সোমবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সখের মোবাইল ফোনটা পকেটে বসে বসে প্রথমে আমাদের হৃদয় হরণ করেছিলো। এরপর আস্তে আস্তেই নিয়ে নিলো মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ। আজ মোবাইল ফোনটি আর শুধু কমিউনিকেশান না বরং অন্যান্য সব প্রয়োজন মেটানোর পর বিনোদনের এক জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে বসা শখের এই ফোন যন্ত্রটি খুব সফলভাবেই আজ বস করেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মন-প্রাণ-জীবন। জনপ্রিয়তার সিলেবাস সমাপ্ত করে তা এখন জীবননাশের যেন এক নীল কারিকুলাম তৈরি করেছে শিক্ষার্থীদের জন্য। গেমস, ব্রাউজিং আর যথেচ্ছা যত্রতত্র তাদের এই মুঠোফোনে মুষ্টিবদ্ধ হাত যেন আর খুলতে চায়না সহজেই। এ অভ্যাস এখন নেশায় রূপ নিয়েছে। সে নেশা ফেন্সিডিল, হেরোইন, ইয়াবা বা যে কোন শক্তিশালী ড্রাগের নেশার চেয়ে ভয়ংকর আর বিধ্বংসী।
আমাদের কোমল মতি শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনের এই মনোহরণকারী মরণ থাবা থেকে যে কোন মূল্যে বাঁচাতেই হবে। আর এই কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে বাবা-মা ও শিক্ষকবৃন্দকে। চলুন জেনে নেই, আমরা কি করতে পারি এই মোহগ্রস্ত, অসহায় ও বিপর্যস্ত প্রজন্মকে বাঁচাতে :—-
১) আপনার নিজের ফোন আসক্তি আগে দূর করুন:- আপনি নিজেই যদি ফোনে বিনোদনের জন্য বেশি সময় ব্যয় করে থাকেন তবে আপনার সন্তানকে আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। বলতে পারেন যে, ফোনে আসক্তির বিষয়টাকে সে নিত্যনৈমিত্তিক স্বাভাবিকতা হিসেবেই চিনবে। তাই সর্বপ্রথমে প্রয়োজন আপনার নিজের ফোন আসক্তি দূর করা।
২) সন্তানকে সময় দিন, তার বন্ধু হোন:- প্রতিটা মানুষই চিত্তবিনোদন পছন্দ করে। তাই সে সঙ্গ চায়। যদি সঙ্গীর স্থানটা অন্য কোন উপায় যেমন : মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ইত্যাদি গেজেট দখল করে তাকে আনন্দ দিতে পারে তবে সেই মানুষটি ঐ উপায়টিকেই আনন্দের উৎস হিসেবে বেছে নিতে চায়।
তাই আপনার উচিত অন্যকোন মাধ্যমকে সন্তানের সঙ্গী হতে না দিয়ে আপনি নিজেই তার সঙ্গী হোন, ভালো বন্ধু হয়ে উঠুন। সন্তানকে পড়তে বসান, তার সাথে গল্প করুন, একসাথে বসে খাবার খান, তাকে ঘুরতে নিয়ে যান।
৩) চিনে রাখুন সন্তানের বন্ধুদের :- সন্তানের ফ্রেন্ড সার্কেলকে চিনুন।আপনার সন্তান বাস্তবে যাদের সাথে মেলামেশা করে তাদের চিনে রাখুন, তাদের গতিবিধি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকার চেষ্টা করুন, জেনে রাখুন তাদের পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড, তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম জেনে রাখুন ।
৪) সন্তানের ফোন সংক্রান্ত জ্ঞান বা দক্ষতার প্রশংসা করুন :-আপনার সন্তানের ফোন সংক্রান্ত জ্ঞান জানতে চান, তার দক্ষতা দেখুন, প্রশংসা করুন তার এই অপূর্ব দক্ষতার। বিষয়গুলে আগে থেকেই আপনার জানা থাকলেও তাকে প্রশংসা করুন। ভুলে যাবেন না যেন, কারো মনকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে প্রশংসার রাস্তাতেই হাঁটতে হয়।
