৭ গোলের রোমাঞ্চে জিতে সেমিতে রহমতগঞ্জ

স্পোর্টস ডেস্ক: দুই গোলে এগিয়ে সহজ জয়ের পথে ছিল রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে সমতায় ফেরে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। এরপর একের পর এক গোলে ক্ষণে ক্ষণে বদলাল ম্যাচের রং। শেষ পর্যন্ত সাত গোলের রোমাঞ্চে জিতে ফেডারেশন কাপের সেমি-ফাইনালে উঠল রহমতগঞ্জ।
কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে সোমবার তৃতীয় কোয়ার্টার-ফাইনালে ৪-৩ গোলে জিতে রহমতগঞ্জ। ২০১৯-২০ মৌসুমের পর দলটির আবারও প্রতিযোগিতাটির ফাইনালে ওঠার পথে বাধা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা ৩-৩ সমতায় শেষের পর অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় অর্ধে পার্থক্য গড়ে দেন খন্দকার আশরাফুল ইসলাম।
২০১২ সালে ফেডারেশন কাপের চ্যাম্পিয়ন শেখ রাসেল পায় ম্যাচে প্রথম সুযোগ। সপ্তম মিনিটে রহমত মিয়ার বাঁকানো ফ্রি কিকে বক্সের ভেতরে লাফিয়ে মান্নাফ রাব্বীর হেড পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। একটু একটু করে গুছিয়ে ওঠা রহমতগঞ্জ এগিয়ে যায় ২৮তম মিনিটে। মাঝমাঠ থেকে সানডে চিজোবার থ্রু পাস ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন ফিলিপ আজাহ। দুই ডিফেন্ডারকে গতিতে পরাস্ত করে ডান পায়ের জোরাল কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন ঘানার এই ফরোয়ার্ড।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে দারুণ জমে ওঠে ম্যাচ। ৩৭তম মিনিটে বক্সের একটু বাইরে থেকে শেখ রাসেলের পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ইসমায়েল রুতি তাবারেজের শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ৪৩তম মিনিটে তিন বার চেষ্টা করেও ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারেনি রহমতগঞ্জ। বক্সের ডান দিক থেকে আজাহর জোরাল শট আটকান গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা; এরপর সানডের ফিরতি শটও রানার গায়ে লেগে ফিরে। সবশেষ ছয় গজ দূর থেকে এনামুল ইসলাম গাজীর শট গোললাইন থেকে ফেরান সাদউদ্দিন।
পরের মিনিটে শেখ রাসেলের ডিফেন্ডার রহমতের ফ্রি কিক পোস্টে লেগে ফেরার পর পাল্টা আক্রমণে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় রহমতগঞ্জ। ওয়ালী ফয়সালের পাস ধরে আজাহ গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকা সাদউদ্দিনের বাধা পেরিয়ে বুলেট গতির শটে লক্ষ্যভেদ করেন। ৫২তম মিনিটে বক্সে আজাহ ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় রহমতগঞ্জ। কিন্তু ঘানার এই ফরোয়ার্ডের শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান রানা।
ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার চিয়াগো এদুয়ার্দো দো আমারাল ঝলক দেখান ৬৩তম মিনিটে। ৩০ গজ দূর থেকে কাছের পোস্টের ওপরের কোণা দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ পায় শেখ রাসেল। ৮০তম মিনিটে তাবারেজকে বক্সে সিওভুস আসরোরভ ফাউল করলে পেনাল্টি পায় শেখ রাসেল। কিরগিজস্তানের ডিফেন্ডার আইজার আখমেদভের বুলেট গতির স্পট কিক ফেরানোর কোনো সুযোগ পাননি গোলরক্ষক রকিবুল হাসান তুষার।
চার মিনিট পর তাবারেজের পাস ধরে বক্সে ঢুকে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে শেখ রাসেলকে এগিয়ে নেন এইলতন মাচাদো দি সৌজা রোজা। গোলের উদযাপনে জার্সি খুলে হলুদ কার্ড দেখেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। ৮৯তম মিনিটে আজাহর দূরপাল্লার শট বক্সে নাসিরউদ্দিন চৌধুরীর পায়ে লাগার পর তার সামনে থাকা সানডে তড়িৎ শটে সমতা টানেন।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে শেখ রাসেলের রক্ষণে বেশ চাপ দিলেও গোল পায়নি রহমতগঞ্জ। দ্বিতীয় অর্ধে আজাহর সাইড নিচু ভলি রানার বুকে লেগে ফিরে। রোমাঞ্চকর ম্যাচে ১১৮তম মিনিটে জয়সূচক গোলটি করে রহমতগঞ্জ। সানডের ছোট পাসে মোহাম্মদ স্বাধীনের শট গোলরক্ষক ফেরানোর পর সামনে থাক খন্দকার আশরাফুল ইসলাম নিখুঁত টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন। জার্সি খুলে তিনিও দেখেন হলুদ কার্ড।

টানা দুই আসরে কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে ছিটকে গেল শেখ রাসেল। এর আগে স্বাধীনতা কাপের সেরা আটে পুলিশ এফসির কাছে হেরেছিল তারা।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২২ | সময়: ৭:১১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