সোমবার, ১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, বাগমারা: স্বল্প আয়ের মানুষের ভরসা ফুটপাত, কিন্তু সবাই এখন ঝুঁকছেন ফুটপাতে। আর এ ফুটপাতেই মিলছে তাদের চাহিদামত শীতের রকমারী পোশাক। তুলনামূলক কম দামে পছন্দমতো পোশাক কিনতে তাইতো ফুটপাতেই ভীড় করছেন সবধরণের ক্রেতা।
এ দিকে ভবানীগঞ্জ বাজারে দীর্ঘদিন পর হকারদের বসার জায়গা হওয়ায় তারা এখন স্বাচ্ছন্দে ব্যবসা করতে পারছে। আগে তারা নিউমার্কেটের আশেপাশে পাকিং ও রাস্তায় চাটি বিছিয়ে ব্যবসা করলেও সম্প্রতি তাদের জন্য ভবানীগঞ্জ হাইস্কুল রোড এলাকায় পৃথক হকার পট্টী করেছে ভবানীগঞ্জ পৌরকর্তৃপক্ষ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভবানীগঞ্জ বাজারের হাইস্কুল রোড এলাকার ফুটপাতে শীতের বিভিন্ন পোশাক নিয়ে পসরা সাজিয়েছেন প্রায় অর্ধশত দোকানী। এখানেই মিলছে শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী নারী পুরুষের শীতের রকমারী পোশাক। বিশ টাকা থেকে শুরু করে হাজার বারশ’ টাকার পোশাক রয়েছে এসব দোকান গুলোতে। রয়েছে বিদেশ থেকে আমদানী করা পুরানো পোশাক আশাক। তবে পুরানো কাপড়ের চাইতে নতুন কাপড়ের প্রতি ঝোঁক বেশি ক্রেতাদের। কারণ এসব ফুটপাতের দোকানগুলোতে নতুন কাপড়ের দাম তুলনামূলক সস্তা এবং আকর্ষনীয় ডিজাউন হওয়ায় এগুলো সহজেই ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে।
উত্তরএকডালা থেকে তিন বছর বয়সী নাতনীর জন্য শীতের পোশাক কিনতে এসেছেন মহির উদ্দিন। তিনি জানান, মাত্র একশ টাকা দিয়ে তার নাতনীর জন্য জামা পায়জামা মিলে তিন জোড়া পোশাক কিনেছেন। এছাড়া একই বাজার থেকে তার স্ত্রীর জন্য মাত্র একশ সত্তর টাকা দিয়ে একটি সোয়েটার কিনেছেন।
কাপড় বিক্রেতা আবু বক্কর সিদ্দিক ও মোজাহার হোসেন জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা এখানে দোকান খুলে বসেন। হাটের দিন তাদের কারো কারো বেচা বিক্রির পরিমান ত্রিশ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। তবে অন্যান্য দিন বিক্রির পরিমান দাঁড়ায় দশ থেকে পনের হাজার টাকা।
ফুটপাতের এসব ব্যবসায়ীরা জানান, তারা ঢাকা নারায়নগঞ্জ সহ বড় বড় শহর থেকে এক সঙ্গে কয়েকজন ব্যবসায়ী মিলে সব বয়সী নারী পুরুষের বিভিন্ন পোশাক কিনে আনেন। এতে তাদের পাইকারী মূল্য ও পরিবহন খরচে অনেক সাশ্রয় হওয়ায় স্বল্প মূল্যে সেগুলো বিক্রি করতে পারেন।
এছাড়া ফুটপাত হওয়ায় তাদের দোকান ভাড়াও নেই, শুধু হাটের ইজারাদারদের প্রতিদিন ত্রিশ টাকা এবং হাটবারের দিন চল্লিশ টাকা করে দিতে হয়। এছাড়া রাতে দোকান পাহারা দেওয়ার জন্য মাসিক দুইশ টাকা করে দিতে হয়। এসব মিলে তাদের ব্যবসা বেশ ভালোই চলছে।
তবে শীত আরো জেঁকে বসলে তাদের বেচা বিক্রি আরো জমে উঠবে বলে তাদের প্রত্যাশা। ফুটপাতের এসব ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে ব্যবসার দোকান ঘরগুলো পলিথিন ও বাঁশ দিয়ে তৈরি যা খুবই দুর্বল। সামান্য ঝড় বৃষ্টিতেই এগুলো ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তারা স্থায়ী ও মজবুত দোকানঘর বরাদ্দের জন্য পৌরকর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে হাটের ইজারাদার আমিনুল ইসলাম ইসলাম জানান, এসব ব্যবসায়ীদের জন্য ভবানীগঞ্জ হাইস্কুল রোড় এলাকায় অস্থায়ী বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বিষয়ে পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী লিটন মিয়া বলেন, হকারদের জন্য আরো ভালো ও স্থায়ী দোকানের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
পৌর মেয়র আব্দুল মালেক মন্ডল বলেন, হকারদের হতাশার কারণ নেই। তাদের বসার জন্য আপাতত একটা ব্যবস্থা হয়েছে। পরবর্তীতে পরিকল্পনা করে স্থায়ী দোকান করে দেওয়া হবে।