সোমবার, ১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
আদমদীঘি প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘিতে রক্তদহ বিলের উপড় নির্মিত বেইলি ব্রিজের পাটাতন (লোহার পাত) খুলে যাওয়ায় বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ছোট যানবাহনগুলো চলছে ঝুঁকি নিয়ে। শনিবার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্থানিয়রা ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের উপর গাছের ডাল রেখে যানবাহন চালকদের বিপদ সংকেত বুঝানোর চেষ্টা করেছেন। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা বড় যানবহনগুলো ফিরে যাচ্ছে। এখানে স্থায়ীভাবে সিসি ঢালাই ব্রিজ নির্মানের দাবী এলাকাবাসীর। এদিকে সড়ক বিভাগ বলছে ‘বেইলী ব্রিজের পরিবর্তে তারা শিগরিই ঢালাই সেতু নির্মানের জন্য দরপত্র আহ্বান করবেন।’
জানা যায়, উপজেলার কদমা মৎস্য খামারের নিকট ঐতিহাসিক রক্তদহ বিলের মূল খালের ওপড় ২০০৬ সালে সড়ক ও জনপদ বিভাগের তত্বাবধানে ৬০ দশমিক ৯৬ মিটার দৈর্ঘ্য স্ট্রিল ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। এতে বিলপাড়ের ১০ গ্রামের মানুষের প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ কমে যায়। কৃষিপণ্য ও শষ্য পরিবহন করা ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সহজ হয়। ফলে বিলপাড়ের কদমা, করজবাড়ি, রামপুরা ও ময়ূর কাশিমালাসহ ৮-১০ গ্রামের মানুষের জীবনযত্রার চিত্র বদলে যায়।
কিন্তু উদ্বোধনের পর ১৬ বছর অতিবাহিত হলেও ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজটিতে উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কার কাজ করেননি কর্তৃপক্ষ। বুধবার দুপুরের দিকে বেইলি ব্রিজের পাটাতন (লোহার পাত) খুলে যাওয়ায় বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে জীবিকার ত্যাগিদে ছোট যানবাহন যেমন- সিএনজি ও চার্জার চালিত অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
উপজেলার দমদমা গ্রামের অটোরিকশা চালক রফিকুল ইসলাম চাঁন ও করজবাড়ী গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, গাড়ি নিয়ে ব্রিজে ওঠার পর পুরো ব্রিজের পাটাতন নড়ে ওঠে। প্রচন্ড শব্দ হয়। যাত্রী নিয়ে ভয়ে ভয়ে ব্রিজ পারাপার হতে হয়। আর এখন যে অবস্থা তাতে যাত্রী নিয়ে তো দূরের কথা ফাঁকা গাড়ী নিয়েও পার হতে ভয় লাগে।
আদমদীঘি সদর ইউপির সদস্য ও করজবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বলেন, পৌর শহর ও জংশন থাকায় উপজেলার সান্তাহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা। ব্রীজটি নির্মানের আগে সান্তাহার শহরে পৌঁছাতে আদমদীঘি হয়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হতো। বর্তমানে ব্রীজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পরও জীবন-জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়েই এর ওপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। দ্রুত ব্রীজটি সংস্কার করা না হলে যেকোনো মুহূর্তে পাটাতন ভেঙ্গে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এমতাবস্থায় আমাদের প্রাণের দাবী এখানে বেইলী ব্রীজের পরিবর্তে ঢালাই ব্রীজ নির্মাণের।
বগুড়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আমানুল্লাহ আমান জানান, সেতুর পরিস্থিতি দেখে আমারা মন্ত্রনালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। সে অনুযায়ী অনুমোদন হয়েছে। এই সেতুটির পরিবর্তে এখানে ঢালাই সেতু নির্মান করা হবে। এখন দরপত্র আহবান করে ঠিকাদারের মাধ্যমে বেইলী ব্রিজের স্থলে শিগগিরই ঢালাই সেতু নির্মাণ করা হবে।