৫) তার সাথে সেল্ফি তুলুন, ফেইসবুক ফ্রেন্ড হোন:- সন্তানরা সবসময় চায় যে বাবা-মায়েরা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক হোক, আপডেটেড থাকুক। বাবা-মায়ের স্মার্টনেসে সন্তানের স্মার্টনেস বেড়ে যায় কয়েকশত গুন। তাই সেল্ফি তুলুন সন্তানের সাথে, ফেইসবুকে বন্ধু হোন, তার পোস্টে লাইক, কমেন্ট করুন, দিন সঠিক নির্দেশনা। দেখবেন তার সাথে হাঁটতে হাঁটতে একসময় আপনি হয়ে উঠেছেন তার সবচে’ বিশ্বস্ত সফরসঙ্গী। এভাবে আপনি দক্ষ যাত্রী হতে পারলে পরবর্তী যাত্রাগুলোর রোডম্যাপ চলে আসবে আপনার নিয়ন্ত্রণে।
৬)শিক্ষা সহায়ক উপকরণ হিসেবে সন্তানের কাছে মোবাইলটি তুলে ধরুন :-আপনার সন্তানের হাতে থাকা মেবাইল ফোনটি যে শুধু বিনোদোনেরই নয় বরং লেখাপড়ার ক্ষেত্রেও কাজে লাগে তা তাকে দেখিয়ে দিন। বিজ্ঞানের কোন একটা এক্সপেরিমেন্ট ইউটিউব থেকে সচক্ষে দেখে সে উপভোগ করতে পারবে অনেক বেশি, ভূগোল বইয়ের কাগজী পৃষ্ঠার বাইরে ইউটিউব বা গুগলের ভার্চুয়াল জগতে সে নিজেই বেড়িয়ে আসতে পারে এন্টার্কটিকার হিম শীতল ভূখন্ড থেকে, আরোহন করে আসতে পারে আল্পস বা হিমালয় পর্বতশৃঙ্গ থেকে, দুঃসাহসিক এক দমটানা অভিযান করে আসতেই পারে নাসার বিজ্ঞানীদের সাথে অনন্ত অসীম মহাশূন্যের পরিসীমায়।মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট তো একটা ফুল মাত্র। এথেকে যেমন মধু নেওয়া যায় তেমনি বিষও নেওয়া যায়। আপনার সন্তান কোনটা নেবে তা নির্ভর করবে তাকে এই যন্ত্রটির ব্যবহার ও সুফল চিনিয়ে দেওয়ার ওপর।
৭) সন্তানের চিন্তাশীলতা ও সৃজনশীলতা পোস্ট করতে দিন :- আপনার সন্তানকে শুধু ফেইসবুকের ভার্চুয়াল পাড়ায় অন্যের পোস্ট ও ছবি দেখে আর লাইক, কমেন্ট করে ফিরে আসতে দেবেন না। বরং ঐ পাড়াতে তার একটা মজবুত বাসস্থান গড়তে দিন। সে যা পড়বে, যা দেখবে, যে জ্ঞান অর্জন করবে তার উপর তার নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করতে শেখান। গান, আবৃত্তি, ছবি আঁকার মতো আরো অনেক এক্সট্রাকারিকুলার এ্যক্টিভিটিতে তাকে দক্ষ হয়ে উঠতে অনুপ্রেরণা দিন, সাহায্য করুন। এরপর তার পারফরমেন্স তুলে ধরতে বলুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ঐ বিমূর্ত লেকালয়ে। দেখবেন এভাবে সে ধীরে ধীরে জ্ঞান অর্জনের দিকে এবং সুকুমারবৃত্তির চর্চায় সে আগ্রহী হয়ে উঠবে আনন্দের সাথে, উদ্দীপনার সাথে।
৮) সন্তানকে বিভিন্ন অনলাইন কম্পিটিশানে অংশগ্রহণ করান:- কোভিড-১৯ পরবর্তী ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে শিক্ষার্থীদের জন্য হাজারো অনলাইন কম্পিটিশান চলমান আছে। এসকল কম্পিটিশানে ঘরে বসেই অংশ নেওয়া যায় এবং ভালো পারফর্ম করতে পারলে লুফে নেওয়া যায় পুরস্কার। আপনার সন্তানকে এ সকল কম্পিটিশান হতে তার পছন্দসই আইটেম গুলোতে অংশগ্রহণ করান। এভাবে ভালো ও সৃজনশীল কাজে অভ্যাস গড়ে তুললে একসময় সে মুঠোবন্দী মুঠোফোনটাকে আবিষ্কার করতে পারবে পৃথিবী ভ্রমনের দ্রুতযান হিসেবে।
৯) সন্তানকে দর্শনীয় স্থানসমূহে ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবেষ্টিত স্থানে ঘুরতে নিয়ে যান :- মানুষ একা হয়ে গেলে তার অনুভূতির পরিসীমা খাটো হয়ে যায়, তার চারপাশে অদৃশ্য প্রাচীর গড়ে উঠে, ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে থাকে তার মানবতার গন্ডি। আর তাই এ প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলতে হলে মিশতে হয় মানুষের সাথে, ভাগাভাগি করতে শিখতে হয় একে অন্যের আবেগ অনুভূতিকে। তাই মধুর বন্ধন যাদের সাথে সে আত্মীদের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যান আপনার সন্তানকে। জীবনের পরিসীমা সে যত বিস্তৃত দেখব ততোই ক্ষুদ্র গন্ডির