সোমবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
তাড়াশ প্রতিনিধি: তাড়াশ উপজেলায় রিকশা ভ্যানে লেপ তোশক বিক্রেতাদের কান ফাটা চিৎকার ‘মা-বোনেরা ন্যাপ তোশক নিবেন নাহি’। আর শীতের আগেই শীত শীত অনুভূতি। সিরাজগঞ্জে তাড়াশে দৃশ্যমান হচ্ছে শীতকেন্দ্রিক নানা ব্যস্ততা। তাই ঠান্ডা নিবারণে সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে পুরোদমে। সিরাজগঞ্জে প্রতিটি উপজেলায় লেপ তৈরি কাজ শুরু হয়েছে।
বিভিন্ন এলাকার দোকানে লেপ তোশক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে কারিগরা। দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, মালিক-শ্রমিক লেপ- তোশক তৈরির সেলাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শীত মৌসুমের শুরুতেই ক্রেতারা দোকানে পছন্দমতো লেপ-তোশক তৈরির অর্ডার দিয়ে রেখেছেন। প্রতিটি ৪-৫ হাত লেপ ১৩০০ টাকা, তোশক ১৪০০ এবং জাজিম ৩০০০-৪০০০ টাকা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি করা হয় বলে জানান দোকানিরা।
তারা আরও জানান, বর্তমানে প্রতি কেজি কালো ব্লেজার তুলার দাম ৩০-৩৫ টাকা, কালারিং তুলা ৪০-৫০ টাকা, শিমুল তুলা ৩৫০-৪০০ টাকা, সাদা তুলা ১০০ টাকা ও কাপাশ তুলা ২৫০-২৮০ টাকা করে বিক্রি হয়। শহরের এম এ মতিন সড়ক, কালিবাড়ি, খলিফা পট্টি, লেপ তোষকের দোকানে আসা খিচুরি পাড়ার গ্রামের ফজিলা আক্তার লিলি বলেন, ঠান্ডা আসছে তাই পুরাতন কাপড় বদলিয়ে লেপ তৈরি করে নিচ্ছি।
তাড়াশ বাজারের লেপ-তোষক তৈরির কারিগর তুহিন মিয়া কাশেম, কাদের, গফুর, সুরুতজামান বলেন, শীত শুরু হতে না হতেই কর্মব্যস্ততা বেড়ে গেছে। আমরা ৪-৫ হাতের একটি লেপ তৈরির শ্রমিকেরা মুজুরি পাই ২৫০ টাকা, ৫-৬ হাত লেপের মুজুরি ৩৫০ টাকা, তোশকের মজুরি ২৫০-৩০০ টাকা। সারাদিনে ৬-৭টি লেপ তৈরি করা যায়। লেপ তোশক তৈরি করে যে মুজুরি পাই তা দিয়ে ছেলে মেয়ের পড়াশোনাসহ সংসারের অন্যান্য খরচ হয়ে যায়। তবে দ্রব্য মূল্য বেড়ে যাওয়াতে আমাদের দূর্বিসহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এ আয় বাড়তি কিছু চিন্তার সুযোগ নেই।
ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, হতদরিদ্র মানুষের গায়েই সবার আগে কামড় বসায় শীত। তাই আগেভাগে তারা শীতবস্ত্র কিনতে চলে আসেন। শহরের মৌসুমি মার্কেট, খলিফা পট্টি, কামারখন্দের জামতৈল বাজার, কাজিপুরে সোনামুখি বাজার, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জ, তাড়াশ ও বেলকুচির বিভিন্ন বাজারে লেপ তোশক সেলাইয়ের কাজ চলছে দিন ভর।
সিরাজগঞ্জ বাজারের দোকান মালিক আব্দুল হামিদ, শহরের ১ নং খলিফ পট্টির দোকান মালিক আজিজুল হক বলেন, অতীতে লেপ তোশকের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও একটি লেপ বিক্রি হয় দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায়। অপরদিকে জোড়া তালি কম্বলের মূল্য ৫০০-৫৫০ টাকা। দামে কম হওয়ায় এই কম্বল গুলোর নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
উপজেলা হাট বাজারের বিভিন্ন লেপ তোশক ক্রয় করে তাড়াশ, রায়গঞ্জ প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রামগুলোতে ভ্যানে করে নিয়ে বিভিন্ন সাইজের লেপ তোশক বিক্রি শুরু হয়েছে। বিক্রি ভালো হয় বলে জানায় লেপ, তোষক, বালিশ বিক্রেতা তালেব আলী। বিভিন্ন দামের দেশি বিদেশি কম্বল বাজার দখল করে নেয়ায় অতীতের শীতবস্ত্র লেপ কাঁথা আজ বিলুপ্তির পথে বলে জানায় সচেতন মহল।