শনিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
মোঃ তারেক রহমান
বিশেষ প্রতিনিধি;
অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল রাজশাহীর বাগমারার পুরান তাহেরপুর গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী সাফিয়া সিলভি মমতা (১৭)। পরীক্ষার তিনদিন পর সে মারা গেছে ।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে সাফিয়া। তার এ ফলাফলের খবরে আনন্দের পরিবর্তে এখন শোকের মাতম চলছে পরিবারে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাফিয়ার মা মরিয়ম খাতুন গনমাধ্যম কর্মীদের বলেছেন, রেজাল্ট দেখলেই কষ্ট হবে, তাই দেখিনাই । তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাসায় রেজাল্ট নিয়ে এনেছিলো । শিক্ষক জানালেন সাফিয়া গোল্ডেন এ প্লাস পাইছে ।
আজ বাড়ির সবার আনন্দিত হওয়ার কথা ছিলো । পাড়া-প্রতিবেশীদের মিষ্টি খাওয়ানোর কথা ছিলো । সেখানে বাড়িজুড়ে নীরবতা’ আর হাহাকার বলে কেঁদে ফেলেন মরিয়ম খাতুন ।
মাদারীগঞ্জ সাফিক্স প্রি-ক্যাডেট কিন্ডারগার্টেন থেকে ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেয় সাফিয়া । ১৪ নভেম্বর এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয় সাফিয়ার । কিন্তু তার আগেই ১১ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়ে সে । পরদিন ভবানীগঞ্জের একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক বলে, নাড়িতে আলসার ধরা পড়েছে সাফিয়ার ।
১৭ নভেম্বরে পরীক্ষা শেষে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সাফিয়া কে। সেদিন ছিলো শুক্রবার সেদিন চিকিৎসক না থাকায় সেখান থেকে ডেলভিউ ক্লিনিক, তারপর পপুলার, আবার পপুলার থেকে আল-আরাফা । আল-আরাফা থেকে সাফিয়াকে পুনরায় ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবারের লোকজন । সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলে, অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছে । অপারেশন করতে হবে আরও দেড় মাস পরে।
২৫ নভেম্বর অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে ওটি থেকে বের হয়ে সাফিয়ার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় । অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয় । পরে রাত ১২টা ৫০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে পৃথিবী ছেড়ে চিরতরে বিদায় নেয় সাফিয়া।
সাফিয়ার মা মরিয়ম জানান, অনেক বারণ করেছিলাম কষ্ট করে পরীক্ষা দেওয়ার দরকার নেই । কিন্তু মেয়ে আমার শোনেনি । পরীক্ষা দিতে তার কোনো সমস্যা নেই বলে জানায় এবং সবগুলো পরীক্ষা অসুস্থ থেকেই দিয়েছে । কিন্তু তার এতো ভালো রেজাল্ট সে দেখে যেতে পারলো না।