মঙ্গলবার, ১৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর বাগমারার অর্জুনপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানাশক্ষকসহ ছয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক প্রবাসীর বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে শিক্ষকদের দাবি প্রতিষ্ঠানের জমিতে থাকা স্থাপনা তাঁরা উচ্ছেদ করেছেন। এই বিষয়ে প্রবাসী বাদী হয়ে থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন। কিন্তু এখনো সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি।
এজাহার ও স্থানীয় লোকজনের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়নের অর্জনপাড়া গ্রামের মঞ্জুর রহমান ১৫ বছর ধরে দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন। এরমধ্যে তাঁর কিছু জমি দখল করে স্থানীয় অর্জুনপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করে। আরও কিছু জমি দখল করে মাঠ হিসাবে ব্যবহার করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তিনি দেশে ফিরে জমি বেদখল হওয়ার বিষয় দেখতে পান এবং এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চান। তাঁর জমি ফিরে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
তবে প্রধান শিক্ষক তাঁর প্রস্তাবে রাজি হননি। উল্টো বিদ্যালয় ঘেঁষে থাকা প্রবাসীর একটি দোকানঘর ও খড়ির ঘর (লাকড়ি) দখলের চেষ্টা করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে গত অক্টোবর মাসে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন প্রবাসী।
পুলিশ বিষয়টি তদন্ত শুরু করলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উল্টো প্রবাসীর ওপর চাপ তৈরি করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্কাছ আলী সহকর্মীদের নিয়ে বিদ্যালয় ঘেঁষে থাকা প্রবাসীর ঘরগুলো ভেঙে ফেলেন। বিদ্যালয় সংলগ্ন বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। হামলা চালিয়ে নগদ টাকাও লুট করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এসময় বাধা দিতে আসলে তাঁদের ভয়ভীতি দেখানো হয়। নিরুপায়ে প্রবাসী ও তাঁর পরিবারের সদস্য পালিয়ে যান। রাতে প্রধান শিক্ষকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে একটি এজাহার দায়ের করেন। এখানে প্রধান শিক্ষক ছাড়াও অপর পাঁচ শিক্ষক ইসমাইল হোসেন, রহিদুল ইসলাম, আবুল কালাম, ওবাইদুর রহমান ও আনোয়ার হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। তাঁরা ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
প্রবাসী মঞ্জুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, তাঁর জমি দখলের সময় পরিবারের সদস্যরা বাঁধা দিলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শোনেননি। দেশে ফিরে তিনি জমি ফেরত চাইলে তাঁরা ক্ষুব্ধ হন। বিদ্যালয় ঘেঁষে থাকা জমিও দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। থানায় সাধারণ ডায়েরির পর থেকে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্কাছ আলীর সাথে যোগাযোগ করে এ সব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রবাসীর কিছু জমি বিদ্যালয়ের মাঠের ভেতরে রয়েছে। এজন্য তিনি বিদ্যালয়ের জমিতে দোকানঘর ও খড়ির ঘর নির্মাণ করেছেন। তাঁকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হলেও তিনি শোনেননি। তাই সবাই মিলে সেগুলো উ”েছদ করা হয়েছে। তবে লুটপাট ও জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
বাগমারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তৌহিদুর রহমান বলেন, এই বিষয়ে প্রবাসী মঞ্জুর রহমান থানায় একটি লিখিত এজাহার দিয়েছেন। তবে মামলা হিসাবে এখনো তালিকাভুক্ত করা হয়নি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।