রবিবার, ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ১৯ জুন রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নৌকার বিরোধীতা কারিদের আবারও দলীয় পদে বহাল রেখে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এমপিসহ নেতাদের বিরুদ্ধে।
নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করে হারানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পবার পারিলা ইউনিয়নের মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গত দুই বারের নৌকার মনোনিত প্রার্থী ফাহিমা খাতুন। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বেলা ১১ টার দিকে রাজশাহী সাংবাদকি ইউনিয়ন কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, আমি ২০১৬ সালে ও ২০২১ সালে পারিলা ইউনিয়ন নির্বাচনে আমি নৌকার মনোনিত প্রার্থী হয়ে ভোট করেছিলাম। দেশনেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে
সম্মানিত করেছে। কিন্তু সেই সময় গুলোতে পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহরাব আলী ও সাধারণ সম্পাদক নবীবুর রহমানসহ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা বর্তমান সংসদ সদস্য গোপনে মিটিং করে আমাকে পরাজিত করে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান সাঈদ আলীকে বিজয়ী করার সিদ্ধান্ত নেয়।
তারা সেই সময়ে সরাসরি নৌকার বিরোধীতা করে এমপি আয়েন উদ্দিনসহ বেশ কিছু নেতা আমাকে পরাজিত করে। ফলে আমি এসব নেতাদের কারণে বিজয়ী হতে পারিনি। যা দল, নৌকা ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাথে সরাসরি বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে । এমন বিশ্বাস ঘাতকতা ক্ষমার অযোগ্য।
সেই সময়ে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে লিখিত অভিযোগ দিলে নেতারা ভোটারদের উৎসাহিত করতে মাঠে আসে এবং সোহরাব আলীর বাড়ীতে দেখা করে। তারা সোহরাব আলীকে নৌকার পক্ষে কাজ করার অনুরোধ জানালেও তিনি নৌকার পক্ষে কাজ করবে না বলে সরাসরি জানিয়ে দেন। তার এমন কথায় নেতৃবৃন্দ তার বিরুদ্ধে সংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালে তিনি পাল্টা হুমকি দেন যা ইচ্ছে করতে পারেন। তাদের এমন কর্মকান্ডের কারনেই বারবার আমি নৌকা প্রতীক পেয়েও পরাজিত হচ্ছি।
নেতাদের এমন অসদাচরণ ও কর্মকান্ড বহাল রাখলেও আমি সময় সময় আওয়ামী লীগের সকল কর্মকান্ড পালন করে আসছি। কোন কাজে গাফলতি বা পেছনে সরে যায়নি। প্রকৃত আওয়ামী লীগ কর্মী সাধারণ মানুষের সাথে যোগাযোগ ঠিক করে দলের জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন গত ৫ মার্চ ২০২২ তারিখে পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সোহরাব আলী সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছিলেন কিন্তু নৌকার প্রার্থীর বিরোধীতা করা সহ বিভিন্নধরনের অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের সাথে জোড়িত থাকার অভিযোগে তার সে পার্থীতা বাতিল করে দেয়া হয়। সেই সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির অন্যতম সদস্য রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সুযোগ্য মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন উপস্থিত ছিলেন এবং তার বক্তব্যে তিনি হুশিয়ারী দিয়ে বলেছিলেন “বারবার নৌকার বিরোধীতা করবেন আবার আওয়ামী লীগের পদের প্রত্যাশা করবেন সেটা হতে দেয়া যাবেনা আর”। তাই আমি আশা করি এই এই কুলাঙ্গার সোহরাব আলী আর কোনদিন আওয়ামীলীগের দলীয় পদে জেন না আসতে পারে।
তিনি এই সময় সোহরাব আলীর বিভিন্ন অপকর্মের যে খবর ইতিপূর্বে দেশের বিভিন্ন জাতিয় ও স্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছিল তার কপিও সরবারহ করেন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, আগামী ১৯ জুন দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনে আমি সভাপতি প্রার্থী হিসেবে আছি। তবে আমরা জানতে পারলাম যে আমাদের এমপি আয়েন উদ্দিন আবারও নৌকার বিরোধীতাকারি সোহরাব আলী ও নবীবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করার জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এতে করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও ভোটাররা হতাশ ও ক্ষুদ্ধ।
তিনি এসবের অবসান চেয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তা ক্ষতিয়ে দেখার অনুরোধ জানান এবং প্রকৃত তৃণমূল আওয়ামী লীগের কান্ডারীদের মূল্যায়নের আবেদন জানান। পাশাপাশি তিনি আগামী ১৯ জুনের পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানান।
এই বিষয়ে পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নওহাটা পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, আমি পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নতুন দায়িত্ব নিয়েছি, তাই আমার কাছে পূর্বের কোন অভিযোগের কাগজ নেই। যদি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোন অভিযোগ পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহরাব আলী ও সাধারণ সম্পাদক নবীবুর রহমানের বিরুদ্ধে থাকে তাহলে দল অবশ্যই ব্যবস্থা নিবে। তিনি আরো বলেন, আগামী ১৯ জুন পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, এই সম্মেলনে কে সভাপতি আর কে সাধারণ সম্পাদক হবে তা নির্ধারণ করবেন ওই ইউনিয়নের কাউন্সিলরেরা। প্রকাশ্যে ভোট অথবা সর্ব সম্মতিক্রমে সমঝোতার ভিত্তিতে । কারো একক সিদ্ধান্তে নয়।
এই বিষয়ে জানতে রাজশাহীর পবা-মোহনপুরের এমপি আয়েন উদ্দিনের মোবাইলে কয়েক বার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সানশাইন / শামি