শনিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্পোর্টস ডেস্ক: নেতৃত্বে সাকিব আল হাসান না থাকলেও দলের ভেতর তাকে অনুসরণ করতেন অনেকে। জেমি সিডন্সের তাই কোনো সংশয়ই নেই যে, আনুষ্ঠানিকভাবে নেতা হয়ে দলকে দারুণভাবে সামলাবেন সাকিব। পাশাপাশি নির্ভার মুমিনুল হকের জন্য ব্যাটিংয়ে ছন্দে ফেরা এখন সহজ হবে বলে মনে করে বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ।
বাংলাদেশ দলে সাকিব-সিডন্সের জুটি এবারই প্রথম নয়। অধিনায়ক সাকিবের প্রথম অধ্যায়ের শুরুটা বাংলাদেশের প্রধান কোচ সিডন্স থাকার সময়। ২০০৯ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সাকিব গিয়েছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজার সহ-অধিনায়ক হিসেবে। কিন্তু প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনেই মাশরাফি চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায় অধিনায়ক হন সাকিব।
ওই টেস্ট তো বটেই, পরের টেস্ট জিতে ওয়ানডে সিরিজেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করায় নেতৃত্ব দেন সেই সময়ের ২২ বছর বয়সী সাকিব। বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বে ক্যারিবিয়ানদের মূল দল অবশ্য খেলেনি সেবার। ২০১১ বিশ্বকাপের পর সিডন্সের সঙ্গে আর চুক্তি নবায়ন করেনি বিসিবি। ওই বছরের অগাস্টে জিম্বাবুয়ে সফরের পর সাকিবকেও নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয় বোর্ড।
সাকিবের প্রথম দফার নেতৃত্ব ছিল ভালো-মন্দের মিশেল, শেষটা ছির বিতর্কিত। ২০১৮ সালে পাওয়া দ্বিতীয় দফার নেতৃত্ব শেষ হয় আইসিসির নিষেধাজ্ঞায়। এবার মুমিনুল হক নেতৃত্ব ছাড়তে চাওয়ার পর সাকিবকেই তৃতীয় দফায় নেতৃত্বে ফিরিয়েছে বিসিবি। কাকতালীয়ভাবে, সেই সিডন্সও ফিরেছেন বাংলাদেশ দলে। ভূমিকা বদলে এখন তিনি ব্যাটিং কোচ।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শনিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সিডন্স বললেন, দল ও মুমিনুল, সব পক্ষের জন্যই ভালো হয়েছে সাকিবের নেতৃত্বে ফেরা। “আমার মতে এটির দুটি ইতিবাচক দিক আছে। সাকিব খুব ভালো অধিনায়ক এবং খেলাটা নিয়ে খুব ভালো বোধ ওর। একইসঙ্গে সে ধারাবাহিক পারফরমারও। অধিনায়ক হিসেবে সে দারুণ করবে। সবাই তাকে অনুসরণ করে, কাজেই দারুণ এক নেতা সে।”
“আরেকটি ভালো ব্যাপার হলো, মুমিনুল এখন তার ব্যাটিংয়ে নজর দিতে পারবে। সে ব্যাটিং নিয়ে একটু ভুগছিল। এখন ব্যাটিংয়ে শতভাগ মনোযোগ দিতে পারবে। আমাদের জন্য ওর পারফর্ম করা প্রয়োজন। আমরা জানি সে ভালো খেলোয়াড়। তাকে সেভাবে ফিরে পাওয়া প্রয়োজন আমাদের। নেতৃত্বের ভার সরে যাওয়া তার জন্য ভালো হয়েছে। এখন সে মুক্ত হয়ে খেলতে পারবে।”
সিডন্স দায়িত্ব নেওয়ার পর দুটি সিরিজে দেখলেন মুমিনুলের নেতৃত্ব। সাকিবকে তো তার জানাই। দুজনের তুলনা করতে গিয়েও সিডন্স বললেন সতীর্থদের আস্থার কথা। “অধিনায়ক হিসেবে আত্মবিশ্বাস (যেখানে দুজনের পার্থক্য)ৃ সাকিব আগেও নেতৃত্ব দিয়েছে। অধিনায়ক হিসেবে দলের আস্থা আছে তার (সাকিব) ওপর, ছেলেরা তার পাশে আছে। এমন নয় যে মুমিনুলের এসব ছিল না। তবে ছেলেদের দেখলে মনে হয়, সাকিব যা করে, তারা তা বেশি অনুসরণ করে। তার দায়িত্বে ফেরাটা তাই দারুণ হবে। মুমিনুল এখন নিজের খেলাটা খেলতে পারে।”
গত কয়েক বছরে বেশি কিছু টেস্টেই সাকিবকে পায়নি বাংলাদেশ। তবে অধিনায়ক হওয়ায় এখন আর সাকিবের দূরে থাকার সুযোগ দেখছেন না সিডন্স। “সে যখন অধিনায়ক, তাকে তো খেলতেই হবে। না খেললে মনে হয় অধিনায়কত্ব করা একটু কঠিন! আমার যতটা মনে হয়, আবার নেতৃত্ব দেওয়ার ব্যাপারটিতে সে নিজেও রোমাঞ্চিত। সাকিবের নেতৃত্বে যে দারুণ দিকটি বেশ কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছিল না, সেটি এবার দেখা যাবে বলে ধারণা আমার।”