শনিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
নুরুজ্জামান,বাঘা : ইউনিয়ন নির্বাচনের জোয়ারে কাঁপছে দেশ। অনেকগুলি জেলায় ইতোমধ্যে নির্বাচন শেষ হয়েছে। এতে কেউ পরেছেন বিজয়ের মালা । আবার অনেকেই পরাজিত হয়ে কষ্টে কাতর হয়েছেন। এদিক থেকে আগামীকাল রবিবার রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে তিনটি ইউপি নির্বাচন।
তবে দু’টি ইউনিয়ন বাউসা এবং চকরাজাপুরে একই দল আ’লীগের প্রভাবশালী দুই বিদ্রোহী প্রার্থী বহিষ্কার আদেশ মেনে প্রচার প্রচারনা -সহ দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে হ্যাবী ওয়েটধারী স্থানীয় দুই বিএনপি নেতা সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোট করায় শেষ পর্যন্ত পরিবেশ কেমন থাকবে, তা নিয়ে স্বস্তি এবং শঙ্কা দু’টিই কাজ করছে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে।
সমাজের সুধীজনরা বলছেন, রাত পোহালেই রাজশাহীর বাঘা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ভোট। শেষ মুহূর্তে নানা হিসাব-নিকাশ মেলাতে ব্যস্ত ভোটার ও প্রার্থীরা। শুরু থেকে গতকাল প্রচারের শেষ দিন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকায় জনমনে যেমন স্বস্তি আছে, আবার ভোটের দিন পরিবেশ কেমন থাকবে, তা নিয়ে শঙ্কাও আছে। এই আশঙ্কা কেন ? জানতে চাইলে কয়েকজন ভোটার বলেন, এখানে একই দল আ’লীগের যেমন শক্তিশালী দু’জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। তেমননি ভাবে স্থানীয় বিএনপির পদধারী দু’জন প্রভাবশালী প্রার্থী নিরবে বাড়ী-বাড়ী গিয়ে ভোট চেয়েছেন।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার আড়ানী, বাউসা এবং চকরাজাপুর এই তিন ইউনিয়নে আগামীকাল কঠোর নিরাপত্তার মধ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে ইউপি নির্বাচন। এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে উপজেলা নির্বাচন কমিশন। এই তিন ইউনিয়নে ৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ ১১৫ জন সাধারণ সদস্য প্রার্থী তাঁদের প্রচার-প্রচারনা শেষ করেছেন শুক্রবার রাত ১২ টায়। এখন প্রত্যেকে প্রার্থী’ই স্বপ্ন দেখছেন নির্বাচনে জয় লাভের। তবে কারা পরবেন বিজয়ে মালা সেটি নির্ভর করছে নিজ-নিজ যোগ্যতা ও ভাগ্যের উপর।
এবারের ইউপি নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ভাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে ভোট বর্জনের ঘোষনা থাকলেও বাঘার দু’টি ইউনিয়ন আড়ানী এবং বাউসায় দলীয় পদধারী ও হ্যাবী ওয়েট সম্পন্য দু’জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এরা হলেন, নাসির উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেন পলাশ। তাদের পেছনে শরীক দল হিসাবে গোপনে ভোট চেয়েছেন জামাত-শিবির । একই সাথে বাউসা এবং চকরাজাপুরে আ’লীগের দু’জন প্রভাবশালী বিদ্রোহী প্রার্থী যথাক্রমে- নুর মোহাম্মদ তুফান এবং আজিযুল আযম দল থেকে বহিস্কার হওয়ার পরেও ভোট থেকে সরে দাড়াননি।
অনেকেই বলছেন, ভোটের দিন একটু-এদিক সেদিক হলেই দলীয় এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হবে। এই তিন ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ থেকে যারা নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন তারা হলেন-আড়ানীতে রফিকুল ইসলাম রফিক, বাউসায় শফিকুর রহমান শফিক এবং চকরাজাপুরে বাবলু দেওয়ান।
সরেজমিন ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান সরকার আমলে প্রত্যক এলাকায় অসংখ্য রাস্তাঘাট, কালভাট-ব্রীজ, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সহ শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে নৌকার তিন মাঝি ভোটারদের কাছে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে ভোট চেয়েছেন। তাঁরা এও বলেছেন, আগামীতে উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে আরো গতিশীল করতে হলে নৌকার কোন বিকল্প নাই। এদিক থেকে তারা জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। তবে পাড়া-মহল্লায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর চেয়ে সাধারণ সদস্য (মেম্বর)প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থক বেশী লক্ষ করা গেছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার মজিবুল আলম জানান , বাঘার তিনিটি ইউনিয়নে মোট ২৭ টি কেন্দ্রে সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। শান্তিপুর্ণ ভোট গ্রহণের জন্য প্রতি কেন্দ্রে ১২ জন পুলিশ ও ১৪ জন আনছার ছাড়াও ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্র গুলোতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ থাকবে। পাশা-পাশি ২ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান টিম থাকবে। এ ছাড়াও কেন্দ্র সমূহে টহল দেবে র্যাব ও বিজিবি’র পৃথক-পৃথক দল। এই তিন ইউনিয়নের মধ্যে মোট ভোটার সংখ্যা আড়ানীতে ৯ হাজার ৪৬৫ জন, বাউসায় ২৪ হাজার ৫৬৫ এবং চকরাজাপুরে ৯ হাজার ৮৮৮ জন।