শুক্রবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
গোমস্তাপুর প্রতিনিধি: শীতের শুরুতে পরিযায়ী পাখির আগমনে মূখর হয়ে পড়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী উপজেলা গোমস্তাপুরের বিলগুলো। বিশেষ করে আলিনগর ইউনিয়নের চূড়ইল, বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের সিঙ্গাবাদ পাথার, রহনপুর ইউনিয়নের রামদাস ও রাধানগর ইউনিয়নের ছোট্ট ও বড়বিলে অতিথি পাখির আগমন ব্যাপক ভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
প্রতিদিন বিলের পানিতে অতিথি পাখির জলকেলিতে নয়নাভিরাম দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। আর এ আনন্দ উপভোগ করতে ছুটে আসছেন পাখি প্রেমীরা। অন্যদিকে, অতিথি পাখি শিকারে সজাগ দৃষ্টি রাখছে এলাকার পাখি প্রেমীরা। পাখি শিকারীদের তেমন তৎপরতা না থাকায় বিলগুলো অভয়াশ্রমে পরিনত হয়েছে।
এ জন্য শীতের শুরুতেই রাজশাহী বনবিভাগের কর্মকর্তারা এলাকার জনসাধারণের সাথে সচেতনতা মূলক সভা করেছেন।
বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। আর এ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার ভারতীয় সীমান্তঘেষা আলিনগর ও বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের কিছু এলাকা নিয়ে অবস্থান চুড়ইল বিলের। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সীমান্ত নদী পূনর্ভবা। এখানে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ব্যাপক অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে। বিল এলাকায় সারদিন ঝাকে ঝাকে উড়ছে পরিযায়ী পাখি। প্রকৃতির সাথে তাদের যেন বেশ সখ্যতা। তৈরি হয়েছে এক স্বগীয় পরিবেশ। বিলে এবার বগ, বালি হাঁস, পানকৌড়ী, শামুককৈলসহ অনেক প্রজাতির পাখির আগমন ঘটেছে। শীতের শুরুতে পাখিদের আগমনে মুগ্ধ সবাই। তাদের দেখতে দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন পাখি প্রেমীরা।
তবে অনেকটা নিরিবিলি পরিবেশ থাকায় প্রতিবছর অতিথি পাখিরা এ বিলে অবস্থান নেয়। ওই এলাকার পাখি প্রেমী স্কুল শিক্ষক মাসোয়ারুল হক জিকেন জানান, এ বিলে অতিথি পাখির আগমন নতুন নয়। এ অঞ্চলকে পাখির অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
এ বিলে সারাবছরই অনেক বিরল প্রজাতির পাখির আগমন দেখা যায়। এখানে পাখি শিকারীদের তৎপরতা নেই বললে চলে। পাখি শিকার বন্ধে এলাকার জনসাধারণের ভূমিকা রয়েছে।
এছাড়া দেশের স্বনামধন্য পাখিপ্রমীদের পদার্পণ ঘটেছে এ বিলে। এ বিলে তোলা পাখির ছবি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে। বিলে যাতায়াতের জন্য বাঁধের রাস্তাটি কাঁচা হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পাখি প্রেমীদের।
দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর পূনর্ভবা নদীর উপর একটি সেতু নির্মিত হলেও একাংশের সংযোগ সড়ক এখনও নির্মিত হয়নি। অথচ সেতুটি ৪ টি ইউনিয়নের সাথে সংযোগ রক্ষা করেছে। এদিকে বিলগুলোতে পাখি রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ায় কথা জানালেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাওসার আলী।
জলবায়ু পরিবর্তন সহ নানা কারণে বিলুপ্ত হচ্ছে পরিযায়ী পাখিরা। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অতিথি পাখির অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে সকলের সম্মেলিত উদ্যোগ চাই পরিবেশ কর্মীরা।
এছাড়া, বিলগুলোতে অতিথি পাখির আগমনকে ঘিরে এ অঞ্চলে পর্যটনের অমিত সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।