সর্বশেষ সংবাদ :

ডায়াবেটিস-হৃদরোগের ঝুঁকিতে ৫০ কোটি মানুষ

সানশাইন ডেস্ক: বিভিন্ন দেশের সরকার যদি নাগরিকদের শারীরিক অনুশীলনে উৎসাহ না দেয় কিংবা এ বিষয়ক পদক্ষেপ নিতে গড়িমসি করে, সেক্ষেত্রে ২০৩০ মধ্যে বিশ্বজুড়ে মানুষ হৃদরোগ, স্থুলতা, ডায়াবেটিস ও এই জাতীয় রোগ ও শারীরিক জটিলতায় ভোগা লোকজনের সঙ্গে যুক্ত হবে অন্তত ৫০ কোটি মানুষ।
গত সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে লোকজনের শারীরিক অনুশীলন সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সেখানেই দেওয়া হয়েছে এই সতর্কবার্তা।
কেবলমাত্র হাঁটাচলার ও শারীরিক অনুশীলন না করার কারণে প্রতি বছর হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থুলতা প্রভৃতি রোগ ও জটিলতার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা বাবদ বিশ্বে ২ হাজার ৭ শ’ কোটি ডলার ব্যয় হয় উল্লেখ করে ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বিশ্বের ১৯৪টি দেশের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে—অধিকাংশ দেশেই মধ্যে হাঁটাচলা, শারীরিক অনুশীলন বা এই জাতীয় শরীরবৃত্তিক কার্যক্রমে নাগরিকদের অংশগ্রহণের হার বেশ হতাশাজনক।’
‘করোনা মহামারি অন্যান্য বিভিন্ন রোগের জেরে এমনিতেই বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভারাক্রান্ত। এ কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, যদি সরকারিভাবে নাগরিকদের শারীরিক অনুশীলন ও শরীরবৃত্তিক কার্যক্রমে উৎসাহ দেওয়া হয়— তাহলে একদিকে যেমন লোকজনের হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থুলতা প্রভৃতি অসংক্রামক রোগ ও জাটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমবে, তেমনি অন্যদিকে স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থার ওপর চেপে বাস অতিরিক্ত ভারও লাঘব হবে।’
ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯৪ সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে নাগরিকদের শরীরবৃত্তিক কার্যক্রমে উৎসাহিত করার নীতি নিয়েছে— শতকরা হিসেবে এমন সব রাষ্ট্রের হার ৫০ শতাংশেরও কম। এসব রাষ্ট্রের মধ্যে আবার ৪০ শতাংশেরও বেশি দেশে এই নীতি রয়েছে কেবল কাগজে কলমে।
‘বর্তমানে জাতিসংঘের মাত্র ৩০ শতাংশ রাষ্ট্র কাগজে-কলমে ও বাস্তবিক অর্থে নাগরিকদের শরীরবৃত্তিক কার্যক্রম বাড়ানোর নীতি সরকারিভাবে নিয়েছে। এসব রাষ্ট্রের মধ্যে আবার ৭৫ শতাংশ দেশের কাছে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা ও শরীরবৃত্তিক কার্যক্রমের তথ্য থাকলেও প্রাপ্তবয়স্কদের শরীর চর্চার কোনো তথ্য নেই।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘নাগরিকদের মধ্যে হাঁটা, সাইকেল চালনা, সাঁতার, খেলাধুলা ও অন্যান্য শারীরিক কার্যক্রমে চর্চা বাড়াতে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। কারণ এসব কার্যক্রমে নাগরিকদের অধিকহারে অংশগ্রহন তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি ব্যাপকভাবে সামাজিক, পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক অবদান রাখতে পারে।’
সদস্যরাষ্ট্রসমূহের জন্য এ সম্পর্কিত একটি খসড়া কর্মপরিকল্পনাও (অ্যাকশন প্ল্যান) প্রস্তাব করা হয়েছে সংস্থার পক্ষ থেকে। সেখানে হাঁটা ও সাইকেল চালানোর উপযোগী সড়ক নির্মাণসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে শারীরিক কার্যক্রমকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে।


প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২২ | সময়: ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