রবিবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রাজশাহীর বাগমারায় দিন-রাত ২৪ ঘন্টায় চলছে ফসলি জমিতে পুকুর খননের কাজ। এই উপজেলা কৃষি নির্ভরশীল হওয়ায় এসব অবৈধ পুকুর খননের জন্য বিপাকে পড়ছেন এলাকার কৃষক ও খেটে খাওয়া দিনমজুরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাগমারা উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের তেলিপুকুর বিলে ২০ বিঘা, কাচারীকোয়ালপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের পাশের বিলে ২০ বিঘা, শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বাইগাছা ইটভাটার পূর্ব দিকে বিলে ৩০ বিঘা, শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের মচমইল ডিগ্রী কলেজের শ্বশান ঘাটের পাশের বিলে ২৫ বিঘা, ঝিকরা ইউনিয়নের ঝাড়গ্রাম বিলে ২৫ বিঘা, ভবানীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের পাশের বিলে চলছে ৩০ বিঘার তিন ফসলি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের কাজ।
জানা গেছে, বাগমারায় অবৈধভাবে পুকুর খনন বন্ধে উচ্চ আদেশ প্রতিপালনে প্রশাসনের ভূমিকা নিরব। বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন মৌজায় আবাদি জমির প্রকৃত শ্রেণী পরিবর্তন করে উচ্চ আদালতের আদেশ কে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অবাধে পুকুর খনন চলছে। যেমনটি তোয়াক্কা করা হচ্ছেনা সরকারের জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতিমালা ও মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রীট পিটিশন নং ৪৩৫৩/ ২০১৭ এর গত ৩/৪ /২০১৭ ইং তারিখের প্রদত্ত আদেশ।
উক্ত আদেশে সুস্পষ্টভাবে জেলা প্রশাসক রাজশাহী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাজশাহী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি ) বাগমারকে উপজেলায় কৃষি জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন বন্ধে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আদালতের উক্ত আদেশ বর্তমানে যথারীতি বলবৎ ও কার্যকর রয়েছে ।তথাপিও প্রশাসনের নাকের ডগায় দিনের-পর-দিন বেপরোয়া ভাবে ধ্বংস হচ্ছে শত শত দীঘা আবাদি কৃষিজমি।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে অভিযোগ করলেও তাতে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। প্রশাসনের ইচ্ছা ও মর্জির উপর ২/১ টি জায়গায় নাম মাত্র ব্যবস্থা নিলেও অদৃশ্য কারণে তা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় না। এইভাবে আবাদি কৃষিজমি নষ্ট করে ধ্বংস করা হচ্ছে প্রাকৃতিক জলাধার যেমন খাল-বিল এবং জলাভূমি।
এছাড়াও উক্ত স্থানের খননের মাটি বাণিজ্যিক ভাবে বিভিন্ন ইটভাটায় চড়া দামে বিক্রয়ের জন্য খনন কারীরা মহাসড়ক, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন রাস্তা ঘাট ব্যবহার করার কারণে এ সকল রাস্তাঘাটগুলো বর্তমানে জনসাধারণের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাছাড়াও এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি ,খাদ্য সংকটের হুমকি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের নানা রকম সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এবিষয়ে জানতে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারুক সুফিয়ানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেন না। তবে বাগমারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমাদুল হাসানের কাছ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি রাজশাহীতে আছি এসব পুকুর খননের বিষয়ে আপনি একটু ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলেন।