শনিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
মান্দা প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় ধারে নেওয়া ৫০০ টাকার জন্য খুনের শিকার হন মঞ্জুরুল ইসলাম রিপন (২০) নামে এক যুবক। তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে ঘটনার দুই মাস সাতদিন পর এ খুনের রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় নাঈম ইসলাম (১৯) নামে এক যুবককে। গ্রেপ্তারকৃত নাঈম ইসলাম উপজেলার দেলুয়াবাড়ি হঠাৎপাড়া এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে।
গতকাল সোমবার বিকেলে নাঈম ইসলামকে আদালতে নেওয়া হয়। এসময় খুনের সঙ্গে নিজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দি রেকর্ড করেন নওগাঁ আমলী আদালত-২ (মান্দা) এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাজুল ইসলাম।
নিহত রিপন উপজেলার নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের দোডাঙ্গী গ্রামের আনোয়ার হোসেন পাইলটের ছেলে। পেশায় তিনি কৃষিশ্রমিক ছিলেন।
জবানবন্দির উদ্ধৃতি দিয়ে মান্দা থানার ওসি শাহিনুর রহমান বলেন, গত ২৩ মার্চ দোডাঙ্গী গ্রামে ইসলামি জালসার আয়োজন করা হয়। এদিন সন্ধ্যার দিকে গ্রেপ্তারকৃত নাঈম ইসলাম তার বন্ধু সুমনের সঙ্গে জালসা শোনার জন্য সেখানে যায়। রাত ১০ টার দিকে সিগারেট খাওয়ার জন্য জালসাবাড়ির পাশে বিলের মধ্যে যায় নাঈম, সুমন ও রিপন।
ওসি আরও বলেন, নিহত রিপন বন্ধু সুমনের কাছ থেকে ৫০০ টাকা ধার নেন। দীর্ঘদিন পরও তা পরিশোধ করেননি। বিলে সিগারেট খাওয়ার সময় সুমন তার বন্ধু রিপনের কাছে পাওনা টাকা দাবি করে।
এ নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে নাঈম গলা টিপে ধরলে রিপন পানি খাওয়ার আকুতি জানিয়ে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে নাঈম ও সুমন পাশের ধানখেতের কাদায় মুখ চেপে ধরে রিপনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এ সময় রিপনের মোবাইলফোন নিয়ে তারা ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে।
ওসি শাহিনুর রহমান আরও বলেন, গত ২৮ মার্চ সুমনের সঙ্গে নাঈমের দেখা হলে নিহত রিপনের মোবাইলফোনটি বিক্রির জন্য তাকে দিয়ে ঢাকায় চলে যায়। পরে নিহত রিপনের মোবাইলটি মোস্তাকিন নামে এক যুবকের কাছে ২৮০০ টাকায় বিক্রি করে নাঈম।
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে রিপনের মোবাইলফোন উদ্ধারসহ মোস্তাকিনকে গ্রেপ্তার করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক জান্নাতুল ফেরদৌস। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে নাঈমকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত নাঈম এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ মার্চ রাত ৮টার দিকে জালসা শোনার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে নিরুদ্দেশ হন মঞ্জুরুল ইসলাম রিপন। পরদিন সকালে মাঠে কাজ করতে গিয়ে ডুবরির বিলের একটি ধানখেতে তাঁর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন শ্রমিকেরা। পরে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।