মঙ্গলবার, ১৮ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সাপাহার প্রতিনিধি: বর্ষার শুরুতে পর্যাপ্ত বৃষ্টির বিপর্যয় ঘটলেও আমের পর নওগাঁর সাপাহারের কৃষক ও কৃষিদপ্তর এবার আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে। এবছর বর্ষার শুরুতে বরেন্দ্র অঞ্চলের সাপাহার, পোরশা, এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত কম হয়েছিল।
অনেকেই আমন চাষাবাদের হাল ছেড়ে দিয়ে মনের দু:খে ওই সমস্ত ধানের জমিতে আমবাগান করার কথা ভাবছিল কিন্তু বর্ষার ঋতুর পর শরৎ ঋতুর দিকে হঠাৎ করে আকাশ হতে প্রচুর বৃষ্টিপাত নামতে শুরু করে। ঠিক তখনই হাল ছেড়ে দেয়া কৃষকগন তাদের পড়ে থাকা ওই সব জমিতে নতুন করে চাষবাস শুরু করে একটু দেরিতে হলেও আমন ধানের চাষাবাদ আরাম্ভ করেন। এরপর বরেন্দ্র এই এলাকায় আকাশ হতে মাঝে মধ্যে বৃষ্টি দিয়ে ধানের আবাদগুলিকে সবুজ ও সজিব করে রাখে।
বর্তমানে প্রতিটি মাঠে ধানের আধাপাকা সোনালী শীষ দোল খেতে দেখা যাচ্ছে। উপজেলার পাতাড়ী গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান মতি, কলমুডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সালাম, গৌরীপুর গ্রামের মাফিজুর রহমান জানান চাষাবাদের প্রথম দিকে মনে অনেক কষ্ট থাকলেও বর্তমানে মাঠে ধানের অবস্থা দেখে মন আনন্দে দুলছে। সাপাহার উপজেলা কৃষি দপ্তরের পরামর্শক্রমে তারা বালাই দমনে পরিমাণমত কীটনাশক স্প্রে- পার্চিং পদ্ধতিতে পোকামাকড় দমন করেছে। তাদের মতে সামনে আর কিছু দিনের মধ্যে কৃষকের স্বপ্ন সোনালী ফসল তাদের ঘরে উঠবে। ভবিষ্যতে আর কিছুদিন আবহাওয়া কৃষকের অনুকুলে থাকলে এবছর নওগাঁর আমের বাণিজ্যিক রাজধানী সাপাহারে আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষককুল ও কৃষিদপ্তর মনে করছেন।
এবিষয়ে সাপাহার উপজেলা কৃষিদপ্তরের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো: আতাউর রহমান সেলিম জানান যে, বর্ষা লেটে হলেও আমাদের পক্ষ থেকে প্রত্যেক কৃষককে সঠিক সময়মত সঠিক পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে, সারা উপজেলায় বেশ কিছু ব্লক তৈরী করে নিয়মিত প্রতিটি ব্লকে কৃষিদপ্তরের প্রতিনিধীরা সময়মত গিয়ে কৃষকগনকে পরামর্শ প্রদান করেছে। তার মতে এবছর সাপাহার উপজেলায় ৮হাজার ৫ হেক্টের জমিতে উফসী আমন ও ৮৯০হেক্টের জমিতে স্থানীয় জাত সহ মোট ৯হাজার ৭৯৫ হেক্টোর জমিতে আমন চাষাবাদ হয়েছে। বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় এবারে প্রতি হেক্টর জমিতে ৫.৪ মে:টন ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন ধান ঘরে এলে এ উপজেলার কৃষকগন নবান্ন উৎসবেরও স্বপ্ন দেখছে।