কোর রাজধানী রাবায় ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘন্টা আগে থেকেই ক্যাফেগুলোতে ভিড় জমিয়েছিল ভক্তরা। জয় নিশ্চিত হতেই শহরের কেন্দ্রস্থলের একটি স্কয়ারের দিকে যেতে থাকে মানুষ, ঠিক যেখানে আগের ম্যাচগুলোর পর তারা উদযাপন করেছিল। আনন্দ উল্লাসে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো শহর, আশেপাশের বাড়ির জানালা থেকে পতাকা নেড়ে যোগ দেন অন্যরা। উদযাপনে যোগ দিতে যাওয়ার পথে রয়টার্সকে ফাহাদ বেলবাছির নামের এক ভক্ত বলেন, “এই প্রথম এমন অনুভূতি হচ্ছে! আমরা গর্বিত।”
আরব বিশ্বের নেতারা মরক্কোকে তাদের সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। জর্ডানের রানী রানিয়া টুইটারে লিখেছেন, “অ্যাটলাস সিংহদের অভিনন্দন, আপনারা আমাদের আনন্দিত করেছেন। ওয়াও মরক্কো, আপনারা আবারও ইতিহাস গড়েছেন!” ব্রাহিম বেলখিত নামের রাবাতের এক নাগরিকের কাছে এই আনন্দের মাহাত্ম্য এতটাই যে, পুরনো এক শত্রু যাকে অনেক বছর এড়িয়ে চলেছেন তার সঙ্গে সমস্যা মিটিয়ে ফেলেছেন তিনি। ব্রাহিম বলেন, ‘এই জয় আমাদের পুরনো ঝগড়া ভুলিয়ে দিয়েছে।’
মরক্কানদের ইতিহাস গড়ার আনন্দ ছড়িয়ে যায় কায়রো, বৈরুত, তিউনিস, আম্মান ও রামাল্লাতেও। এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামের বাইরেও মরক্কান ভক্তদের তীব্র গর্জন তাদের উপস্থিতির জানান দিচ্ছিল। সেখানে পুরুষদের বাজানো ড্রামের তালে নারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সুর মেলাতে থাকে, যা তৈরি করে এক উৎসবমুখর পরিবেশের।
দোহায় বাস করা মরক্কোর নাগরিক তাহার চোখে স্পেনের মতো পরাশক্তির বিপক্ষে তাদের এই জয় বিশেষ কিছু। “আমি দুই স্প্যানিশ বড় ক্লাব বার্সেলোনা ও (রিয়াল) মাদ্রিদের খেলা দেখে বড় হয়েছি। তাই স্পেনের মতো একটি শক্তিশালী দলকে হারানো মরক্কোর জন্য অনেক বড় অর্জন।”