মঙ্গলবার, ৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামের চামটা গ্রামে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তিনটি বসত বাড়ি ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ ও গাছপালা কেটে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে গত ১৯ দিন যাবৎ মানবেতর জীবন যাপন করছেন ওইসব পরিবারের সদস্যরা।
জানা যায়, উপজেলার চামটা মৌজার ৪৭৩ হালদাগের ১০ কাঠা জমির মালিক মোক্তার হোসেন। এ জমিতে তার দুই বড় ভাই ও এক ভাতিজি জামাই ঘরবাড়ি করে প্রায় ২৫ বছর যাবৎ বসবাস করে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি প্রতিবেশী মো: জনাব আলী ওই জমি কিনে নিয়েছেন বলে দাবি করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষই মামলা করলে আদালত ওই জমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জনাব আলী লোকজনসহ গত ১৩ অক্টোবর দুটি বাড়ি ভাংচুর ও আরেকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এছাড়া প্রায় দেড় লাখ টাকা দামের আম, মেহগণি ও লিচুসহ ৩৮টি গাছ কেটে পুরো ভিটায় কলাগাছ লাগিয়ে দিয়েছেন তারা। এ সময় বাধা দিতে গেলে তারা মোক্তার হোসেনকে পিটিয়ে জখম করেন। ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দেয়ায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে বর্তমানে তিনটি পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আজিজুল হকের বসতঘরের টিনের বেড়া ও দরজা-জানালা ভাঙ্গা, ঘরে কোন আসবাব পত্র নেই। শোয়ার চৌকিটাও ভাঙ্গা। রান্নাঘর আর খড়ির ঘরের কোন অস্তিত্ত্বই নেই। পাশেই তার ছোট ভাই তাইজুল ইসলামের দুটি ঘর আগুনে পুড়ে গেছে। অন্য একটি ঘর বাঁচাতে পারলেও তাতে তালা দিয়ে স্ত্রী সন্তানসহ জীবন নিয়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পুরো ভিটা যেন শ্মশানে পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জনাব আলী বলেন, আমি জমিটি মোক্তার হোসেনের কাছ থেকে কিনে নিয়েছি। কিন্তু তারা জমির দখল ছাড়ছে না। তাই আমি আদালতে উচ্ছেদ মামলা করেছি। আদালতে উচ্ছেদ মামলা করেও নিজেরাই কেন বাড়িঘর ভাংচুর করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওরা বাড়াবাড়ি করছে, তাই একটু শিক্ষা দিয়েছি।
তবে জমির মালিক মোক্তার হোসেন বলেন, এ জমি আমি কখনও বিক্রি করিনি। তারা অন্য কাউকে মোক্তার হোসেন সাজিয়ে জমিটি জাল দলিল করেছে। এ ব্যাপারে আদালতে সিদ্ধান্ত হবে জমিটি কার। কিন্তু তার আগেই তারা আমার দুই ভাইসহ আরেক ভাতিজি জামাইকে বাড়িঘর ভেঙ্গে দিয়ে ভিটা দখল করার অপচেষ্টা করছে। বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক জানান, এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া সেখানে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।