বিনোদন তাকে আর অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না। আপনার সন্তানকে ঘুরতে নিয়ে যান বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানে। তাকে ইতিহাস শোনান, বলুন পূর্বপুরুষদের কথা, বলুন যে সেই পূর্বপুরুষদের কারনেই আজ আমরা স্বাধীনভাবে দাঁড়িয়ে আছি। আপনার সন্তানকে নিয়ে যান প্রকৃতির কাছাকাছি। প্রকৃতির প্রভাব মানুষের মনকে বিস্তৃত ও বর্ণীল করে তোলে, স্রষ্টার সৃষ্টির দিকে বিমুগ্ধ চেয়ে থাকার মধ্য দিয়েই মানুষ আবিষ্কার করপছে স্রষ্টার বিশালতা ও সৌন্দর্যকে। এভাবে মুঠোফোনের মুঠো থেকে বেরিয়ে এসে মুক্ত ভাবনার মুক্তমঞ্চে দাঁড়াতে শেখান আপনার সন্তানকে।
১০) সেট করুন ফোন ব্যবহারের গ্রাউন্ড রুলস :-বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে শাসব করুন সন্তানকে। প্রতিবার শাসনের সাথে সাথেই তাকে বুঝিয়ে দিন যে তাকে শাসন করেছেন তারই মঙ্গলের জন্য। এটা বুঝতে পারলে সন্তান কোন সিনক্রিয়েট করেনা, কোন দূর্ঘটনাও ঘটায়না। আমাদের গার্ডিয়ানদের শাসনের ক্ষেত্রে এই জায়গাটা একটা বড় সড় গ্যাপ থেকে যায়।সন্তানকে একটা রুটিন ফলো করতে প্রথমে উদ্বুদ্ধ ও পরে অভ্যস্ত করে তুলুন। একটা নির্দিষ্ট সময়ে ফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকার গ্রাউন্ড রুলস তাকে ফলো করতে উৎসাহিত করুন এবং সন্তান তা পালন করছে এ বিষয়টি নিশ্চিত করুন।
১১) জীবনের অর্থ বোঝান উদাহরণ দিয়ে :- সন্তানের সাথে গল্প করুন। জীবন ও বাস্তবতা নিয়ে আলোচনা করুন। বাবা-মায়ের মুখে বাস্তবতার গল্প শুনে আস্তে আস্তেই সে জীবন ও জগত সম্পর্কে ধারনা লাভ করবে। উদাহরণ টানুন আপনার জীবন থেকে তাতে আপনার গল্পের গ্রহনযোগ্যতা বাড়বে। আপনার চোখেই সে প্রথম পৃথিবী দেখতে শিখবে, পাবে তার নিজ চেখের দৃষ্টি।
১২) রোল মডেল/অনুকরণীয় আদর্শ ফিক্সড করে দিন :- সামনে একজন আদর্শ মানুষ থাকলে মানুষ তাকে ফলো করতে চায়। তাই আপনার সন্তানকে লেখাপড়ায় উৎসাহিত করার সময় সফল কারো উদাহরণ টানা প্রয়োজন। সেই আদর্শ উদাহরণটি হতে পারে আপনার কোন সফল ও মেধাবী আত্মীয় কিংবা যে কেউ যিনি ছাত্রজীবনের অধ্যবসায়ের কারনে আজ সাফল্যের শিখরে আরোহন করেছেন।
ই
১৩) আপনার নাগালের মধ্যে সন্তানকে পড়তে দিন :- বাড়িতে সম্পূর্ণ আলাদা রুমে আপনার ফোনে আসক্ত সন্তানকে পড়াশুনা করতে দিবেন না। বরং আপনার রুমে কিংবা এমন স্থানে পড়তে দিন যেন সে আপনার নজরদারিতে থাকে। তাকে আপনি জোরে/সরবভাবে পড়তে বলবেন যেন তার পড়াটা আপনি শুনতে পান। আপনি যদি তার পড়ার বিষয়বস্তু নাও বুঝেন তাতেও সমস্যা নেই তবুও তাকে সরবভাবে পড়তে বলবেন।মনে রাখবেন, আপনি যাদি জি বাংলা আর স্টার জলসায় মোহাচ্ছন্ন হন তবে আপনার সন্তানকে মোহমুক্ত করার প্রচেষ্টায় আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।পড়ার সময় তার মেবাইল ফোনটি যেন সুইচড অফ থাকে সেটি নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনে কোন শিক্ষা সহায়ক ভিডিও দেখার দরকার হলে আপনি তাকে কিছুক্ষণের জন্য ফোন ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারেন।
