রবিবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সানশাইন ডেস্ক: সবাইকে মিতব্যয়ী হতে হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুদ্ধ ও করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। তার ধাক্কাটা আমাদের দেশে এসেও পড়েছে, মূল্যস্ফীতির কারণে সব দেশ হিমশিম খাচ্ছে।প্রত্যেকের রিজার্ভ ব্যবহার করেই তাদের চলতে হচ্ছে। আমাদেরও করতে হচ্ছে এবং সেটা মানুষের জন্য।
শনিবার ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবস-২০২২ উদযাপন এবং জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে (ভার্চ্যুয়াল) প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চাই বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা যেন কোনোমতেই ব্যাহত না হয়। আমরা যে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলাম- কোভিড, যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে আমাদের কিছুটা থমকে দাঁড়াতে হয়েছে এটা ঠিক; কিন্তু এই অবস্থা অতিক্রম করে আমরা এগিয়ে যাব। আমাদের লক্ষ্য জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা কায়েম করব। ’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন গৃহীত পদক্ষেপে আজকে আমরা আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করেছি, আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি প্রতি ঘরে ঘরে, যদিও এখন ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। ’
সবাইকে উৎপাদন বাড়ানো এবং সঞ্চয়ের দিকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘বর্তমান যুগে সারা বিশ্বের খাদ্যাভাব জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। আমেরিকা- ইংল্যান্ডের মতো উন্নত দেশগুলোর কথা আমি বলছি। সেই ক্ষেত্রে আমাদেরকে আরও উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং সঞ্চয় করতে হবে যাতে করে এই অভিঘাত থেকে আমাদের দেশের মানুষকে রক্ষা করা যায় সেই ব্যবস্থাটা নিতে হবে। ’
বৈশ্বিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদিও এই যুদ্ধ ও করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। তার ধাক্কাটা আমাদের দেশে এসেও পড়েছে, মূল্যস্ফীতির কারণে সব দেশ হিমশিম খাচ্ছে। প্রত্যেকের রিজার্ভ ব্যবহার করেই তাদের চলতে হচ্ছে। আমাদেরও করতে হচ্ছে এবং সেটা মানুষের জন্য। ’
তিনি বলেন, ‘ সার-তেল-ভোজ্য তেল কিনতে হচ্ছে উচ্চ মূল্যে। পরিবহন খরচও বৃদ্ধি পেয়ে গেছে। সে দিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের সবাইকে মিতব্যয়ী হতে হবে। ’ চাকরির পেছনে না ছুটে যুব সমাজকে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যারা যুব সমাজ শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরাই কাজ করতে পারে, খামার তৈরি করতে পারে, বর্তমান যুগে খাদ্য উৎপাদন এবং খাদ্য খামার এটা পোল্ট্রি হতে পারে অথবা মৎস্য চাষ । আমি তো অর্থনীতি অঞ্চল করছি সেখানে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প তৈরি করে আমাদের নিজেদের দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা বিদেশেও পাঠাতে পারব। এই ক্রান্তিকালীন সময়ে এ ব্যাপারে সবাইকে আরও কাজ করতে হবে। ’
সমবায়ের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নের সমবায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। যদি যুব সমাজ এগিয়ে আসে এবং সমবায়ের মাধ্যমে সমস্ত গ্রামের মানুষকে এক করতে পারে তাহলে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব। ’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০২১ প্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেওয়া হয়।