রবিবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুর: রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ছাড়াও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্যদিয়ে সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহন শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় শেষ হয়েছে।
বুধবার মাড়িয়া ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন করা হয়। কোথাও কোথাও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষে আহত দুজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে বিশৃংখলা ঘটানোর অভিযোগে বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশ ৭ জনকে আটক করেছে। তবে তাদের নাম জানা যায়নি।
সকালের দিকে ভোটকেন্দ্র গুলোতে নারী ভোটারদের উপস্থিতি বেশি দেখা গেলেও দুপুরের পর থেকে পুরুষ ভোটারদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। কয়েকটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তার নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দুপুর ১ টা পর্যন্ত ৭৩ ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ভোট শুরু হওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে মাড়িয়া ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পালী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশে বাঁধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ মনোনীত জাহাংগীর আলম সম্রাট ও বিএনপির হাসান ফারুক ইমাম সুমনের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। জয়কৃষ্ণপুর কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম সম্রাটের ছেলে দিনার (২২) ও কর্মী রেজ্জাক আলীকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ভোট কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে উভয় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ৭ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও বিজিবি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এছাড়া এই ইউনিয়নের সাহাবাজপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাশেমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হোজা অনন্তকান্দী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিশমত হোজা যুব সংঘ, চৌবাড়ীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চৌবাড়িয়া কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টার অভিযোগে একজনকে আটক করা হলেও প্রার্থীদের কোনো অভিযোগ না থাকায় পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মাড়িয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু হানিফ অভিযোগ করেন, পুলিশ অযথাই আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের ওপর লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। আর বিএনপিদলীয় ভোটারদের বাড়ি থেকে ডেকে এনে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে সহযোগীতা করেছে।
এমনকি তাদের ৩ কর্মীকেও পুলিশ আটক করেছে। পুলিশের এ ধরনের আচরণে তারা বিব্রত হয়েছেন বলেও জানান। ওই ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী শরিফুল ইসলাম নামের এক প্রার্থীও একই অভিযোগ করেন।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসমত আলী বলেন, নির্বাচন চলাকালীন বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাচনী দায়িত্বে¡ নিয়োজিত বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন।
এ পর্যন্ত আটককৃতদের সংখ্যা তিনি উল্লেখ করতে না পারলেও তাদের বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্তে নেয়া হবে বলেও জানান ওসি।