বুধবার, ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সানশাইন ডেস্ক : ভালবাসার মহা অনুভূতি জাগানিয়া ১৪ ফেব্রুয়ারি আজ। আজ ভ্যালেনটাইন ডে। যারা চুপি চুপি এতদিন কেবল ভালবেসে গেছেন, আজ বলি, মুখ খুলুন। ভালবাসার মানুষটিকে নির্র্দ্বিধায় জানিয়ে দিন, তার জন্য হৃদয় পুড়ছে আপনার। যখন তখন চোখ জল। কারণে তাকে চাই। অকারণেও। প্রিয় গায়ক কবীর সুমন যেমনটি গেয়েছিলেন, ‘প্রথমত আমি তোমাকে চাই/দ্বিতীয়ত আমি তোমাকে চাই/তৃতীয়ত আমি তোমাকে চাই/শেষ পর্যন্ত তোমাকে চাই।’ চাই যদি আর দেরি কেন? ‘ভালবেসে, সখী, নিভৃতে যতনে/আমার নামটি লিখো- তোমার/মনের মন্দিরে।’ লিখে ফেলুন প্রিয় নাম। তার হাতটি ধরুন। ধরতে দিন। বলুন, ‘নিরাশ্রয় পাঁচটি আঙ্গুল তুমি নির্দ্বিধায়/অলঙ্কার করে নাও, এ আঙ্গুল ছলনা জানে না।’ এভাবে জমে ওঠুক ভালবাসাবাসি। ভালবাসার পায়ের কাছে ঘৃণা বিদ্বেষ সঙ্কীর্ণতার তরবারি রেখে আত্মসমর্পণ করুন। খুশি মনে পরাজয় মেনে নিন। এই সমাজ পৃথিবী পরিশুদ্ধ হোক আপনাদের প্রেমে।
হ্যাঁ, প্রতিবারের মতো এ কথাগুলোই যেন বলতে এসেছে বিশ^ ভালবাসা দিবস। পাশ্চাত্য থেকে আসা। তবে ভালবাসার তো আর দেশ কাল হয় না। সবখানেই এর সমান আবেদন। তাই বিশে^র অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও উদ্যাপিত হয়। প্রথম দিকে একটু ফিসফিস ছিল। এখন বেশ ঘটা করেই উদ্যাপন করতে দেখা যায়। আজও দিবসটি উদ্যাপিত হবে। ভালবাসার শক্তিতে সুন্দর সমাজ প্রেমময় পৃথিবী গড়ার শপথ নেবে মানুষ। বিশেষ করে তরুণ তরুণীদের কাছে দিবসটি স্বতন্ত্র আবেদনের। আবেগের। এই আবেগ নানা ভাবে প্রকাশিত হবে।
কবিগুরু বলেছিলেন, তোমার গোপন কথাটি, সখী রেখো না মনে।/শুধু আমায়, বোলো আমায় গোপনে…। হৃদয়ের একান্ত গোপন কথাটি আজ প্রকাশ করবেন প্রেমিক প্রেমিকারা। পাশ্চাত্যের স্টাইলে প্রিয়জনের সামনে হাঁটু গেড়ে ঠিক বসে পড়বেন। প্রস্তাবাকারে বলবেন, উইল ইউ বি মাই ভ্যালেনটাইন? প্রেমিক-প্রেমিকারা পরস্পরের মধ্যে বিভিন্ন উপহার আদান প্রদান করবেন। মোবাইল ফোন, এসএমএস, ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে পাঠানো হবে ভালবাসার খুদে বার্তা। প্রেমিকের হাত হয়ে প্রেমিকার সুবিন্যস্ত খোঁপায় উঠবে রক্ত গোলাপ ফুল।
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন অনুভূতিগুলোর একটি নিঃসন্দেহে ভালবাসা। মানুষ দিন শেষে ভালবাসার কাছেই ফিরেছে। ফিরতে হয়েছে। রজকিনীর প্রেমে পাগল চ-ীদাস টানা বারো বছর বড়শি পেতে পুকুর পাড়ে বসেছিলেন। প্রেমের মাছ তার পর তুলতে পেরেছিলেন তিনি। একই নেশায় বুঁদ হয়ে হাসন রাজা গেয়েছিলেন, ‘নিশা লাগিলরে, বাঁকা দুই নয়নে নিশা লাগিলরে।’ ভাটি বাংলার এই লোককবির নিশা আর কাটেনি কোন দিন। বরং অনলে পুড়েছে ভেতর বাহির। কাউকে বলে তা বোঝাবার নয়। সুনামগঞ্জের অসহায় প্রেমিক কবি তাই সুর তোলেন: ধাক্ ধাক্ কইরা উঠল আগুন ধৈল আমার প্রাণে/সুরমা নদীর জল দিলে নিভে না সে কেনে?’ কে দেবে উত্তর? অন্যদিকে, রাধারমণ গাইছেন, ‘আমি রব না রব না গৃহে বন্ধু বিনে প্রাণ বাঁচে না।’ প্রায় একই উচ্চারণ শাহ আবদুল করিমের। তার বলাটি এরকম: আমি ফুল বন্ধু ফুলের ভ্রমরা/কেমনে ভুলিব আমি বাঁচি না তারে ছাড়া…। মনের মানুষটি ছাড়া সত্যি বাঁচা দায়। ভালবাসাহীন জীবন বিবর্ণ। আর তাই যত আকুলি বিকুলি সব ভালবাসার জন্য।