শুক্রবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ঢাকা অফিস: হাত পাখার বাতাসে’-খ্যাত গায়ক আকবরকে দেখলে যে কেউ-ই চমকে উঠবে। জরুরি প্রয়োজনে ইদানীং যে কবার তিনি রাস্তায় বের হয়েছেন, পরিচিতরা তার হাল দেখে হয়েছেন বিস্মিত, ভারাক্রান্ত।
কারণ- কারো সহযোগিতা ছাড়া তিনি যেমন উঠতে-বসতে পারছেন না, তেমনি ক্র্যাচ ছাড়া এক কদমও নড়তে পারেন না। বিগত কিছুদিন যাবত এই অবস্থা আকবরের। ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে গান গেয়ে পরিচিতি লাভ করা এই শিল্পী বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ। গিয়েছিলেন ভারতেরও। তবে এবার নতুন সমস্যা হয়েছে তার হাড়ে। পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডের শেষ হাড়ে (ককসিডাইনিয়া) আঘাত পান তিনি। একই সঙ্গে কিছু নার্ভ সেখানে ঢুকে যাওয়ায় পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারছেন না। চলছেন ক্র্যাচে ভর দিয়ে। তিনি জানান, পড়ে যাওয়ার পর থেকেই কোমরে ভর দিতে পারেন না। দাঁড়াতে পারেন না ঠিকমতো। এই গায়ক বলেন, ‘বিপদ আমাকে ছাড়ছেই না। আমি চলতে পারি না। আমার মেরুদণ্ডের হাড়ের মধ্যে নার্ভ ঢুকে গেছে। এমআরআই করেছিলাম। তখন জানিয়েছিল, অপারেশনে ৭০ হাজার টাকার মতো লাগতে পারে। পরে আবার শুনি, হাড়ের কী যেন চেঞ্জ করতে হবে।’ইতোমধ্যে চলচ্চিত্র অভিনেতা ডিপজল তাকে সাহায্য করেছেন বলেও জানালেন আকবর। গায়ক আরও বলেন, ‘এক ডাক্তার ভদ্রমহিলা জানিয়েছিলেন, অপারেশনের জন্য ৭০ হাজার টাকা লাগবে। সব মিলিয়ে ১ লাখ। সঙ্গে সঙ্গে আমি ডিপজল ভাইকে ফোন দিই। তিনি ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এরপর এখন শুনি যে, মেরুদণ্ডের শেষ হাড়ে সমস্যা। ডিস্কও চেঞ্চ করতে হবে। ৪-৫ লাখ টাকার ব্যাপার। এরমধ্যে মেয়ের স্কুলের ভর্তি, সংসার খরচ- সবই করতে হচ্ছে। অথচ গত ৫ মাস আমি কোনও শো-ই করতে পারিনি।’তার দুরবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দিয়েছিলেন। জানালেন, সেটা নিয়েও সমস্যায় পড়েছেন তিনি। ‘প্রধানমন্ত্রী সঞ্চয়পত্রের ২০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। তখন জানানো হয়েছিল, ৩ বছর পর এটা আমি ভাঙাতে পারবো। বছর পূর্ণ হলেও ব্যাংক সে টাকা আমাকে দিচ্ছে না। সেটা তুলতে পারলে এখন হয়তো বাঁচতে পারতাম। হয়তো ভবিষ্যতেও বেঁচে থাকবো, তবে পঙ্গু হয়ে’- বললেন আকবর। গায়ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আগে যশোরে রিকশা চালাতেন আকবর। গান শেখা হয়নি। তবে তার ভরাট কণ্ঠের কদর ছিল যশোর শহরে। সে কারণে স্টেজ শো হলে ডাক পেতেন তিনি। ২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। বাগেরহাটের এক ব্যক্তি তার গান শুনে মুগ্ধ হন। তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ইত্যাদি কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছর ইত্যাদি অনুষ্ঠানে কিশোর কুমারের ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’ গানটি গেয়ে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান আকবর।