বৃহস্পতিবার, ২৭শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্পোর্টস ডেস্ক: অনলাইন বেটিং সাইট বেটউইনারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেটউইনার নিউজের সঙ্গে সাকিব আল হাসানের চুক্তির ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার কিছু জানে না বিসিবি। যে কোনো পণ্যের দূত হওয়ার আগে বিসিবির কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার নিয়ম থাকলেও এক্ষেত্রে কোনো অনুমতি নেননি সাকিব। পুরো ব্যাপারটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।
বিসিবির যে কোনো স্পন্সরশিপ ও এক্সপ্রেশনস অব ইন্টারেস্ট আহবানের ক্ষেত্রে পরিষ্কার উল্লেখ থাকে, টোব্যাকো, অ্যালকোহল ও কোনো বেটিং সংস্থা এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না। ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত স্পন্সরশিপ, এন্ডোর্সমেন্ট বা কোনো পণ্যের দূত হওয়ার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।
তবে গত মঙ্গলবার সাকিবের অফিসিয়াল ফেইসবুক থেকে বেটউইনার নিউজের প্রচার করা হয়। সেখানে বেটউইনার নিউজের জার্সি পরা ছবি দিয়ে সাকিব লিখেছেন, “বেটউইনার নিউজের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক অংশীদারীত্বে আমি গর্বিত।” বেটউইনার নিউজ যদিও একটি অনলাইন পোর্টাল, তবে তারা অনলাইন বেটিং সাইটেরই অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। বেটউইনার নিউজের সাইটে গিয়ে খুব বেশি সংবাদ বা সাম্প্রতিক হালনাগাদ খবর বেশি কিছু দেখা যায়নি।
বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবন্ধ সব ক্রিকেটারকেই যে কোনো পণ্যের দূত হওয়ার আগে বোর্ডকে অবহিত করতে হয়। এমনকি চুক্তিপত্রও বোর্ডে জমা দিতে হয়। কিন্তু সাকিব সেসব কিছু করেননি বলেই জানালেন নাজমুল হাসান। বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি বললেন, খবরটি জেনে তিনি নিজেও বিস্মিত হয়েছেন।
“আমাদের অনুমতি নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, আমরা অনুমতি দেবই না। দিস ইজ নম্বর ওয়ান, বেটিং সংক্রান্ত কিছু হয়ে থাকলে অনুমতি দেবই না। এটার মানে হচ্ছে, আমাদের কাছে সে অনুমতি চায়নি। দুই নম্বর ব্যাপার হচ্ছে, আদৌ চুক্তি করেছে কিনা, এটাও তো আমার জানতে হবে।”
“আজকের মিটিংয়ে এই কথাটা উঠেছিল। আমরা বলেছি যে, এটা তো কোনোভাবেই সম্ভব নয়, এটা কীভাবে হয়! তাড়াতাড়ি এটা বের করো যে এটা আসলেই হয়েছে কিনা। হলে অনতিবিলম্বে জানতে চাও। নোটিশ সার্ভ করা হবে, এটা কীভাবে সম্ভব। এটা তো বোর্ড কোনোভাবেই অ্যালাউ করবে না। বেটিংয়ের সঙ্গে এটার কোনোরকম, কোনোকিছুর সংযুক্তি থাকে, বোর্ড এটা কখনোই অ্যালাউ করবে না। এটা অলরেডি আমরা বলেছি।”
সাকিবের ফেইসবুক পাতায় এটি প্রচার করার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা হয়ে গেলেও তার সঙ্গে এখনও কথা বলেনি বিসিবি। দেশের শীর্ষ এই ক্রিকেটার আদৌ চুক্তি করেছেন কিনা, এটা নিয়েও সংশয় কাজ করছে বিসিবি কর্তাদের। খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হবে বলে জানালেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থার প্রধান।
“আগে জিনিসটা জেনে নেই। ওখানটায় নাও হতে পারে, এরকম একটা কথা এসেছে বোর্ডে। নাও হতে পারে, তাহলে তো একটা সিদ্ধান্ত আমি নিতে পারছি না। তার পরও বলে দিয়েছি দ্রুত জানতে। তবে বোর্ডের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।” “এটা তো শুধু ক্রিকেট বোর্ড নয়, বাংলাদেশের আইনেও অনুমতি নেই। আমাদের দেশের আইন এটা পারমিট করে না। এটা তো অবশ্যই সিরিয়াস ইস্যু। এজন্যই একটা ফেইসবুক বা পোস্টিংয়ের ওপর নির্ভর না করে আমাদের তদন্ত করতে হবে। খুঁজে দেখতে হবে আসলে কী হয়েছে। এটা সত্যি হয়ে থাকলে বোর্ডের যা যা করার, অবশ্যই বোর্ড করবে।”
বাংলাদেশ দলের চলতি জিম্বাবুয়ে সফর থেকে ছুটি নিয়েছেন সাকিব। তিনি এখন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে।