মঙ্গলবার, ৩০শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ।
গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিবেদক:
বরেন্দ্র অঞ্চলের উঁচু জমিগুলোতে সেচ সংকট। তাই ধান ও সবজি চাষের প্রবণতা কমে গেছে। সে জমিগুলোতে এখন তুলা চাষে আগ্রহ তৈরি হয়েছে কৃষকদের মাঝে। কম সেচ ও বৃষ্টির পানিতে কাজ হওয়ায় তুলা চাষের দিকে ঝুঁকছেন অনেকেই। তুলার ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। বিগত চার পাঁচ বছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের বরেন্দ্র অঞ্চলে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের তালিকাভুক্ত ৫০ জন চাষি প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে তুলার চাষ করছেন।
উপজেলার বড়দাদপুর গ্রামের মোতাহার হোসেন রাসেল এক বছর থেকে ১৭ বিঘা জমিতে তুলার চাষ করছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত বছর থেকে প্রথম তুলা চাষ করছেন। এবার তিনি সব মিলিয়ে ৬ লাখ টাকার তুলা বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। করোনার কারণে ঢাকাতে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে এসে তিনি পাশের চাষীদের দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে তুলা চাষের সিদ্ধান্ত নেন। গত বছর তুলার দাম ছিল ২ হাজার ৭০০ টাকা মণ। এ বছর তুলার দাম প্রতি মণ ৩ হাজার ৪০০ টাকা।
তিনি আরো জানান, একটি কোম্পানির চাকরি ছেড়ে নিজ গ্রাম উপজেলার বড়দাদপুরে ফিরেছেন। শহুরে জীবন ছেড়ে প্রকৃতির মধ্যে থাকতে চেয়েছেন। বাড়ি ফিরে কাজের অংশ হিসেবে গড়ে তুলেছেন নার্সারি ও আমের বাগান। বর্তমানে তিনি ১৭ বিঘা জমিতে আমের চাষ করছেন। পাশাপাশি একই জমিতে চাষ করছেন তুলার। অন্যদের দেখে উৎসাহিত হয়ে তিনি তুলার চাষে ঝুঁকেছেন।
আলাপকালে তুলাচাষী মওদুদ আহমেদ হিমেল জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর দিনে দিনে নিচে নামছে। সেচের পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। যেখানে একবার অথবা কোনো সেচ না দিয়েই তুলা চাষ হচ্ছে। এ কারণে তিনি এতে আকৃষ্ট হয়েছেন। বড়দাদপুর গ্রামে হিমেলের মতো তুলা চাষে ঝুঁকেছেন অনেকেই।
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের গোমস্তাপুর ইউনিটের কর্মকর্তা মুর্শেদ আলী জানান, উপজেলার ৫০ জন চাষি তুলা চাষের সঙ্গে জড়িত। তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক চাষীদের প্রদর্শনী দেয়া হয়। তাছাড়া আমি তুলার রোগ বালাই পর্যবেক্ষেণ করে চাষীদের পরামর্শ দিয়ে থাকি। অল্প টাকা বিনিয়োগ করে তুলা চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। বাজারজাতকরণেও তেমন কোন ঝামেলা নেই।
সানশাইন/জেএএফ