শুক্রবার, ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সানশাইন ডেস্ক: মাঝে ওমিক্রনের দাপটে রোগী বাড়লেও সংক্রমণ কমার ধারায় দেশে দিনে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা আবার দুই হাজারের নিচে নেমে এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯৮৭ রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পাশাপাশি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হারও নেমেছে ৮ শতাংশের নিচে।
এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৯ হাজার ২৫২ জন। দনে এর চেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ ৯ জানুয়ারি, সেদিন ১ হাজার ৪৯১ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। রপর ১০ জানুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই হাজার, ১৩ জানুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে যায়। বাড়তে বাড়তে ২৫ জানুয়ারি শনাক্তের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়েছিল, যা মহামারীতে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যার কাছাকাছি।
দিনে শনাক্তের হার ৮ শতাংশের নিচে ছিল গত ৯ জানুয়ারি। ১২ জানুয়ারি তা ১০ শতাংশ ছাড়ায়। ২৮ জানুয়ারি তা পৌঁছায় ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশের রেকর্ড উচ্চতায়। তবে এরপর সংক্রমণ দিন দিনই কমছে। এই কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পাশাপাশি ২১ ফেব্রুয়ারির পর নানা বিধি-নিষেধ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোববারের বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৩৩ হাজার ২৯১ জন। আরও ২১ জনের মৃত্যুতে মহামারীতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৮ হাজার ৯৬৫। সরকারি হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সেরে উঠেছেন ৯ হাজার ২৫২ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত ১৭ লাখ ৫৪ হাজার ৫৮৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
সে হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭৪২ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। তবে উপসর্গবিহীন রোগীরা এই হিসাবে আসেনি। বাংলাদেশে মহামারীর শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশর ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে।
এরপর আসে আরেক নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, নতুন বছরের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকে সংক্রমণ। এক পর্যায়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে, ৪ ফেব্রুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে আসে ১০ হাজারের নিচে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তা পাঁচ হাজারের নিচে নামে। মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।
গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ১ হাজার ৩৬৫ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৬৮ শতাংশের বেশি। যে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ এবং সাতজন নারী। তাদের মধ্যে ১২ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের চারজন,রাজশাহী বিভাগের একজন, বরিশাল বিভাগের একজন, সিলেট বিভাগের একজন এবং রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন দুইজন।
তাদের মধ্যে ১৭ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, একজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, একজনের বয়স ৪১ থেকে ৫১ থেকে বছর, একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা। বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৮ লাখ ৮২ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪২ কোটি ৩৩ লাখের বেশি।