বুধবার, ৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁয় বিরোধপূর্ণ একটি জমি নিয়ে হাইকোর্টের রুল জারি করেছেন। এছাড়া ওই জমিতে নিম্ন আদালতের স্থিতিবস্থা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই জমি যে অবস্থায় রয়েছে তেমনটিই থাকবে, নির্মাণ করা যাবে না কোনো স্থাপনা। আদালতের এমন নির্দেশনা না মেনে বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে ভূমি অফিস নির্মাণ করছে নওগাঁ সদর উপজেলা প্রশাসন।
এ নির্মাণকাজ বন্ধের দাবি জানিয়ে, আজ শুক্রবার সকালে নওগাঁ প্যারিমোহন সাধারণ গ্রন্থাগার লাইব্রেরী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই জমির দাবিদার আকবর আলী নামে এক ব্যক্তি। আকবর আলী বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার সান্তাহার পৌরসভার বাসিন্দা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আকবর আলী বলেন, ১৯৮৭ সালে তিনি নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের খাট্টা শাহাপুর মৌজায় সোয়া ১৭ শতক জায়গা ক্রয় করেন। যার দাগ নম্বর সাবেক ৯৮৭/৯৮৮, হাল ৭৯৬/৭৯৭। ওই জমিটি নয়নজলী (চৌবাচ্চা) হিসেবে খতিয়ানভুক্ত। জমিটি ক্রয়ের পর সেখানে বালু দ্বারা ভরাট করে স মিল (করাত কল) করে ৩৫ বছর যাবৎ ব্যবসা করে আসতেছিলেন। কিন্তু আমার সোয়া ১৭ শতক জমিসহ খাট্টা শাহাপুর মৌজার ৩৫ শতক জমি সরকারি গেজেটে ভুলক্রমে পরিত্যক্ত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।
পরবর্তীতে সম্পত্তিটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর দলিল সংশোধন ও ওই জমির ওপর স্থিতিবস্থা চেয়ে ২০০৩ সালে নওগাঁ যুগ্ন জেলা জজ আদালতে মামলা করেন আকবর আলী। আদালত সেই মামলার শুনানি নিয়ে ২০০৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই জমির ওপর স্থিতিবস্থা আদেশ জারি করেন। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে।
লিখিত আরও বলা হয়, সম্প্রতি নওগাঁ সদর উপজেলা প্রশাসন ওই জমিতে ভূমি অফিস নির্মাণের তোড়জোড় শুরু করলে আকবর আলী হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন।
আদালত ওই রিটের শুনানি নিয়ে চলতি বছরের ৯ মার্চ বিবদমান জমিটি খাস খতিয়ানভুক্ত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। চার সপ্তাহের মধ্যে নওগাঁ জেলা প্রশাসক, নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে আদেশ দেন। কিন্তু বিবাদীরা চার সপ্তাহ পার হলেও সেই রুলের জবাব না দিয়ে আদালতের নিদের্শ উপেক্ষা করে বিবদমান জমিতে গত ১৮ জুলাই থেকে বোয়ালিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণের কাজ শুরু করেন।
আকবর আলী বলেন, ‘এই নির্মাণকাজের ফলে আমি অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হব। আদালতে বিচারাধীন সম্পত্তিতে কিভাবে একটি সরকারি অফিস নির্মাণ করা হয় তা আমার বোধগম্য নয়। এটা সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার ও দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী এবং আদালতের রায়ের অবমাননার শামিল। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের সর্বোচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিবদমান জমিতে নির্মাণকাজ বন্ধ ও এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক সুবিচার কামনা করছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বলেন, ‘ওই জমিটি অনেক আগেই খাস খতিয়ানভুক্ত করা হয়েছে। ওই জমির দাবিদার যে ব্যক্তি রয়েছেন তাঁকে কাগজপত্র নিয়ে একাধিকবার ভূমি অফিসে আসতে বলা হয়েছিল কিন্তু তিনি আসেননি। এছাড়া হাইকোর্টে যে রুল জারি হয়েছে সেটার জবাব দেওয়া হয়েছে। ওই জমিটি নিষ্কন্টক। যথাযথ আইন মেনেই ভূমি অফিস করা হচ্ছে।’
সানশাইন / শামি