মোঃআলী আবির: ঢাকায় রাশিয়ান হাউস, মুক্তিযুদ্ধ একাডেমি ট্রাস্টের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান এবং প্রামাণ্য আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে । রাশিয়ান হাউসের পরিচালক ম্যাক্সিম দোব্রোখোতোভ তার স্বাগত বক্তব্যে বন্ধুত্বের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে বাঙালি জাতিকে অভিনন্দন জানান এবং পারস্পরিক বোধের উন্নতিতে জনগণের কূটনীতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন ।
বাংলাদেশস্থ রুশ দূতাবাসের মিনিস্টার-কাউন্সেলর মিসেস একেতেরিনা এ. সেমেনোভা তার বক্তৃতায় রাশিয়ান ফেডারেশনের সকল দিকে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিকাশও জোরদার করার অভিপ্রায় নিশ্চিত করেছেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী জনাব ইয়াফেস ওসমান জোর দিয়ে বলেন যে, “ইউএসএসআর ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে পরম বন্ধু, যার অবদান ছাড়া বাংলাদেশের বিজয় অকল্পনীয় ছিল, সোভিয়েত জনগণ শুধু মুক্তিযুদ্ধেই অবদান রাখেনি, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করে, দেশের প্রধান দুটি বন্দরকে সচল করে, বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, খাদ্য ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছিল। বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নে রাশিয়া এখনো সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। রোসাটম স্টেট কর্পোরেশন বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এটি বৃহত্তম যৌথ উদ্যোগের প্রকল্প বাস্তবায়নে অংশ নিচ্ছে – পাবনায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (এনপিপি) নির্মাণ, যা রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় ঋণে অর্থায়ন করা হয়েছে»। তিনি বন্ধুত্বপূর্ণ রাশিয়ার অবদান নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মাননীয় মন্ত্রী গৌরবময় ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাশিয়ার জনগণ ও সরকারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জানান।
ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান সোভিয়েত গ্র্যাজুয়েট গোলাম মোস্তফা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুরোধে যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের পুনর্গঠনে দক্ষ নাগরিক গড়ে তুলতে তৎকালীন সোভিয়েত সরকার অনেক বাংলাদেশী ছাত্রকে বৃত্তি প্রদান করে। এখন তারা তাদের দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনের প্রায় সকল ক্ষেত্রে নিযুক্ত এবং সরকারী সংস্থা, বেসরকারী কোম্পানি এবং সাংস্কৃতিক সংস্থায় উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত আছেন। তিনি মনে করিয়ে দেন যে, ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য রাশিয়া তার সরকারি কোটার অধীনে ৭০টি বৃত্তি প্রদান করেছে। আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার জনাব আজিজুর রহমান আজিজ; শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব শেখ রাফাজ আহমেদ এবং মুক্তিযুদ্ধ একাডেমী ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ড. আবুল কালাম আজাদ।