১৪) ফোন আসক্ত সন্তানকে কলেজ পর্যন্ত নিজ এলাকায় রাখুন:-ফোনে আসক্ত সন্তান বাড়িতে পড়াশুনা করতে চায়না। তাই অনেক বাবা-মা ভেবে থাকেন যে, এলাকার বাইরে স্কুল-কলেজে পাঠালে অন্যদের দেখাদেখি সে পড়াশুনা করবে। এই ধারণাটা ভুল প্রমাণিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। বরং হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা এক্ষেত্রে অনেক বেশি। কারন ভালো প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া ভালো হয় তা সত্য কিন্ত আসক্ত সন্তানকে তার আসক্তি থেকে বের করে আনার জন্য শহরের নামি দামী প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বেশি প্রয়োজন তার পড়ার পরিবেশ ও তার অভিভাবকের যত্ন।তাই অন্তত কলেজ পর্যন্ত আপনার সন্তানকে আপনার কেয়ারে নিজ এলাকাতেই পড়াশুনা করান।
১৫) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকবৃন্দকে এগিয়ে আসতে হবে :- বাড়িতে বাবা-মা আর স্কুল/কলেজে শিক্ষকবৃন্দ-ইনারা যদি সম্মিলিতভাবে সন্তানের যত্ন নেন, ভালোবাসেন, ঠিকঠাক পড়াশোনা করান, জবাবদিহিতার মধ্যে রাখেন এবং অনুপ্রেরণা দিতে থাকেন তবেই ফোনে আসক্ত সন্তানরা এই ফোনের মোহ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে।সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে আজ বেশিরভাগ স্কুল-কলেজেই লেখাপড়ার মান অনেক নিচে নেমে গেছে। শিক্ষা প্রশাসনের উদাসীনতা আর শিক্ষকদের গা ছাড়া ও ব্যবসায়ী মনোভাব শিক্ষার্থীদের জীবনকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে তুলেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের এবং শিক্ষকদের সমন্বিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রতিটি টার্মের পূর্বের সিলেবাস স্কুল/কলেজে ক্লাসেই কমপ্লিট করতে হবে। নিয়মিত ক্লাস ওয়ার্ক করাতে হবে,পড়া দিতে হবে, সেই পড়া আদায় করে নিতে হবে। স্কুলে অনুপস্থিত থাকলে বা ঠিকভাবে পড়াশুনা না করলে তার কারন অনুসন্ধান করতে হবে, অভিভাবকের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে, প্রয়োজনে প্যারেন্টস কল করতে হবে।
১৬) অভিভাবক-শিক্ষক-শিক্ষার্থী এই তিনজন হলো একটি ত্রিভুজের তিনটা বিন্দু:- শিক্ষার্থীকে টার্গেট বিন্দু বিবেচনা করে অভিভাবক ও শিক্ষকবৃন্দ যদি একযোগে শিক্ষার্থীদের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যান, যদি উভয়পক্ষ নিজেদের মধ্যে সুষ্ঠু যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন তবেই আমাদের সন্তানদের আমরা সঠিকভাবে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারবো।
পরিশেষে একটি কথা বলতে হয়, আপনি নিজে আপনার পরিবারে ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধের চর্চা করুন এবং তা সন্তানকে শিক্ষা দিন। এটা একটা লং টার্ম প্রসেস/ দীর্ঘ মেয়াদী কাজ। একদিন শেখালেই আপনি তার ফলাফল আশা করতে পারেন না। আজীবন লেগে থাকুন এই ভালো কাজটির সাথে। আপনার আজীবন আন্তরিক এই আয়োজন ক্রমবর্ধমান ব্যাপকতায় বিকশিত হবেই একদিন। সেদিন আপনার প্রাপ্তিকে ক্যলকুলেটরে গুনে না পেলেও প্রশান্তিতে অগণিত হারে পুরো লভ্যাংশই গুনে গুনে পাবেন আপনি, সে স্বর্গীয় অনুভূতি একান্তই আপনার হবে যার অনুভব আপনাকে এই মাটির পৃথিবীতে স্বর্গের স্বাদ আস্বাদন করাবে প্রতিক্ষণে। দুনিয়াতে আপনার শ্রেষ্ঠ সম্পদ, আপনার ভবিষ্যৎ, আপনার সন্তান। তার পাশে থাকুন, ভালোবাসুন, ভালোবেসে সঙ্গ দিতে থাকুন। দেখবেন এভাবেই খুব শিগগিরই মুঠোফোনের মোহময় মুঠো মুক্ত হয়ে উঠবে আপনার সন্তান।
লেখক
শাঈন মাহমুদ শিমুল
প্রভাষক,ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ
রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ , রাজশাহী।