রবিবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
মতলুব হোসেন, জয়পুরহাট: জয়পুরহাট শহরের প্রধান সড়কের চারলেন কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর তা অন্ধকারেই রয়ে গেলো। সাড়ে তিন বছর পর জানা গেল নকশায় ভুল। এরপর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো শুরু হয়নি রাস্তার সংস্কার কাজ। পেরিয়ে গেছে কার্যাদেশের মেয়াদ, সড়কে যানবাহনের প্রচন্ড চাপে নাকাল জেলাবাসী।
জয়পুরহাট জেলা শহরের যানজট নিরসন কল্পে সড়ক চারলেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে। এক পর্যায়ে এই কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করা হয়। এরপর সড়ক প্রশস্ত করতে দুই পাশে ভবনগুলোর একাংশ ভেঙে ফেলা হয় যা পরবর্তীতে পুনরায় মেরামত করে নিয়েছেন বেশির ভাগধ্য ভবনের মালিক। সড়কের দুই পাশের ভবন সংস্কারকাজের ইট-বালু-পাথর ও রাবিশগুলো ফুটপাতে রাখায় চলাচল করতে পারছে না পথচারীরা। ফলে যানবাহনের প্রচন্ড চাপে ভাঙাচোড়া শহরে হেঁটে চলাও দায় হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় চার লেনের কাজ থেমে যাওয়ায় চরম ভাবে ক্ষুব্ধ জেলাবাসী।
জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় ২০১৫ সালে। এ কাজে ভূমি অধিগ্রহণসহ পুরো প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৬৪ কোটি টাকা। সড়কটি বগুড়ার মোকামতলা থেকে জয়পুরহাট পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার এই প্রকল্পের আওতায় আসে। এর মধ্যে মোকামতলা থেকে জয়পুরহাটের হারাইল পর্যন্ত সাড়ে ২৮ কিলোমিটার সড়ক ১৮-২৪ ফুট প্রশস্ত এবং হারাইল থেকে রেলঘুণ্টি পর্যন্ত শহরের আড়াই কিলোমিটার অংশ ৬০ ফুট প্রশস্ত করে চারলেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়।
২০১৭ সালে একনেকের বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন পাওয়ার পর দরপত্র আহ্বান করা হয়। পরে তিনটি প্যাকেজে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর ও ২০১৮ সালের ২৭ জুন কার্যাদেশ দেওয়া হয়। চারলেন সড়ক উন্নয়নের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল কার্যাদেশ দেওয়ার দেড় বছরের মধ্যে। কিন্তু কার্যাদেশের মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও সংস্কারকাজ এখনো শুরুই হয়নি।
এ ব্যাপারে শহরের আরাম নগর এলাকার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চারলেন নির্মাণের নামে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে ফুটপাতসহ সড়কের দুই পাশে রাবিশ ও ইট খোয়া স্তুপ করে রাখা হয়েছে। এতে দিনের বেলায়ও শহরে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে। শহরের রাস্তা সংলগ্ন শাহজাহান ম্যানশন, মৌসুমী মার্কেট, কেন্দ্রীয় মসজিদ মার্কেট পৌর মার্কেট মুন মার্কেট, আনোয়ারা প¬াজা, ভাই ভাই মার্কেটসহ রাস্তার দুপাশের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, চারলেন প্রকল্পের কাজ শুরু করার নির্দেশনার পর শহরের দুই পাশের মার্কেটগুলো ভাঙা-গড়ার কাজ চলেছে প্রায় দুই বছর। এরপর আরো দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও সংস্কার কাজের কোনো অগ্রগতি নেই। ফুটপাতগুলো ইট-বালুর গুঁড়ায় ভরা। একটু অসতর্ক হলেই ঘটছে দুর্ঘটনা।
জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন চার লেন কাজের ড্রেনের নকশায় ভুল থাকার কারণে সড়কটির সংস্কার কাজ উদ্বোধনের পর বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে সংস্কার কাজের সংশোধন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এ জন্য সময় কিছুটা সময় লাগবে। নতুন নকশার অনুমোদন পেলে এর কাজ শুরু হবে।