শনিবার, ১২ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্পোর্টস ডেস্ক: এশিয়া কাপের শেষ চার আসরে তিনবারই ফাইনাল খেলা দলটিকে নিয়ে যে হইচই হওয়ার কথা ছিল তা কী হচ্ছে? আইসিসির প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে নিয়মিত অনুশীলন করছে দলটি। মাঠের সবুজ গালিচাতে প্রতিপক্ষের সঙ্গেও দেখা হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সমীহ আদায় করতে পারছে কী? সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় উত্তরটা, না।
কিন্তু ইতিহাস বিবেচনায় সমীহ না করা ছাড়া উপায় নেই। ২০১২, ২০১৬ এবং ২০১৮, এশিয়া কাপের তিন আসরেই ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। শিরোপা জেতেনি একবারও। সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির, মোস্তাফিজ, মিরাজরাই বাংলাদেশকে সবশেষ এশিয়া কাপের ফাইনালে তুলেছিল। কিন্তু এবার মাঠে নামার আগে দলে তো অস্থির পরিবেশ।
শেষ ১০ ম্যাচে জয় কেবল ২টি। দুবাই যাওয়ার এক সপ্তাহ আগে পরিবর্তন হয়েছে দলের কোচ। দলে এমন খেলোয়াড় নেওয়া হয়েছে যার ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্সও সন্তোষজনক নয়। সঙ্গে নতুন করে বাছাই করা হয়েছে অধিনায়ক। সব মিলিয়ে পুরো দলে নতুন শুরুর আহ্বান। কিন্তু এবারই শেষ শুরু নাকি তা বলতে পারে না কেউ।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের পায়ের নিচের জমিন এখনও শক্ত হয়নি। তবে কালেভাদ্রে এ ফরম্যাটে বাংলাদেশ অভাবনীয় পারফরম্যান্স করেছে যা মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে এবার এশিয়া কাপ হচ্ছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। এর আগে কেবল একবারই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এশিয়া কাপ হয়েছিল। ঘরের মাঠে সেবারও বাংলাদেশ চমকে দিয়ে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে খেলেছিল ফাইনাল। কিন্তু ফাইনালে ভারত বাধা অতিক্রম করতে পারেনি।
দলগত সামর্থ ও শক্তিমত্তায় বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। ৯৯ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা সাকিব যেদিন জ্বলে উঠে জিতে যায় বাংলাদেশ। মুশফিক, মাহমুদউল্লাহরা পরীক্ষিত ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তাদের ব্যাটে বাংলাদেশ জিতেছে অসংখ্য ম্যাচ। মোস্তাফিজের দুর্বোধ্য কাটার, স্লোয়ার যে কোনো ব্যাটসম্যানের খেলা কঠিন। সঙ্গে তাসকিন আহমেদের গতি বোলিংয়ে দিয়েছে নতুন প্রাণ।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা ওপেনিং। তামিম এই ফরম্যাট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পর বাংলাদেশ এখনও উদ্বোধনী জুটি পায়নি। লিটন সেই পতাকা উড়ালেও এবার ইনজুরির কারণে তার খেলা হচ্ছে না। ফলে উদ্বোধনী জুটি নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় বাংলাদেশ শিবির। স্কোয়াডে শেষ মুহূর্তে যোগ করা হয়েছে নাঈম শেখকে। শোনা যাচ্ছে তাকে এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামানো হবে।
দুবাই ও শারজাহতে খেলা অনুষ্ঠিত হবে। উইকেট গুলোতে স্পিন ধরবে বলার অপেক্ষা রাখে না। বাঁহাতি সাকিবের সঙ্গে রয়েছেন নাসুম আহমেদ। অফ স্পিনার মেহেদীর সঙ্গে রয়েছে মাহেদীও। তবে এবারের স্কোয়াডে ভরসার নাম পেস অলরাউন্ডার সাইফ উদ্দিন। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা এ ক্রিকেটারকে ঘিরে অধিনায়ক সাকিবের অনেক বড় প্রত্যাশা। ভালো করতে মুখিয়ে আছেন সাইফ উদ্দিনও।
শেষ কয়েক ম্যাচে বাংলাদেশের ফিল্ডিং বেশ ভুগিয়েছে। গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ের পাশাপাশি ক্যাচ মিস হয়েছে একাধিক। দেশ ছাড়ার আগে অধিনায়ক সাকিব ফিল্ডিংয়ে মনোযোগী হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। নতুন টি-টোয়েন্টি পরামর্শক শ্রীধরণ শ্রীরামও ফিল্ডিংয়ে উন্নতি চেয়েছেন। মাঠে আফিফ, মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকদের কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে বলার অপেক্ষা রাখে না।
ক্রিকেটে জয়ের জন্য নির্দিষ্ট মুহূর্ত, নির্দিষ্ট দিন নিজেদের করে নেওয়া জরুরী। যারা মাঠে ভুল কম করবে তারাই জিতবে। ভুল শুধরাতে পারলে এবারের এশিয়া কাপেও বাংলাদেশের পক্ষে ভালো কিছু করা সম্ভব। সাকিবদের আসল লড়াইটা নিজেদের সঙ্গে। এই লড়াইয়ে জিততে পারলে বাংলাদেশ জিতে যাবে ২২ গজেও।