শনিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
মিন্টু ইসলাম শেরপুর বগুড়া প্রতিনিধি: বিনা মূল্যের সরকারি বই বিতরণে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। নির্ধারিত সময়ে বই না দেওয়া ও বিভিন্ন হয়রানির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষকদের। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতি ও শুক্রবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ২৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৭৩টি, ৪৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬৫টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। কিন্তু বিনা মূল্যের সরকারি বই বিতরণে বিদ্যালয় প্রধান ও তাঁদের প্রতিনিধি শিক্ষকদের জিম্মি করে ঘুষ নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগে জানা যায়, সরকারি বই পেতে প্রত্যেক কিন্ডারগার্টেন স্কুলকে ১২০০ টাকা, মাধ্যমিক স্কুল ৫০০ টাকা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করা হয়।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের নিয়োগ করা আদায়কারীর নিকট নির্ধারিত ওই ঘুষের টাকা দিলেই কেবল তাদের বই দেওয়া হয়। অন্যথায় কোনো বই দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। তোফাজ্জল ও নাজমুল ইসলাম নামের দুই শিক্ষককে টাকা আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে। ওই অফিসের কর্মকর্তা নজমুল ইসলামের নির্দেশে তাঁরা টাকা আদায় করছিলেন বলে দাবি ভুক্তভোগী শিক্ষকদের।
শিক্ষক আসলাম হোসেন, জাহিদুল ইসলামসহ একাধিক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, কয়েক বছর ধরেই এভাবে নতুন বই নেওয়ার সময় তাঁদের নিকট থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ জানিয়েও কোনো লাভ হয় না। এ ছাড়া শিক্ষা অফিসে তাঁদের অনেক কাজ থাকে। তাই বেশি কিছু বললে বিভিন্ন হয়রানির শিকার হতে হয়।
সরকারি বই নেওয়ার সময় টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তোফাজ্জল ও নাজমুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তবে ঘটনাটি সম্পর্কে সাক্ষাতে বিস্তারিত জানাবেন বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তাঁরা। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. মিনা খাতুন বলেন, বই বিতরণের সম্পূর্ণ কাজটি করে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। তাদের শিক্ষকরা টাকা দিয়ে বই নিয়ে থাকলে যাঁদের সম্পর্কে অভিযোগ তাঁরাই ওই বিষয়ে জবাব দেবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অভিযুক্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজমুল ইসলাম নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কে বা কারা টাকা নিয়েছে সেটি বলতে পারব না। এই টাকা আদায়ের সঙ্গে আমার অফিসের কেউ জড়িত নেই। এ ছাড়া বই নেওয়ার সময় টাকা আদায়ের বিষয়ে কেউ অভিযোগও করেনি। এর পরও খোঁজখবর নেওয়া হবে।